জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে সবচেয়ে কঠিন সত্য বাক্য বােধ করি উপরিল্লিখিত শিরােনামটি। যিনি তাঁর মননে চেতনায় ধারণ করতেন অসাম্প্রদায়িকতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র। তাঁর লেখনীতে যা সুস্পষ্ট। নজরুল কবিতার উচ্চারণে তাই বলিষ্ঠতা, দৃঢ়তা স্পষ্ট। | প্ৰসংগত আমরা এ বিষয়ে প্রকৃত দৃষ্টান্ত পাই কবির জেষ্ঠ সন্তান প্রয়াত কাজী সব্যসাচীর উচ্চারণে। আরও প্রমাণ মেলে সৈয়দ হাসান ইমাম, প্রদীপ ঘােষ, পার্থ ঘােষ, গৌরী ঘােষ, আসাদুজ্জামান নূর, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, শফি কামাল, প্রজ্ঞা লাবণী, রূপা চক্রবর্তী, লায়লা আফরােজ, ডালিয়া আহমেদ, শিমুল মুস্তাফা এবং প্রয়াত গােলাম মুস্তাফা, কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী ও কাজী আরিফ এর উচ্চারণে।। কাজী সব্যসাচী সকলের থেকে এক ভিন্ন মাত্রিকতায় কাজী নজরুলকে উপস্থাপন করেছেন দর্শক শ্রোতাদের কাছে যা ঈর্ষাণীয়। তাঁর উপস্থাপনের বিশেষ দিক হচ্ছে প্রতিটি শব্দের গুরুত্ব অনুধাবন, বিশেষ করে বাক্যের শেষ শব্দটিকে একটা ঝাকুনি দেয়া, ছন্দের চলার গতিতে সামঞ্জস্য রক্ষা করা, ভাব, রসের প্রাণময়তা চর্চা, কণ্ঠের বলিষ্ঠতা, কবিতার নিগুঢ় সত্যের প্রকাশ প্রভৃতি। নানা অনুষঙ্গ তার উপস্থাপনে পরিলক্ষিত হয়ে কবিতাটি যেমন প্রাণময়ভাবে আমাদের কাছে ধরা দেয় ঠিক তেমনি ভাবে কবিও জীবন্ত হয়ে আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যান। নজরুল তাঁর কবিতার মাধ্যমে মানুষের জয় গান গেয়েছেন তাই তাঁর কবিতার উচ্চারণেও আবৃত্তি শিল্পীদের উপস্থাপনায় স্বতস্ফূর্ততা, প্রাণবন্তভাবের, জীবনবােধের স্পষ্টতার সম্মিলন ঘটাতে হবে। আবৃত্তি শিল্পীর একাগ্রতা নিষ্ঠাই পারে এই দৃঢ়তার প্রমাণ ঘটাতে।