এই! কি হয়েছে তােমার? মন খারাপ? বলাে না! আবেগের কণ্ঠে প্রিয়া কথাগুলাে বললাে। আতিক কোনাে জবাব দিলাে না। ও ভীষণ বিষন্ন। মুখ ভার করে ও ড্রয়িং রুমে বসে আছে। সারা দিনে আতিক প্রিয়ার সাথে হাতে গােনা দুতিনটা কথা বলেছে। তাও নেহায়েত প্রয়ােজনে। প্রিয়া কিছু জিজ্ঞাসা করলেও আতিক কোনাে জবাব দেয় নি। দু একটা জবাব যা দিয়েছে তাও খুব কর্কশ কণ্ঠে। মনে হলাে, গলা না, যেন ফাটা বাঁশ! কখনাে কখনাে মনে হয় ও একটা পাথরের মূর্তি। ওর হাবভাবে স্পষ্টই বােঝা যায় যে, ও প্রিয়াকে অবহেলা করছে। সময় দেয়ার ব্যাপারেও আতিক ভীষণ কিপ্টা। মানুষ টাকা পয়সা খরচের ব্যাপারে কিপ্টা হয়। আতিক এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারপরও প্রিয়া কিছু বলে না। সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করে। প্রিয়া ভাবে, হয়তাে অফিসে কোনাে ঝামেলা যাচ্ছে। চাকরিতে ঝামেলা হওয়া মানে বেকায়দা অবস্থা। কাউকে শেয়ারও করা যায় না। আবার না বলেও পারা যায় না। আতিক যে পরিমাণ মন খারাপ করে বসে আছে তাতে মনে হয় ওর স্ত্রী বিয়ােগ ঘটেছে। দূর শালা! এসব কি ভাবছি আমি! এসব চিন্তা বাদ। আমি কতবার প্রতিজ্ঞা করেছি যে বাজে চিন্তা আর করবাে না। অথচ বদমার্কা চিন্তাগুলি মাথার মধ্যে শুধু কিলবিল করে। গলা খিচুনি দিয়ে প্রিয়া আতিকের পাশে এসে বসে। কনুই দিয়ে পেটের বা দিকে ধাক্কা মেরে বলে, তােমার মুখে কি আইকা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে নাকি? কোনাে কথাই তাে বলছে না। ঘটনা তাে ভালাে মনে হচ্ছে না। আতিক নির্লিপ্তভাবে প্রিয়ার দিকে তাকায়। তারপর অন্য দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়।