তােড়ার বিয়েটা হয়ে গেল তাড়াহুড়াে করেই। মাত্র দুদিনের আলােচনায়। রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী গল্পের মতােই, কনের বাপ সবুর করিতে পারিতেন কিন্তু বরের বাপ সবুর করতে চাহিলে না।' জাপানে তিন বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে ছুটিতে বাড়ি এসেছে আরমান। এই সুযােগে তােড়ার সঙ্গে তার বিয়েটা হয়ে গেল। তবে এই বিয়ের জন্য আরমানের কিছুটা গ্রাউন্ডওয়ার্ক আছে।জাপান থেকে দেশে আসার পর তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন জোর করেই ধরেছেন বিয়ে থা করে ফেলার জন্য। আরমান কিন্তু এ ব্যাপারে হ্যা কিংবা না কিছুই পরিষ্কার করে বলে না। সারা দিন স্কুলজীবনের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বেড়ায়, রাতে খাওয়া-দাওয়া করে আবার বের হয়ে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে তাস খেলে, গল্প করে, মাঝে মাঝে দূরে কোথাও হাঁটতে যায়। এবং মধ্যরাতে বাসায় ফিরে টানা ঘুম। আবার কোনাে দিন কোনাে বন্ধুর বাসাতেই ঘুমিয়ে সকালে বাসায় ফেরে। যেখানেই ঘুমায় না কেন, তার ঘুম ভাঙে বেলা এগারােটায়। বিদেশে থাকে বলে কথা, না-হয় আরমানের বাবা। মােটেও এত বেলা করে ঘুমানােকে সহ্য করতেন না। নিজের সংস্কারে অন্যকে দেখা মানুষের ধর্ম। অন্যভাবে বললে, প্রতিটি মানুষই তার নিজস্ব মতাদর্শ, মূল্যবােধ, বিশ্বাস ও অনুভূতি অন্যের ওপর প্রতিফলন প্রত্যাশা করে। আরমানের বাবা খুব ভােরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হন তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে। তারা কথা বলেন, হাসেন, হাঁটেন এবং একটু বেলা হলে বাসায় ফেরেন। হাঁটতে হাঁটতে চলে যান শােলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত। কোনাে সময় শােলাকিয়া মাঠের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পথ ধরে আরও দূরে চলে যান। সেখানে গিয়ে জুতা হাতে নিয়ে ক্ষেতের আল ধরে খালি পায়ে মাটিতে হাঁটেন। পায়ে কুয়াশা জড়িয়ে হেঁটে এক প্রকার আনন্দ উপভােগ করেন।