এই রাতের শহর, খোলা আকাশ, মেঘ, বৃষ্টিভেজা কৃষ্ণচূড়া, ল্যাম্পপোস্টের আলো কিংবা ধুলোমাখা পথ মিলিয়ে- আমরা কখনো গন্তব্য খুঁজিনি।
অথবা এক ছাদের নিচে থাকলে যাকে তোমরা সংসার বলো; আমি তাও বলিনি।
বলিনি তুমি আমার আকাশ হও কিংবা ছায়া।
তুমি প্রেমিক হয়ে সামনে না দাঁড়ালেও;
আমি বুঝে নিই আমার এলাকার বাতাস
তোমার এলাকায় গিয়ে ঝড় তোলে।
আমি বুঝে নিই এক ঘর আমাদের না হলেও এক আমাদের শহর।
এই শহরের দেয়ালে দেয়ালে বড় অক্ষরে যে স্লোগান লেখা থাকে,
একদিন সেখানেও লিখে যাব- তুমি এলেই বসন্ত ফিরে আসে...
শঙ্খচিল
খুব মেঘ করেছে জেনেও কিছু কিছু মানুষ পথে নামে--
এখানে কে সাথে যাবে,
কবে কে কথা দিয়েছিল
একই পথের একই রেখা হবে বলে;
অথবা ঘোর অপেক্ষা নিয়ে
তাঁরা বসে থাকে না।
তারা জানে--
হয়তো মাঝরাস্তা পর্যন্ত না যেতেই ঝড় উঠতে পারে।
হয়তো পথের ধুলোয় হারিয়ে যাবে খুব চেনা পথ;
তবুও তারা পথ থামতে জানে না!
বিষন্ন আকাশের পথে পথে তারাই তো মেঘ ছুঁয়ে বৃষ্টি নামায়,
তারাই তো শঙ্খচিল…
কান্নাগুলোর প্রার্থনা
জানালা দিয়ে তাকিয়ে ঝড় দেখা, আর প্রচণ্ড ঝড়ে আটকে থাকা দুটো এক নয় । সারাটা দিন যে সূর্য আমাদের আলাে দেয়, সেই সূর্যের। তীব্রতা একটু বাড়লেই আমরা কথা শােনাতে তাকেও ছাড়ি না । এই পৃথিবীটা এই রকমই, হাজার ইচ্ছা করলেও কারাে অভিমানের কারণ। হওয়া যায় না। আবার না চাইলেও কারাে কারাে। রাগের কারণ হয়ে যাই আমরা ।
যাবজ্জীবন
এই জীবনে আমরা কেবল ততক্ষণ পর্যন্ত লড়ি, যতক্ষণ আমাদের হারানাের ভয় থাকে, বুকের ভেতর অসম্ভব কিছু চাওয়া থাকে। যেন কেনাে কিছুর বিনিময়ে | নিজের ইচ্ছে ও স্বপ্নদের জন্য সবটুকু দিয়ে লড়ে যেতে হবে। লড়তে হবে তার জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার জন্য। মানুষ তার জীবনে চাওয়া-পাওয়া, টিকে থাকার জন্য আসলেই অনেক কিছু করে। একের পর এক জটিল যুদ্ধ, এই যুদ্ধের শেষ নেই। জীবন মানেই শুধু বাঁচার জন্য অবিরাম লড়ে যাওয়া। অথচ একটা সময় যখন আর আমাদের হারানাের কিছু থাকে না, থাকে না অসম্ভব ভাবে কোনাে কিছু পাওয়ার কোনাে বাসনা, তখন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা নিয়ে আর কোনাে ভয় থাকে না। সব চাওয়া পাওয়া হয়ে গেলে, সব অজানা জানা হয়ে গেলে আমরা কেবল দিন গুনি, দিন গুনি এক মৃত্যুতে বিলীন হবার। এই জীবন নামক কারাগার থেকে মুক্তির অনিঃশেষ অপেক্ষায়।
\
আওয়াজ
মাসুদ সাহেব নিড়ানি হাতে নিয়ে বাগান পরিষ্কার করছেন। ডালিয়া, গােলাপ, শেফালী, বকুল থেকে শুরু করে, সব রকমের ফুল তিনি এনেছেন এ বাগানে লাগানাের জন্য। এই গল্পে আমরা তাকে চিনবাে একজন বাবা হিসেবে এবং তিনি একজন বড় আংকেল। আসুন তবে শুরু করা যাক, সেই বাগানের গল্প। | এশহরে কত শত উঁচু উঁচু দালান। এতাে সব দালানের মধ্যে যে দালান গুলাে আকাশ ছুঁয়ে গেছে, আমি সেই সব দালানের কথাই বলছি। এই সব দালানের নিচে দাঁড়ালে এতাে বড় আকাশটাকেও আর চোখে পড়ে না। শুনেছি নাকি এগুলাে মাটি দিয়েই তৈরি, তবুও এই ঝকঝকা চকচকা দালানের কোথাও, একটু কাদামাটির চিহ্নটি মাত্র নেই। এসব দালানে আমাদের মতাে মধ্যবিত্তদের ঠিক মানায় না। জায়গাটা আমাদের জন্য ছিল বড্ড বেমানান। কিন্তু নিয়তি ছাড়েনি, তার পাল্লায় পড়ে দালানের এক কোণে আমরা বসেছি। আমাদের চারপাশে আরাে অনেকে বসে আছে, যে যার যা মতােন। কেনাে জানি এই মুহূর্তে কারাে হাসির আওয়াজও আমার চারপাশটাতে কান্নার মতাে সুর তুলছে। কোনাে এক মহিলার চিৎকার করে ওঠা কান্নার আওয়াজে আমি আঁতকে উঠে দেখি, এক বুড়ি মহিলা উল্লাসে হাসছেন। যদিও বয়স হিসেব করতে যায়, তাহলে বুড়িটার বয়স পঁয়ষট্টির বেশি বলে কম নয়। তবুও বলতে হবে, বেশ পরিপাটি করে গুছিয়ে রেখেছেন নিজেকে। মহিলাটির পরনে কালাে রঙের বােরকার সাথে, সাদা জর্জেটের জরির কাজ করা ওড়না। তিনি তার ওড়নাটি এমন ভাবে মাথায় দিয়েছেন,তাতে তার মাথার অর্ধেক সাদা চুল বেরিয়ে আছে।
ইসমত আরা প্রিয়া এর ইসমত আরা প্রিয়া এর জীবনমুখি পাঁচটি উপন্যাস এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 728.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Ismot Ara Priya Er Jibonmukhi Pachti Uponyas by Ismot Ara priyais now available in boiferry for only 728.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.