শ্রীনিবাস রামানুজন মাত্র ৩৩ বছর বেঁচেছিলেন, তারই মধ্যে তিনি যে অনন্যসাধারণ গণিত-প্রতিভার পরিচয় রেখে গেছেন তার তুলনা বিরল। তার গণিত-গবেষণার বিষয়ে বিদগ্ধজন আলোচনা করেছেন ও করবেন। তাতে সাধারণের বােধগম্য বিশেষ কিছু থাকে না। কিন্তু যে ব্যক্তি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতিতে শিক্ষালাভ না করেও কেবল স্বীয় প্রচেষ্টায় এবং প্রতিভার জোরে উচ্চগণিত নিয়ে গবেষণা করতে পারেন এবং বহু নতুন অবদান দাবি করতে পারেন, তাঁর জীবনকথা জানা এবং তা থেকে শিক্ষালাভ করার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিভার উৎস নির্ধারণ করা যায় না। কোনাে আনুষ্ঠানিক পদ্ধতিতেও তাকে লাভ করা যায় না। এই প্রতিভা প্রায়শ চোখের আড়ালেই থেকে যায়। কিন্তু প্রতিভা চিনতে প্রতিভার দরকার—যেমন জহুরং চেনে জহুরী। রামানুজনের প্রতিভাও ধরা পড়ত না, যদি সেরকম যােগাযােগ না ঘটত এবং তৎকালীন কেমূব্রিজ ট্রিনিটি কলেজের ফেলাে অধ্যাপক জি, এইচ, হার্ডির নজরে না পড়ত। প্রধানত তারই প্রচেষ্টায় রামানুজনের কাজ বিদ্বৎসমাজ তথা গাণিতিক সমাজ সম্পূর্ণরূপে জানতে পারল। অধ্যাপক হার্ডির সম্পাদনায় কেব্রিজ য়ুনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত রামানুজনের কাজের সংকলনটি এই সম্পর্কে প্রণিধানযােগ্য। রামানুজনের প্রতিভার অসাধারণত্ব গাণিতিকদের বিস্মিত করেছে। ভারতের একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান কীভাবে স্বীয় প্রতিভা ও অধ্যবসায় বলে বিশ্বদরবারে উচ্চসম্মান অর্জন করেছিলেন তার ইতিবৃত্ত প্রত্যেক ভারতবাসীর, বিশেষ করে কিশাের ও তরুণদের জানা দরকার ।