মানবদেহের সবগুলো অঙ্গের তুলনায় নিশ্চয়ই অন্তর বা হৃদয়ই প্রধান ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। যখন কারো হৃদয় শুদ্ধ হয়ে যায়, শুদ্ধ হয় তার সমগ্র দেহ। আবার যখন সেটা নষ্ট হয়, বিগড়ে যায় দেহের বাকি সর্বাঙ্গও। কারো অন্তর শুদ্ধ ও নিরাপদ হলে সেখানে আল্লাহর মহব্বত জায়গা করে নেয়। এমন বান্দা আল্লাহর পছন্দনীয় কাজে অবিচল থাকতে পারে। তার অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগরুক হয় এবং সে আল্লাহর অপছন্দনীয় কিছু করতে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে। এভাবে বান্দার দেহের সবগুলো অঙ্গ কল্যাণময় হয়ে ওঠে। এমন মানুষ কখনো হারামে লিপ্ত হতে পারে না। এমনকি, হারামে জড়িয়ে পড়ার ভয় থেকে সে সন্দেহপূর্ণ বিষয়াদি থেকেও যোজন দূরে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করে।
কিন্তু বান্দার অন্তর যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে প্রবৃত্তির অনুসরণ তাকে কাবু করে ফেলে। আল্লাহ নারাজ হলে হোক, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে সে মনচাহি জীবনের দিকে ছোটে। এভাবে হৃদয়ের অশুদ্ধি তার বাকি দেহেও ছড়িয়ে পড়ে। বিভ্রান্ত মনোবাঞ্ছার অনুগামিতায় সে ক্রমশই গুনাহের দিকে ধাবিত হয়; অন্যায় ও অমূলক সন্দেহপূর্ণ কাজেকর্মে আপাদমস্তক জড়িয়ে যায়।
বক্ষ্যমাণ বইটিতে আমরা অন্তর পরিশুদ্ধি বিষয়ে নবিজির নির্বাচিত চল্লিশ হাদিস একত্র করার প্রয়াস পেয়েছি। অত্যন্ত যত্ন ও পরিমিতি বজায় রেখে আমরা হাদিসগুলোর ব্যাখ্যা এবং শিক্ষা একত্র করেছি। আশা করি সংশোধনকামী বান্দাদের জন্য হাদিসগুলো আলোকবর্তিকা হবে। আল্লাহ আমাদের নেক কর্ম, চিন্তা ও নিয়ত কবুল করুন!
আশ্রয় কামনা করুন নবিজির মতো
সন্দেহ নেই, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই জগতের সবচে’ পরিপূর্ণ মানুষ। তিনিই রবের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেছেন। তিনিই তাঁর পরিচয় জেনেছেন সর্বোত্তমভাবে। নিশ্চয়ই তিনিই ছিলেন নিয়তে সর্বনিষ্ঠ, শিরক থেকে সর্বময় দূরত্ব ধারণকারী এবং গাইরুল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষিতা ও আশ্রয় কামনা থেকে সবচে’ বেশি সতর্কতা অবলম্বনকারী।
তিনি চাইলে একমাত্র আল্লাহ তাআলার কাছেই চাইতেন। যদি আশ্রয় কামনার প্রয়োজন হতো, তিনি রবের দিকেই দু’হাত তুলে ধরতেন। তিনি ছাড়া কারো সাহায্য চাইতেন না, তাঁর আশ্রয় ব্যতীত কোথাও ধাবিত হতেন না। তিনি ভিন্ন কাউকে ভয় করতেন না, কাউকে ডাকতেন না এবং অন্য কারো কাছে প্রত্যাশা রাখতেন না। কেবল তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে মেহনতে নিতেন, তাঁর প্রতিই শতভাগ ভরসা রাখতেন। তাওয়াক্কুল করতেন কেবলই সেই সত্তার, যিনি পবিত্র, সর্বোচ্চ ও সুমহান। ফলে, মহামহিম সেই রাজাধিরাজ তাঁর রাসুলের জন্য যথেষ্ট হতেন, তার সহযোগী হতেন, একমাত্র বন্ধু ও অভিভাবক হিসেবে হাজির থাকতেন।
এ-গ্রন্থে আমরা নববি ইসতিয়াজা তথা আত্মরক্ষা ও আশ্রয় কামনা বিষয়ক রাসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লামের নির্বাচিত চল্লিশটি হাদিস উল্লেখ করব। যার কোনোটা তার মুখনিসৃত বাণী, কোনোটা-বা তার কর্মস্বভাবের ধারাবাহিক বাস্তবতা। কিছু তিনি তার প্রিয় সাহাবাদের শিখিয়েছেন, কিছু পরবর্তী উম্মতের জন্য নাসিহাহ ও আদর্শ হিসেবে রেখে গেছেন। যেন তারা এর অনুসরণের মাধ্যমে শয়তানের কু-মন্ত্রণা, অন্যায়ের প্রাপ্তি বা অনিষ্টের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারে।
আজ রাজত্ব কার? [রাজত্ব শুধু আল্লাহর]
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার সর্বময় ক্ষমতা, রাজত্ব, কর্তৃত্ব ও আধিপত্য পরিপূর্ণরূপে প্রকাশিত হবে। সেদিন রাজাধিরাজ আল্লাহ তাআলা বান্দাদের ডেকে বলবেন,
‘আজ রাজত্ব কার?’
কেউ প্রত্যুত্তর করার ন্যূনতম সাহস দেখাবে না; আল্লাহই উত্তর দেবেন,
‘প্রবল প্রতাপশালী এক আল্লাহর।’ [সুরা আল-গাফির : ১৬]
শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ এর তাদাব্বুরে হাদিস (১-৩) সিরিজ এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 1350.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Tadabbure Hadith (1-3) Sires by Shaikh Muhammad Salih Al Munajjidis now available in boiferry for only 1350.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.