উনিশ শ' উনপঞ্চাশের শীতের সময়। কর্মতৎপর শহরের বুকে লােজগারের আনাগােনা। অর্থলিপ্সা মানব কীটের ভারী চাপের রুদ্ধ আঘাতে শান্তসরল জীবনের প্রাণ মাতানাে কাতর গােঙানি। চোরাকারবারিদের ফিসফিস গুঞ্জন আর মৃত্যু-শীতল ভয়ানুভবতা। ধরিবাজদের প্রকাশ্য মারমুখ। চাকরিজীবীদের সকাতর চাহনি এবং অন্ন সংস্থানের টানাটানি। কিন্তু আশ্চর্য, ইঞ্জিন বিগড়ানাের মতাে সবই আজ স্থাণুবৎ দাঁড়িয়ে পড়েছে হঠাৎ। আতঙ্কের রুদ্ধশ্বাস ছােট-বড় সবাইর হৃৎপিণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে যেন সংজ্ঞায়িত কোনাে এক মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে চায়। কিন্তু এই ভয়ার্ত পরিবেশেও যাৱা পায়ে পায়ে গুটি গুটি চলেছে তারা মানব সমাজের সর্বনিম্ন জীব, তারা গরিব। দেশের উপর যে কালাে দৈত্য ডানা মেলে আছে তা বুঝেও তাদের পায়ে পায়ে চলে সন্ধান নিতে হচ্ছে কোথায় খাদ্য! কয়েক পল্টন পদাতিক সৈন্য এসে উপস্থিত হলাে শহরের বুকে। এরা পুলিশকে সাহায্য করবে। মারাত্মক এই খুন প্রতিযােগিতাকে এরা থামিয়ে দেবে। দেশের সবাইকে দেখিয়ে দেবে, কে এই জঘন্য খুনি! বিখ্যাত ডিটেকটিভ অফিসার হায়দার নিজামী এবং তাঁর সহকর্মী ফারুক এসে গেছেন ঘটনার প্রান্তেই। মানুষের মনে এসেছিল তাই একটুখানি আশার আলাে। কিন্তু ঘটনা ক্রমশ যেভাবে পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যে একটুখানি সাহস ছিল লােকের মনে তা দেখে তাদের হৃদয়ে শুধু চেপে রেখেছে জীবনের শেষ দীর্ঘশ্বাসটি। পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তান; পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সমগ্র দেশময় ছড়িয়ে পড়েছে এই চাঞ্চল্যকর বিভীষিকাময় খবর। শুধু পাকিস্তান নয়, সমগ্র দুনিয়াই যেন এই অদৃশ্য হন্তের জঘন্যতার পরিমাপ শুনে আতঙ্কিত। কিন্তু কী এই দুর্ঘটনা? খুন!!! মানুষের রক্তের সাথে হয়েছে মারাত্মক বিযের সংমিশ্রণ! কিন্তু কী করে, কেমন করে কেউ তা বলতে পাচ্ছে না। তিনটি খুনের (সংক্ষিপ্ত……)