শুভ অবাক হয়ে বিছানা থেকে উঠে বসল। চাঁদের আলোয় মাঝে মাঝে সাদা তুলার মতো মেঘগুলো মৃদু পায়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। শুভ লক্ষ করল একগুচ্ছ গাঁদা আর গোলাপের ভিতর তুষার শুভ্র কিছু সাদা বস্তু। ক্রমেই বাড়ছে তুলার মতো বস্তুগুলো। কয়েক সেকেন্ডের ভিতর প্রায় অর্ধেক ছাদ আর ফুলবাগান ভরে গেলে তুলার মতো বস্তুতে! এবার দ্রুত সরে যাচ্ছে তুষার শুভ্র তুলাগুলো! তুষার অদৃশ্য হয়ে যেতেই ভেসে উঠল প্রায় ছয় ফুট হাইটের একজন মানুষ আকৃতির ব্যক্তি। রুপার মতো চকচকে সাদা পোশাক আর মাথায় একটা সাদা হেলমেট। চোখ দুটা নীল আর চকচক করছে।
হাতে গ্লাভস আর পায়ে সাদা জুতা হাঁটু পর্যন্ত। হেলমেটের কপালের কাছে হালকা নীলাভ আলো! মনে হচ্ছে চন্দ্র বিজয়ী কোনো একজন মানুষ এখনই নেমে এসেছে এ ছাদে! ফুল বাগানের মাঝে এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে অভিভূত শুভ! সামান্য পরিমাণ ভয়ও পায়নি সে। অবাক বিস্ময়ে কিছুটা হা করে তাকিয়ে আছে শুভ। কিছুটা শাঁই শাঁই শব্দের পর মানুষটা বলে উঠল ‘আমাকে কেমন লাগছে শুভ?’ ‘অদ্ভুত! অদ্ভুত সুন্দর!’ ‘আমার আকৃতি তোমার পছন্দ হয়েছে?’ ‘অবশ্যই হয়েছে, খুুউব হয়েছে।’ ‘তোমার পাঁচশ ছাব্বিশটা পছন্দ আর অবাক হওয়ার ডাটা অ্যানালাইসিস করে আমি এভাবে তোমার সামনে আসতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ ‘আমার পাঁচশ ছাব্বিশটা মেমোরি বা পছন্দ তুমি জানলে কিভাবে?’ ‘আমরা তোমাদের চাইতে প্রযুক্তিতে অনেক অনেক গুণ এগিয়ে। তোমার মস্তিষ্কের নিউরন অ্যানালাইসিস করে আমি এগুলো পেয়েছি।’
‘বলো কি! তোমরা মাথার নিউরন অ্যানালাইসিস করতে পারো।’ ‘হ্যাঁ, পারি। শুধু তাই না আমরা কেউ কি চিন্তা করছে বা কি করতে চাইছে তা সাথে সাথে জেনে যেতে পারি।’ ‘অসম্ভব! এসব তুমি কি বলছ?’ ‘যা কিছু সম্ভব আমি শুধু সেগুলোই বলছি।’ ‘তাহলে তো তোমাকে দিয়ে আমরা অনেক ভালো কাজ করাতে পারি?’ ‘তোমার কিছু ভালো কাজে সঙ্গী হওয়ার জন্যই আমি তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’ ‘আমি ভালো কাজে আমার বন্ধুদেরও সাথে নিতে চাই, সেক্ষেত্রে তোমার কোনো মতামত বা অবজারভেশন আছে?’ ‘আছে।’
‘যেমন...’ কিছু সময় কথার শাঁই শাঁই আওয়াজ, তারপর অদ্ভুত সুন্দর ভিনগ্রহী রোবটের মতো যান্ত্রিক গলায় বলল, ‘তোমার বন্ধু... অর্থাৎ টুম্পা, সামি, সোহা, অহন সম্পর্কে কোনো আপত্তি নেই, ... তবে...’ ‘তবে কী?’ ‘বিল্টুকে তুমি এড়িয়ে চলো, কারণ তার কিছু নেগেটিভ চিন্তাধারায় পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ ‘সম্ভাবনার কথা বলে তুমি বিল্টুকে বাদ দিতে বলছ, সম্ভাবনা তো নাও হতে পারে?’ আমরা যা প্রেডিক্ট করি, তা সম্ভাবনা বলি, যদিও এটা নিরানব্বই ভাগ সঠিক হয়।’ হতাশ কণ্ঠে শুভ বলে উঠল, ‘ওহ... নো।’ তারপর কিছু সময় দুজনেই চুপচাপ। এরপর শুভ আস্তে আস্তে বলল, ‘ঠিক আছে... তুমি যখন বলছ বিল্টুকে বাদ রাখব।’ ‘মন খারাপ হলেও এটাই প্রেডিকশন। তুমি বরং বিল্টুকে তোমার বন্ধুর গ্রুপ থেকে বাদ দাও। সেটাই তোমার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
‘ওকে,... ডান।’ এরপরে দুই ঠোঁটের মাঝে আঙুল চেপে কয়েক সেকেন্ড চুপ করে চিন্তা করল শুভ। হঠাৎ উৎফুল্ল হয়ে বলে উঠল, ‘তুমি কি আমার বন্ধুর সামনে দেখা দেবে।’ ‘এখন পর্যন্ত পারমিশন নেই। আবার আমাকে পারমিশন নিতে হবে অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কাছ থেকে।’ ‘প্লিজ তুমি পারমিশন নাও। প্লিজ...প্লিজ।’ তখন সেকেন্ড হড়হড় শব্দ করল মানুষরূপী এলিয়েন, এরপর বলল, ‘পেয়েছি... পারমিশন পেয়েছি।’ ‘তুমি কি আমার ছোট মামাকে আমার বন্ধুদের সাথী হিসেবে নিয়েছ?’ ‘হ্যাঁ নিয়েছি,... তুমি না বললেও নিয়েছি কারণ তোমার মামা তোমার খুউব প্রিয় এবং তিনি একজন ভালো মানুষ। গুড হিউম্যান বিং।’ ‘গুড, ...ভেরি গুড। তোমাকে একটা দাওয়াত দিতে চাই, তুমি রাখবে?’
কপালে নীলাভ আলোটা একটু উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠল ভিনগ্রহের মানুষটি তারপর যান্ত্রিক স্বরে বলল, ‘তুমি একটা পিকনিকের বা চড়ুইভাতির চিন্তা করছ, আমি আসব।’ শুভ কিছু বলতে যাচ্ছিল আর অমনি যন্ত্রের আওয়াজে বলে উঠল, ‘তোমার ছোট মামা আসছেন, আমাকে অদৃশ্য হতে হবে।’ কয়েক সেকেন্ডর মধ্যেই ভিনগ্রহের মানুষটি ধোঁয়ায় কুণ্ডলীতে পরিণত হলো এবং শূন্যে মিলিয়ে গেল। শুভ আর কিছু বলতে চেয়েছিল। কোথায় তারা চড়ুইভাতি করবে, কখন করবে, কে কে থাকবে সবকিছু। কিন্তু বিস্তারিত আলাপের আগেই অদৃশ্য হয়ে গেল ভিনগ্রহী।
এসকে আবদুল্লাহ আল তারেক এর এলিয়েন অমি এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 150.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। alien-omi by SK Abdullah Al Tarekis now available in boiferry for only 150.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.