পাত্রী দেখা হয়েছিলাে ভাইয়ার জন্য। সেই পাত্রী এখন আমার বিয়ে করতে হবে। পরিবারের এমন আকস্মিক নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তে সঙ্গত কারণেই ভাইয়া লজ্জায় কিছুদিন আমার সামনে মাথা তুলে তাকাতে পারলাে না। আমারও সংকোচে জান যায় অবস্থা। প্রথমদিকে হালকা ভাবে নিয়েছিলাম। বিষয়টা শেষ পর্যন্ত আর হালকা রইলাে না। কারণ বিয়ের সিদ্ধান্ত পাকাপাকি হয়ে গিয়েছে। সিদ্ধান্ত পাকাপাকিতে এই যুগের ছেলে হিসেবে আমার মতামতের ধার দিয়েও কেউ গেলাে না। কেউ বলতে আমার বাবা আর মামা। পরিবারের অন্য সদস্যরা। মােটামুটি কাঠের পুতুল। আমি কাঠের পুতুল না । বরং পরিবারের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ শিক্ষিত সদস্য। কোনােদিন পিতামাতার অবাধ্য ছিলাম না। এটাই আমার বিপদের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ালাে। তাঁরা আমার উপর অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেলেন। বাবা কিছুক্ষণ বিস্মিত হয়ে আমার তীব্র প্রতিবাদ দেখলেন। এবং দুই ঘণ্টার মাথায় ব্লাড প্রেসার ১৮০/১১০ উঠিয়ে সারারাত বাড়ীর মানুষকে জাগিয়ে রাখলেন। ডাক্তার এসে চোখ বড় করে বললেন, স্ট্রোক যে হয় নাই এইটাই সাত কপালের ভাগ্য! আমি সাত কপালের ভাগ্য মেনে নিয়ে সকালের দিকে মিনমিন করে বাবার হাতের তালু ঘষে দিলাম। চুলে বিলি কেটে দিলাম। সকাল দশটার দিকে বাবাকে বারান্দায় পা ঝুলিয়ে হাসিমুখে মগ ভর্তি চায়ের মধ্যে মুড়ি মিশিয়ে খেতে দেখা গেলাে। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, বাজারে পাবদা পাইলে আনিস তাে। চাষেরটা না - নদীরটা। চাষের মাছ ঘাসের মতাে লাগে খাইতে।