Loading...

আত্মোন্নয়ন সমগ্র (হার্ডকভার)

স্টক:

৫০০.০০ ৪০০.০০

ভূমিকা
বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় ও সর্বাধিক বিক্রিত লেখক ডেল কার্নেগির আত্মোন্নয়ন বিষয়ক তিনটি বইয়ের সংকলন “আত্মোন্নয়নসমগ্র।”
এখানে ডেল কার্নেগি ব্যক্তি-জীবনে সাফল্যের চূড়ায় আরোহণকারীদের করণীয় পন্থা সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। তিনি মনে করেন, মাত্র আটটি শব্দ আমাদের জীবনকে যথার্থভাবে রূপান্তরিত করে দিতে পারে এবং আমরা যার প্রভাবে নিজেদেরকে শীর্ষে নিয়ে যেতে পারি। যেকোনো লোক কী ধরনের চিন্তাভাবনা করছে তা জানতে পারলে সে কী ধরনের লোক, তা বলে দেওয়া যায়। এই তথ্যটি রোমান সামাজ্যের মহান দার্শনিক মার্কাস আর লিয়াসের আট শব্দযুক্ত বাণীর মধ্যে নিহিত আছে ‘আমাদের চিন্তাধারাই আমাদের জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলার মূল।’ সবসময় ভয়ংকর ব্যাপারগুলো নিয়ে অনবরত চিন্তাভাবনা করতে থাকলে আমাদের স্বভাব ক্রমশ ভীত প্রকৃতির হয়ে যায়। আবার সাহসী চিন্তাভাবনা মনে ঘুরলে আমরা ক্রমশ সাহসী হয়ে উঠব। এই সাহসী মনোভাব আমাদের জীবনে উন্নতির সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
শারীরিক ক্ষমতার ওপরও আমাদের চিন্তাভাবনা অবিশ্বাস্য রকমের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে সক্ষম। বিখ্যাত ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী জে. এ. হ্যাডফিল্ড তাঁর ‘দ্য সাইকোলজি অব পাওয়ার’ গ্রন্থে একটি দৃষ্টান্তের উল্লেখ করেছেন। তিনি তিনজন মানুষের শারীরিক শক্তির ওপরে তাদের চিন্তাধারার প্রভাব সংক্রান্ত বিষয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিলেন। ঠিক হয়েছিল যে, তারা প্রত্যেকে কত জোরে ডাইনানোমিটারকে চেপে ধরতে পারে তার ওপর তাদের শক্তির মাপ নির্ধারিত হবে। তিন প্রকার মানসিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কব্জির জোরের পরীক্ষা নিয়ে দেখা গেল সাধারণ অবস্থায় তাদের চাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতা গড় পরিমাণ ২০১ পাউন্ড।
পরবর্তী পরীক্ষা করার আগে সকলকে সম্মোহিত করে হ্যাডফিল্ড তাদের চিন্তাধারাকে নিজ নিয়ন্ত্রণাধীন রেখে তাদের মনে একটা ধারণা ঢুকিয়ে দিলেন যে তারা খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেই ক্ষেত্রে তাদের চাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতার দাঁড়াল মাত্র ২৯ পাউন্ড।
তৃতীয় পর্যায়ে সম্মোহিত অবস্থায় তাদেরকে বলা হলো তারা প্রচুর শক্তির অধিকারী, তখন চাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতা দাঁড়াল গড়ে ১৪২ পাউন্ড। যা তাদের স্বাভাবিক ক্ষমতার থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। সুতরাং এই গবেষণার ফলে মানুষের মনের অপরিসীম শক্তিরই পরিচয় পাওয়া গেল। এ থেকে বোঝা যায় মনের চিন্তাভাবনা আমাদের জীবনকে কীভাবে পরিবর্তিত করতে পারে।
এই মনের অসীম শক্তির দ্বারাই আমরা নিজেদের জীবনে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারি। সর্বদা আমাদের কয়েকটি কথা স্মরণ রাখতে হবে শত দুঃখেও ভেঙে পড়লে চলবে না, সবরকম পরিস্থিতিতে মুখের হাসিটি সবসময় বজায় রাখতে হবে। প্রথম প্রথম যদি ভালো থাকার জন্যও করতে হয় তাহলে তাই করা উচিত, কারণ সেটা ক্রমশ অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। তখন কোনো দুঃখই আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করতে পারবে না। দুঃখ থেকে আনন্দে উত্তরণের পথ খুঁজে পাওয়া তখন সম্ভব হবে।
আমাদের চিন্তাশক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে নেতৃত্বগুণ যুক্ত হয়ে সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় এন্ড্রু কার্নেগি ‘স্টিল কিং’ নামে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু স্টিল নির্মাণের ব্যাপারে তার হাজার হাজার কর্মচারী তার চেয়ে বেশি জানত। তিনি শুধু জানতেন কীভাবে মানুষকে পরিচালনা করতে হয় আর এটাই তাকে ধনী হতে সাহায্য করেছিল।
ছেলেবেলাতেই তিনি ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্ব দেবার কৌশল আয়ত্ত করেছিলেন। তাঁর মা খরগোস ধরেছিলেন। কিন্তু তিনি ক্ষুদ্র খরগোসটার খাবার জোগাড় করতে না পারায় একটা চমৎকার মতলব আঁটলেন। পাড়ার ছেলেদের বললেন, তারা যদি খরগোসের খাবার এনে দিতে পারে তা হলে তাদের সম্মানার্থে খরগোসের বাচ্চাদের নামকরণ করবেন। ঐ একই বুদ্ধিমত্তা তিনি তার ব্যবসায়ে কাজে লাগালেন। পেনসিলভানিয়া রেল রোডে তিনি স্টিলের রেল বিক্রি করতে ইচ্ছে করলেন। তিনি পিটসবার্গে একটা বৃহদাকার স্টিলের কারখানা তৈরি করে তৎকালীন পেনসিলভানিয়া রেল রোডের প্রেসিডেন্ট জে. এডগার টমসনের নামে এই স্টিল মিলের নামকরণ করলেন। স্বভাবতই মি. টমসন খুশি হয়ে প্রয়োজনীয় ইস্পাতের তৈরি রেলের অর্ডার দিলেন। আর তিনি এই রেল নির্মাণের কাজ পেয়ে প্রচুর অর্থের মালিক বনে গেলেন। এটাই ছিল তাঁর ধনী হবার কৌশল।
আমাদের মনের মধ্যেই রয়েছে স্বর্গ-নরক। আমাদের ভাবনাই এই স্বর্গ-নরকের চেষ্ট। এই মনই পারে স্বর্গকে নরকে পরিণত করতে বা নরককে স্বর্গে পরিণত করতে। যেসব পার্থিব সম্পদ লাভ করার জন্য মানুষ লালায়িত থাকে তার সবকিছুই ছিল নেপোলিয়ানের মধ্যে। তার আগ্রাসী লোভের ফলে তার মনে যে দুশ্চিন্তার জগৎ সৃষ্টি হয়েছিল সেই খেদোক্তি শোনা গিয়েছিল ি‘আমি সারাজীবনে টানা ছটি দিনও নিশ্চিন্ত হয়ে কাটাতে পারিনি।’ ঠিক এর বিপরীত উদাহরণ হলো হেলেন কিলারের জীবন। সারাজীবন গঠনমূলক বিভিন্ন কাজে আত্মনিয়োজিত, অন্ধ-মুক-বধির হেলেন কিলার তাঁর মনের অপরিসীম শক্তির জোরে প্রত্যেকটি বাধা বিঘুকে জয় করে সাফল্যের চূড়ান্ত চূড়ায় এসে বলেছিলেন‘আমাদের জীবন কী আনন্দময়!’
এই প্রসঙ্গে উইলিয়াম জেমসের বিখ্যাত উক্তিটি হলো ‘আমরা যে বিষয়গুলোকে আমাদের দুঃখের কারণ বলে মনে করি, আমাদের অন্তর্নিহিত ইচ্ছাশক্তির সাহায্যে সেগুলোর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারি। মনকে প্রফুল্ল রাখার জন্য কতকগুলো উপায় আছে, যেগুলোর নিয়মিত অনুশীলনে আমাদের মন গভীর প্রশান্তিতে ভরে উঠবে।
হতাশা ও দুশ্চিন্তা আমাদের উন্নতির পথে বড় বাধা। এ ক্ষেত্রে কর্মব্যস্ততা কীভাবে মন থেকে দুশ্চিন্তা সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় তার মূলে আছে একটি মনোবৈজ্ঞানিক কারণ। যিনি যত প্রতিভাবানই হোন না কেন তাঁর মন কখনও একসঙ্গে দুটি বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে না। আগামী দিনের কাজের পরিকল্পনা ও গতদিনের কাজের অভিজ্ঞতা এ দুটো বিষয়কে একসাথে চিন্তা করা সম্ভব কি না তা পরীক্ষা করে দেখলেই বোঝা যায় যে, এই প্রচেষ্টা করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি কাজেরই একটি নির্দিষ্ট ও নিজস্ব আবেগ রয়েছে এবং একসঙ্গে দুটো আবেগের বশবর্তী হয়ে কাজ করা কখনোই সম্ভব নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধফেরত সৈনিকদের, যারা অসহ্য স্নায়বিক চাপে বিধ্বস্ত, তাদের মানসিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সামরিক দপ্তর এই সহজ সরল মনোবৈজ্ঞানিক তথ্যটিকে কাজে লাগিয়েছিলেন। ঐসব সৈনিকের স্নায়বিক চাপ থেকে আরোগ্য লাভের উপায় হিসেবে তাদেরকে কর্মব্যস্ততার মধ্যে রাখার উদ্যোগে গ্রহণ করলো সামরিক দপ্তর। বিভিন্ন ধরনের কাজ, যেমন মাছ ধরা, ছবি তোলা, শিকার করা, খেলাধুলা করা, বাগান করা প্রভৃতি কাজের মধ্যে সারাদিন তাদের এমনভাবে ব্যস্ত রাখা হতো যে তারা বিগতদিনের বিভীষিকাময় দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করার কোনো অবকাশই পেত না। মনোবিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করেছেন ‘কর্মে নিয়োজনমূলক চিকিৎসা পদ্ধতি।’ যার ওষুধ হলো কর্মব্যস্ততা।
সত্যিই কর্মব্যস্ত জীবন আর অব্যাহত চেষ্টা আপনাকে সেরা সাফল্য এনে দিতে পারে। আপনি যা বিশ্বাস করেন এবং ভাবেন আপনি বাস্তবে তাই হয়ে ওঠেন। সাফল্য লাভের এর চেয়ে বড় দৈব সত্য আর নেই। আপনার সাফল্যের সেরা উপায় হতে পারে ডেল কার্নেগির তিনটি গ্রন্থের এই সংকলন “আত্মোন্নয়নসমগ্র।” সংকলনটি সকলের উপকারে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।

attonnayan samogro,attonnayan samogro in boiferry,attonnayan samogro buy online,attonnayan samogro by Dale Carnegie,আত্মোন্নয়ন সমগ্র,আত্মোন্নয়ন সমগ্র বইফেরীতে,আত্মোন্নয়ন সমগ্র অনলাইনে কিনুন,ডেল কার্নেগী এর আত্মোন্নয়ন সমগ্র,9789849868316,attonnayan samogro Ebook,attonnayan samogro Ebook in BD,attonnayan samogro Ebook in Dhaka,attonnayan samogro Ebook in Bangladesh,attonnayan samogro Ebook in boiferry,আত্মোন্নয়ন সমগ্র ইবুক,আত্মোন্নয়ন সমগ্র ইবুক বিডি,আত্মোন্নয়ন সমগ্র ইবুক ঢাকায়,আত্মোন্নয়ন সমগ্র ইবুক বাংলাদেশে
ডেল কার্নেগী এর আত্মোন্নয়ন সমগ্র এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 400.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। attonnayan samogro by Dale Carnegieis now available in boiferry for only 400.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন হার্ডকভার | ৩০৪ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2024-03-16
প্রকাশনী কলি প্রকাশনী
ISBN: 9789849868316
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

ডেল কার্নেগী
লেখকের জীবনী
ডেল কার্নেগী (Dale Carnegie)

ডেল কার্নেগী ডেল ব্রাকেনরিডজ কার্নেগী, এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে ২৪ নভেম্বর, ১৮৮৮ সালে জন্ম নেওয়া এই আমেরিকান লেখক তাঁর আত্ম-উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও বইয়ের পাতায় আজও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এক নাম। সেলফ-ইম্প্রুভমেন্ট, সেলসম্যানশিপ, করপোরেট ট্রেনিং, পাবলিক স্পিকিং, ও ইন্টার পার্সোনাল স্কিল এর মতো দারুণ সব প্রশিক্ষণের উদ্ভাবন ও এসব বিষয়ে লেখা ডেল কার্নেগী এর বই সমূহ আশার আলো দেখিয়েছে অসংখ্য হতাশাচ্ছন্ন মানুষকে। মিসৌরিতে দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়ার দরূণ বালক বয়স থেকেই কাজ করেছেন ক্ষেতখামারে। এর মাঝেও ওয়ারেন্সবার্গের সেন্ট্রাল মিশৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। কলেজ শেষে জীবিকার তাগিদে বেকন, সাবান এবং লার্ড (শূকরের চর্বি মিশ্রিত করা) তৈরির কাজও করতে হয় আর্মর অ্যান্ড কোম্পানির জন্য। ফার্মের প্রধান হিসেবে অনেক সাফল্য লাভ ও ৫০০ ইউএস ডলার সঞ্চয়ের পর ১৯১১ সালে বহুদিনের লালিত স্বপ্ন অধ্যাপক হওয়ার জন্য বিক্রয় সেবার কাজটি ত্যাগ করেন তিনি। কিছু ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা ঝুলিতে নিয়ে যখন ওয়াইএমসিএ- এর ১২৫ নম্বরে বাস করতে শুরু করেন, তখনই পাবলিক স্পিকিং এর ধারণাটি মাথায় খেলা করে কার্নেগীর। সেই সময় মোট লভ্যাংশের ৮০% শতাংশের বিনিময়ে ওয়াইএমসিএ এর পরিচালকের কাছে শিক্ষা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এভাবেই ১৯১২ সাল থেকে কার্নেগী কোর্সের যাত্রা শুরু হয়। পুরো আমেরিকাবাসীর কাছে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পথ হয়ে উঠে তার পদ্ধতি। ডেল কার্নেগী এর বই সমগ্র এর মধ্যে ‘হাউ টু উইন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স’ বইটিকে তার সেরা অবদান হিসেবে ধরা হয়। প্রথম প্রকাশের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই যার ১৭তম মুদ্রণও প্রকাশ করতে হয়েছিলো। ডেল কার্নেগী এর লেখাগুলো বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ‘বিক্রয় ও জনসংযোগ প্রতিনিধি হবেন কীভাবে’, ‘বন্ধুত্ব ও সম্পদ লাভের কৌশল’, ‘বড় যদি হতে চাও’, ‘ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সাফল্যের সহজ পথ’ এমন নানা নামের অনূদিত ডেল কার্নেগী বাংলা বই অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বাংলাভাষী পাঠকদেরও। ডেল কার্নেগী শ্রেষ্ঠ রচনাসমগ্র এর মধ্যে আরও আছে ‘দ্য বায়োগ্রাফি অব আব্রাহাম লিংকন’, ‘ফাইভ মিনিট বায়োগ্রাফিস’ এবং ‘বিশ্বায়নের পটভূমি’। ১ নভেম্বর, ১৯৫৫ সালে আমেরিকান এই অধ্যাপক মৃত্যুবরণ করেন।

সংশ্লিষ্ট বই