পরম করুণাময় আল্লাহতালা মানবমণ্ডলীকে যে সমস্ত মানসিক শক্তি-প্রভাবে যাবতীয় জীবজন্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব এবং প্রাধান্য দান করিয়াছেন, চিন্তা তাহার | প্রধানতম শক্তি। চিন্তাশীলতা প্রভাবে মানবজাতি ক্রমশঃ উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছে। চিন্তা না থাকিলে এক্ষণে আমরা মানব জাতিকে যে সকল উৎকৃষ্ট | গুণে জ্ঞানে বিভূষিত, সুখ সমৃদ্ধি সম্পন্ন এবং ন্যায়পরায়ণ, সুসভ্য ও সমুন্নত অবস্থায় দর্শন করিতেছি, তাহা কদাপি দেখিতে পাইতাম না। মানব একদিন উলঙ্গ অবস্থায় পশুর ন্যায় অরণ্য-ভূমিতে নিতান্ত কদর্য ও হীনভাবে জীবন যাপন করিত। বনজাত ফলমূল এবং বনচর প্রাণীর আমমাংসে উদরপূর্তি করিত; সেই সময় তাহাদের বর্তমান কালের ন্যায় উৎকৃষ্ট আবাসগৃহ, প্রমােদউদ্যান, আত্মরক্ষার উপযােগী অস্ত্রশস্ত্র, সুকর্ষিত শস্যশ্যামল ক্ষেত্র, পণ্য পূর্ণ আপণ, অধ্যয়ন গ্রন্থ, বিদ্যাশালা, ব্যবসায় বাণিজ্য, সমুদ্রগামী পােত, কর্মস্থলী নগরী, সভ্যতা সুনীতি, কর্তব্যাকর্তব্য জ্ঞান, শিল্পকলা প্রভৃতি কিছুই ছিল না। অথবা সে সমস্ত সদবৃত্তি প্রভাবে মনুষ্যসমাজ শনৈঃ শনৈঃ উন্নীত হইতেছে অর্থাৎ ঈশ্বরভক্তি, ধর্মানুরক্তি, দয়া, ক্ষমা, বিনয় প্রভৃতিও ছিল না। ফলতঃ মানুষে এবং পশুতে তকালে আকারগত পার্থক্য ব্যতীত, অপর কোন বিষয়ে প্রভেদ দূষ্ট হইত না।