চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন, অথবা এভাবে বলা চলে চর্যাপদ বাংলার আদি সাহিত্য নিদর্শন। মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (জীবনকাল ১৮৫৩-১৯৩২) ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবার থেকে ‘চৰ্য্যাচর্যবিনিশ্চয়' নামে যে পুথিটি আবিস্কার করেন। তা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস বদলে দেয়। আবিস্কারের এক দশক পরে গ্রন্থাকারে তা প্রকাশিত হয় ১৯১৬ সালে হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা-র অংশ হিসেবে । শুরু হয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস বিনির্মাণের কাল। শুধু বাংলা নয়; অসমিয়া, উড়িয়া, মৈথিলি এমনকি হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস পুনর্লিখনের প্রসঙ্গও উত্থাপিত হতে থাকে। ১৯১৬ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা নামে যে পুস্তিকাটি প্রকাশিত হয় তাতে চারটি পুথি ছিলাে সেগুলাে হলাে আশ্চৰ্য্যচৰ্য্যাচয় টিকা সমেত নাম চর্যাগীতিকোষবৃত্তি, সরহ পাদের (শরহ বজ্ৰশাস্ত্রী) দোহাকোষ, কাহ্ন পাদের (কৃষ্ণাচাৰ্য্য পাদ-শাস্ত্রীর) দোহাকোষ এবং ডাকার্ণব। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, এই যে আমরা দোহাকোষকে পদ বলছি—এদের কোনটিই পদ বলে পুথিতে উল্লেখ ছিলাে না। পদ অভিধাটি মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়ের দেওয়া। তিনি তাকে 'চৰ্য্যাচর্য্য বিনিশ্চয়' বললেও আসলে গবেষকগণের অনুমান তার নাম ছিলাে 'চর্যাগীতিকোষ' যা পরবর্তীতে টিকারদের ভাষ্যে দাঁড়ায় ‘আশ্চৰ্য্য-চৰ্য্যাচয়'। এখানে আশ্চর্য কথাটি মরমি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আবার ‘চর্যা’ শব্দটির শাব্দিক অর্থ হলাে সাধকদের আচরণ পদ্ধতি। | c ৰ আদি উৎস।