বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের এক মহীরূহ তােয়াব খান। জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল, সাতক্ষীরার রসুলপুরে। পড়াশােনা করেছেন পিএন হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে। দৈনিক সংবাদে পেশাগত জীবন শুরু ১৯৫৫ সালে। দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ১৯৬১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত। তকালীন দৈনিক পাকিস্তানের বার্তা সম্পাদক ছিলেন ১৯৬৪ থেকে ১৯৭০ অব্দি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দৈনিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয় এই মুক্তিযােদ্ধা সাংবাদিকের ওপর। ১৯৭৩-৭৫ সময়কালে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সেক্রেটারি। পরে ১৯৮৭-৯১ সময়পরিধিতে আবারও রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এবং বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ছিলেন ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত। মহাপরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট পরিচালনায় দিয়েছেন সৃষ্টিশীল নেতৃত্ব। এরশাদ সরকারের পতনের পর আবার দৈনিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দশ মাস। দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক পদে যােগ দেন ১৯৯৩ সালে। অদ্যাবধি সেখানেই কর্মরত। এদেশের সাংবাদিকতায় পত্রিকার গেট আপ, মেক আপ, বিষয়বৈচিত্র্য আনয়ন, ইস্যু শনাক্তকরণ, যথােচিত ট্রিটমেন্ট, সুযােগ্য সম্পাদনার ক্ষেত্রে তিনি আদর্শ। তাঁকে রােল মডেল মনে করা হয়। সাংবাদিকতা বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা প্রদান করেছেন দেশে-বিদেশে, অনেকবার। ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের ৩৪ দেশ। সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অনেক পুরস্কার, পদক, সম্মাননা, সংবর্ধনা। এর মধ্যে রয়েছে: রাষ্ট্রীয় একুশে পদক, ইন্টারন্যাশনাল হুজ হু-তে অন্তর্ভুক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আতাউস সামাদ ট্রাস্ট ফান্ড সম্মাননা, কাজী মাহবুবউল্লাহ-জেবুন্নেসা স্বর্ণপদক,আমিন জুয়েলার্স স্বর্ণপদক ইত্যাদি। অনেক কৃতী সাংবাদিকের শিক্ষাগুরু, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব তােয়াব খান বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলাে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য। তার পিতার নাম আবদুল ওয়াহাব খান, মাতা মােসাম্মৎ জোবেদা খানম। স্ত্রী হাজেরা খান ডালি। দুই কন্যারই পেশা শিক্ষকতা। এষা খান অকালে প্রয়াত, অপর কন্যা তানিয়া খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়া স্টেটের বাসিন্দা।