কল্যাণের অভিযাত্রী উত্তম ব্যবহার ও মার্জিত আচরণে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সে নিজেকে গড়ে তোলে একজন দায়ি হিসেবে। চিন্তার স্বচ্ছতায়, চরিত্রের পবিত্রতায় আর লেনদেনের সততায় সে সবার পরিচিত মুখ। তার হাত ধরে হিদায়ত লাভ করে অনেকেই।
তার কথা শুনে, সাহচর্যে থেকে, তার চিন্তা-ভাবনার সংস্পর্শে এসে বদলে যায় কত মানুষের জীবন! কত মানুষ উঠে আসে আলোর পথে! সুন্দর হয়ে ওঠে কত মানুষের পথচলা!
কোমল হৃদয়ের এক দায়ি সে। সহজেই কাছে টানতে পারে যে কাউকে। অকৃত্রিম ব্যবহার ও সরল আচরণে সে খুঁজে নেয় দিশেহারা হৃদয়ের প্রবেশপথ। অল্প কথায় সে স্পর্শ করে শ্রোতাদের মন।
মানুষের ভুলত্রুটি সে ক্ষমা করে দেয় নির্দ্বিধায়। নীরবে সহ্য করে তাদের দুর্ব্যবহার।
হৃদয়ের অন্তহীন উদারতা আর ব্যবহারের সরলতা অবশেষে তাকে পৌঁছে দেয় সাফল্যের দোরগোড়ায়। হিদায়তের আলোতে উদ্ভাসিত হয় তার সাহচর্যধন্য মানুষগুলো। প্রশান্তিতে ভরে যায় তার অন্তর। একজন মানুষের হিদায়ত লাভ করা তার জন্য লাল বর্ণের উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম।
সে কখনো নিজের ভুলের পক্ষে সাফাই গায় না। কারও থেকে প্রতিশোধও নেয় না। রাগান্বিত হয় না মূর্খ লোকদের অজ্ঞতাপ্রসূত আচরণে। বরং মানুষের অসঙ্গত আচরণগুলোর পথ ধরেই সে হৃদয়ে প্রবেশ করার রাস্তা খুঁজে নেয়। অবশেষে তারা আল্লাহর বাণী ও প্রিয়নবির সুন্নাহর আলোচনা শোনার জন্য মাথা নুয়ে দেয়। অন্তর থেকে বের হওয়া কথা অন্তরে গিয়েই আঘাত করে।
তার সান্নিধ্যে থেকে হিদায়ত লাভ করেছে এমন এক যুবক কয়েক বছর পর এসে তাকে বলে—আপনার ধৈর্য ও সহনশীলতার কথা আমি কখনো ভুলতে পারব না। প্রথম সাক্ষাতেই আমার অসংলগ্ন আচরণগুলো যেভাবে আপনি নির্দ্বিধায় সহ্য করেছেন! গতকাল বিকেলে নিজের বাড়াবাড়িগুলো স্মরণ করে নিজেই লজ্জিত হয়েছি...
উত্তরে স্নেহসিক্ত কণ্ঠে তরুণ দায়ি বলে—চলো, কেমন ছিল নববি তরবিয়ত, তার একটি নমুনা দেখে আসি... স্বচ্ছন্দে অসংলগ্ন কাজ করা এক বেদুইনের সঙ্গে তিনি কেমন আচরণ করেছিলেন?
হজরত আনাস র. বলেন: ‘একবার জনৈক গ্রাম্য লোক এসে মসজিদে নববির ভেতরে একপাশে পেশাব করতে বসে। সাহাবারা তাকে ধমক দেয়। রাসুলুল্লাহ স. তাদের থামিয়ে দেন। তার প্রস্রাব করা শেষ হলে তিনি প্রস্রাবের ওপর পানি ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দেন।’
আমি তাকে বলি—‘আমাদের অনেকেই এই বেদুইনের তুলনায় তুচ্ছ ভুল করেও বেশ রূঢ়তা ও বাজে মন্তব্যের শিকার হয়।’
নতুন কিছু উপলব্ধি করার ভঙ্গি করে সে বলে: রাসুলুল্লাহ স.-এর সকল কাজে আমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। তার আচার-ব্যবহার থেকেই আমাদের শিখতে হবে দাওয়াতের পদ্ধতি।
কুরআন কত সুন্দরই না বলেছে—
فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ “আল্লাহর দয়ায় তুমি তাদের প্রতি কোমল-হৃদয় হয়েছিলে। যদি তুমি রূঢ় ও কঠিনচিত্ত হতে তবে তারা তোমার আশপাশ হতে সরে পড়ত।”
দাওয়াহর ময়দানে কাজ করতে হলে প্রয়োজন ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও ক্ষমার মতো মহৎ গুণাবলি।
যে ব্যক্তিই আল্লাহকে রব বলে বিশ্বাস করে, ইসলামকে সত্য দ্বীন হিসেবে মেনে নেয় এবং মুহাম্মদ স.-কে রাসুল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, নিঃসন্দেহে সে একজন দায়ি; সর্বত্র ও সর্বদা সে দাওয়াতের কর্মী। পরিবার, সমাজ ও জাতির প্রতি দাওয়াতের যে ঋণ, তা অবশ্যই তাকে শোধ করতে হবে।
আছে কোনো উদ্যোগী?
আছে কোনো অভিযাত্রী?
শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম এর আছে কোনো অভিযাত্রী? এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 95.48 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Ace Kono Ovijatri by Shaikh Abdul Malik Al Kasimis now available in boiferry for only 95.48 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.