ইমাম যাহাবীর ছাত্র তাজ-উদ-দীন আব্দুল ওয়াহ্হাব আস-সুবকী বলেন, “আমাদের শাইখ ও উস্তায ইমাম হাফেয শামসুদ্দীন আবু আব্দুল্লাহ আত-তুর্কমানী আয-যাহাবী যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস। তিনি নজির-বিহীন। তিনি এমন এক গুপ্তধন, যার কাছে আমরা সমস্যায় পতিত হলে ছুটে যাই। হিফযের দিক থেকে সৃষ্টিজগতের সেরা। শাব্দিক ও অর্থগতভাবে তিনি খাঁটি সোনা। ‘জারহ ও তাদীল’ শাস্ত্রের পণ্ডিত। ‘রিজালশাস্ত্রে’ তিনিই বিজ্ঞ। যেন সমগ্র উম্মাহর লোকজনকে একটা প্রান্তরে একত্র করা হয়েছে, আর তিনি তাদের দেখে দেখে তাদের ব্যাপারে বলছেন। তার জন্ম ৬৭৩ হিজরী সনে। আঠার বছর বয়সে তিনি হাদীস অন্বেষণ শুরু করেন। দামেস্ক, বা‘লাবাক্কা, মিশর, আলেকজান্দ্রিয়া, মক্কা, আলেপ্পো, নাবুলসসহ নানা শহরে তিনি গমন করেন। তার শাইখের সংখ্যা অগণিত। তার থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ হাদীস শুনেছে। তিনি হাদীস-শাস্ত্রের খেদমতে রত ছিলেন, এমনকি এ ব্যাপারে গভীর জ্ঞানে পৌঁছেছেন। দামেস্কে অবস্থান নিলেন। সকল দেশ থেকে তার উদ্দেশ্যে লোকজন আসতে থাকল। ‘আত-তারীখুল কাবীর’ তিনি রচনা করলেন। আরও লিখলেন ‘আত-তারীখুল আওসাত্ব’ যেটা ‘ইবার’ নামেও পরিচিত। সেটা বেশ সুন্দর। আরেকটা ছোট বই লিখেলেন, ‘দুওয়ালুল ইসলাম’। এছাড়া ‘কিতাবুন নুবালা’ ও ‘আল-মীযান ফিদ-দুয়াফা’ রচনা করেন। শেষোক্ত বইটি সর্বশ্রেষ্ঠ বই। আরও রচনা করেন ‘সুনান বাইহাকী’র মুখতাসার। এটিও ভালো। লিখেছেন ‘ত্বাবাকাতুল হুফ্ফায’, ‘ত্বাবাকাতুল ক্বুর্রা’-সহ আরও নানা সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ। বিভিন্ন রেওয়ায়াতে তিনি কুরআন শিখেন এবং শিক্ষা প্রদান করেন। ৭৪৮ হিজরী সনে তিনি মারা যান। মৃত্যুর কিছু দিন আগ থেকে তিনি চোখের জ্যোতি হারিয়েছিলেন।” [ত্বাবাকাতুশ শাফেইয়্যা আল-কুবরা: (৯/১০০-১২৩)।]