অনুবাদ যে সাহিত্যের অন্যতম এক শাখা তা বাংলাদেশী পাঠকদের যে মানুষটি অনুধাবন করিয়েছেন তিনি খ্যাতিমান অনুবাদ বই লেখক জি এইচ হাবীব। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ‘নিঃসঙ্গতার একশ বছর’ এবং নরওয়েজিয়ান লেখক ইয়স্তেন গার্ডারের ‘সোফির জগৎ’ নামে অনূদিত বইগুলো জি এইচ হাবীব এর বই সমগ্র’র মধ্যে তাকে অনুবাদক হিসেবে এনে দিয়েছে অনন্য খ্যাতি। জি এইচ হাবীবের জন্ম ১৯৬৭ সালে ঢাকায়। ভালো নাম গোলাম হোসেন হাবীব যা পরে লেখক পরিচয় নিতে গিয়ে সংক্ষেপিত হয়ে জি এইচ হাবীব হয়ে যায়। শিক্ষাজীবন পুরোটাই কেটেছে ঢাকায়। মিরপুরের শহীদ আবু তালেব বিদ্যানিকেতন থেকে মাধ্যমিক ও মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শেষ করেন ইংরেজি সাহিত্যের পড়াশোনা। কর্মজীবনটা শুরু করেন বছর দুয়েক সাংবাদিকতা করে। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। বর্তমানে সেখানেই কর্মরত আছেন। কর্মস্থল থেকেই অনুবাদ করে যাচ্ছেন ইংরেজি ভাষা থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। সেই সাথে সম্পাদনা করছেন অনুবাদ সাহিত্যের পত্রিকা তর্জমা। ছোটবেলায় সেবা প্রকাশনীর গোয়েন্দাগল্পগুলো, যেমন- দস্যু বনহুর, কুয়াশা কিংবা মাসুদ রানা পড়ে পড়েই অনুবাদে আগ্রহ জন্মেছিলো একরকম। ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেবার মাধ্যমেই রহস্য পত্রিকায় তাঁর প্রথম রূপান্তরিত অনুবাদ লেখা ‘জেগে তাই তো ভাবি’ প্রকাশিত হয়, যার জন্য সেসময়ই পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন এক হাজার টাকা। এরপর প্রথম বই অনুবাদ করার সুযোগ পেয়েছিলেন সেবার কাছ থেকেই। সেই বইটি ছিলো ‘শার্লক হোমস’। যে বইটি পড়ে ভালো লাগে মূলত সেই বইটিই অনুবাদ করার বিষয়ে আগ্রহী হন জি এইচ হাবীব। জি এইচ হাবীব এর অনুবাদ বইসমূহ’র মধ্যে আরও উল্লেখযোগ্য হলো তরে ইয়নসন-এর ‘লাতিন ভাষার কথা’, ‘আমোস তুতুওলা-র ‘তাড়িখোর’, ইতালো কালভিনোর ‘অদৃশ্য নগর’ এবং রলাঁ বার্ত-এর ‘রচয়িতার মৃত্যু’।