ইমাম ইশবিলি রহ.-এর সংক্ষিপ্ত জীবনকথা ইমাম আবু মুহাম্মাদ আব্দুল হক বিন আব্দুর রহমান বিন আব্দুল্লাহ বিন হুসাইন বিন সাদ আল-আজদি আল-ইশবিলি আল-মালিকি রহ.। তিনি ইবনুল খাররাত নামেও পরিচিত ছিলেন। সমকালীন ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থভূমি আন্দালুসিয়ার (বর্তমান স্পেন) বিখ্যাত শহর ইশবিলে (বর্তমান সেভিল) ৫১০ হিজরি মোতাবেক ১১১৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ফকিহ। হাদিস, ইলাল ও রিজাল শাস্ত্রেও তিনি গভীর পান্ডিত্য রাখতেন। আরবি ভাষা, সাহিত্য ও কাব্যেও তাঁর বিস্ময়কর দখল ছিল। স্পেনে ফিতনা শুরু হলে ইমাম ইশবিলি রহ. আলজেরিয়ায় পাড়ি জমান। আলজেরিয়ার বর্তমান ‘বেজাইয়া’ প্রদেশে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। সেখান থেকে তাঁর ইলমের দ্যুতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি অসংখ্য কিতাব রচনা করেন। তাঁর বহুল সমাদৃত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: আল-আহকামুশ শারইয়াহ আল-কুবরা (৬ খ-), আল-আহকামুশ শারইয়াহ আল-উসতা, আল-আহকামুশ শারইয়াহ আস-সুগরা, তালকিনুল ওয়ালিদ, আত-তাওবা, আত-তাহাজ্জুদ, আল-জামিউল কাবির (২০ খ-), আল-জামউ বাইনাস সহিহাইন, আল-ওয়াফি ফিল লুগাহ, আর-রাকাইক, আজ-জুহদ, আল-আকিবা ফি জিকরিল মাওত (বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ), আল-গারিব ফি লুগাতিল কুরআনি ওয়াল হাদিস, আল-মুসতাসফা ফিল হাদিস, আল-মুতাল মিনাল হাদিস ইলমচর্চা ও লেখালেখির পাশাপাশি তিনি বেজাইয়া প্রদেশের একটি মসজিদে খতিব ও ইমামের দায়িত্বও পালন করতেন। তাঁর বিরল ইলম, তাকওয়া ও জুহদের কারণে তিনি আলিমদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত ছিলেন। তিনি শুরাইহ বিন মুহাম্মাদ, আবুল হাকাম বিন বারজান রহ. প্রমুখ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। আবুল হাসান মাআরিফি রহ. তাঁর কাছ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। স্পষ্টবাদিতার কারণে তিনি সমকালীন শাসকগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হন। অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগও পোহাতে হয় তাঁকে। ৫৮১ হিজরি মোতাবেক ১১৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এই মহান ফকিহ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাড়া দিয়ে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা দান করুন। (আমিন) ।