বিশালাক্ষীর যে জীবন স্মৃতিকাতুরে যােজন শব্দমালায় তার ছিটেফোঁটাও তুলে আনা যায় না একজনমে। শুধু অণুবীক্ষণীয় আবেগ প্রতি অনুরণনে জাগানিয়া সুর তুলতে থাকে যখন তখনই অনাবিল ছায়াময় দ্যোতনা নেচে গেয়ে ওঠে, হেমন্তী হিমভেজা পেলবে নেয়ে ওঠে মন। হারিয়ে যাওয়া মানবিক কিংবা দানবিক আগ্নেয় ক্ষুরণগুলােকে এক করে বিনিসুতাের আবর্তে ঢালতে গেলেই চোখ নরম হয়ে আসার সাথে সাথে মধুরিম বিললাল আনন্দময়ীর নাচন দেয়। ভুলে থাকা সে এক নিদান দূরের পরাজিত কায়া। যায় না, কোনাে কিছু ভােলা যায় না। বুভুক্ষুতা, হিংস্রতার নগ্ন মাতম আর পারিজাত বলয়ের সােনাক্ষী দিনক্ষণ, যা বাসন্তী পরশে চাঁদ মিশেলে জীবনরেণুতে লীন হয়ে আছে তার কাছাকাছি আসার দুর্বিনীত ইচ্ছা থাকাটা স্বপ্নময়। তুলে আনতে গেলেই এক জীবন সজীব ডানাওয়ালা স্বর্গীয় পরিদের সুর করা সবুজ কর্ষণ আর জোনাকির নরম আলাের মাখামাখিতে উদ্ভাসনা চলে আসে। সুখ হয়। আবার আরেক জীবন ধান কাটা কাস্তের প্রতিটা সূচালো রােয়া আর অগ্নিগিরির গভীর বুক থেকে ছিটকে আসা পােড়া লালচে হীরার চেয়েও কঠিন পাথরের রূঢ়তা বুকের পাঁজর কামারের হাপরের মতাে ধপধপ ওঠা-নামা করে। জীবন পাঁচমিশেলি! স্নায়ুতাড়িত মানুষ সৃষ্টির উন্মাদনায় তার অজান্তে মেতে ওঠে জাগতিক সমৃদ্ধতায়, পূর্ণ করে নিজকে, প্রকৃতিকে। বােধিবৃক্ষের সীমাহীন বিচ্ছুরণে ঘন আবেগী সত্তা দু'চোখ ভরে দেখতে শিখিয়েছে সৃষ্টির অবারিত কর্ষণকে। আমাদের দায়িত কাহিনির মৃদুল দৃষ্টিতে রুপালি মােহতার বুনন এমন আঁটো করে প্রােথিত করেছিল যে তার শানিত প্রজ্বলন মনের গভীর থেকে সাত আসমান পার হয়ে কোন গগনে বিচরিত হচ্ছিল, হচ্ছিল...। যে জ্বালা ক্ষুধার, যে জ্বালা যুদ্ধের, যে জ্বালা পাশবিকতার, যে জ্বালা কুসংস্কারের, তার পরিক্রমিক দলিত সামাজিক বৈরী বহমানগুলাে সাদরে বুকে তুলে নিয়ে (সংক্ষিপ্ত……)