ক্রেতার পর্যালোচনা

1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা

• পর্যালোচনা লিখেছেন 'Mijun Uddin Masud'

  শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনো কবিতার বই নয়। এটি রবীন্দ্রনাথের একটি কাব‍্যধর্মী রোমান্টিক উপন‍্যাস যেটিতে স্থান পেয়েছে রীতিমতো ১০টি কবিতা। পাশাপাশি বইটিতে সংলগ্ন করা হয়েছে শেষের কবিতা সম্পর্কে বুদ্ধদেব বসুর আলোচনা যা পাঠকের উপন্যাসটিকে সরেজমিনে বুঝার জন্য সাহায্যকারী। রবীন্দ্রনাথের কোনো বইয়ের উপর রিভিউ লেখা কঠিন বিষয়;যেটি এখনো অর্জন করতে পারিনি। তাই বুদ্ধদেব বসুর আলোচনার সাহায্যে পোস্টটি লিখলাম। উপন্যাসের ব‍্যারিস্টার অমিত‌ রোমান্টিক কাব‍্য ভরা এক চরিত্র যার জাঁকালো ভাবে কথা বলা, মেয়েদের সাথে মধুর বাক‍্যালাপ ও মানুষকে কবিতা শোনানোর প্রবণতা আছে। এখানে অমিত ও লাবণ্যর প্রেম কাহিনী বলা হয়েছে। প্রথম দুই পরিচ্ছেদে তার প্রতিক্রিয়া ছিল মুগ্ধকর, তারপর থেকেই প্রকট হয়ে ওঠে তার অন্তঃসারশূন্যতা ও বাগ্মিতার ফাঁপা আওয়াজের নাবালক চরিত্র। লাবণ্য এটা বুঝতে পারে অমিত রোমান্টিক কাব‍্য ভরা এক ব‍্যক্তিত্ব যে সংসারধর্মী নয়;যার সাথে কেবল প্রেম করা যায়।অমিত-কেতকী তথা কেটি এবং লাবণ্য-শোভনলালের বিবাহ দ্বারাই এই কাহিনীর সুন্দর সমাপ্তি হতে পারে সেটা যে প্রথম থেকেই রবীন্দ্রনাথের লক্ষ্য ছিল কাহিনীর ভিতরে তার আভাস আছে। সেটা হলো অমিত-কেতকীর পূর্বের ভালোবাসার সম্পর্ক ও লাবণ্যর প্রতি শোভনলালের ভালোবাসার অনুভূতি। কিন্তু যেটা বেসুরো লাগলো সেটা হচ্ছে তত্ত্বকথার দ্বারা অমিত লাবণ্যর ভালোবাসার বিচ্ছেদকে সমর্থনের চেষ্টা। এই পরিণতিকে সম্পূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলতে হলে যতখানি বিস্তার ও ঘটনাবিন‍্যাস প্রয়োজন, সেটি ছিল অনুপস্থিত। অমিতর একটা উক্তি উল্লেখ করার মতো, "কেতকীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালবাসারই, কিন্তু সে যেন ঘড়ায় তোলা জল। প্রতিদিন তুলব, প্রতিদিন ব‍্যবহার করব। আর লাবণ্যর সঙ্গে আমার যে ভালোবাসা সে রইল দিঘি, সে ঘরে আনবার নয়, আমার মন তাতে সাঁতার দেবে।" উক্তিটির মধ্যে দিয়ে শেষ পর্যন্ত সন্দেহ জাগে যে সে ভালোবাসে নি- না কেতকীকে, না লাবণ্যকে, না অন্য কোনো মেয়েকে। সর্বোপরি কাহিনী বিন্যাস ও ভাষা শৈলী সব মিলিয়ে রবি ঠাকুরের এই উপন্যাসটি সৌন্দর্যের আধার।

  June 30, 2022