পরিচ্ছেদ এক ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায় ১৯৪৭ সালের মধ্য আগস্ট বৃটিশ সা¤্রাজ্যবাদ ভারতকে দ্বিখন্ডিত করে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিল এবং এই দুটি রাষ্টকে ডমিনিয়ন স্ট্যাটাস দিয়ে স্বাধীনতা প্রদান করেছিল। একই সঙ্গে বাংলা ও পাঞ্জাব দুটি প্রদেশও দ্বিখন্ডিত হয়েছিল। পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভূক্ত থাকে। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে পশ্চিম পাঞ্জাব পাকিস্তানের এবং পূবর্ পাঞ্জাব ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়। পূর্ববঙ্গ (আজকের বাংলাদেশ) পেল ৪৯,৪০০ বর্গমাইল এলাকা এবং ৩,৯১,০০,০০০ জনগণ যার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ছিল ২,৭৭,০০,০০০ বাকিরা পধ্র ানত হিন্দু, কিছু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। অর্থাৎ পূবর্ পাকিস্তানে মুসলমানরা সংখ্যাগুরু এবং হিন্দুরা সংখ্যালঘু। ভারতের অন্তর্ভূক্ত পশ্চিমবঙ্গের এলাকা ছিল ২৮,০০০ বর্গমাইল যার জনসংখ্যা ছিল ২,১২,০০,০০০। যার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ছিল ৫৬,০০,০০০। হিন্দু মুসলমানের জনসংখ্যার যথাযথ হিসাবের ভিত্তিতেই কিš ‘ বঙ্গভাগ হয়নি। ১৯৪৭-এর জুলাই মাসের গণভোটের মাধ্যমে আসামের সিলেট জেলা পূবর্ পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্ত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে মুসলমান জনসংখ্যা ছিল না বললেই চলে। তবু সেটা পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়। অন্যদিকে খুলনায় হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ (মুসলিম জনসংখ্যা ৪৯.৩ শতাংশ) তবু তা পূবর্ পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ জেলায় মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্তেও¡ পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল। দিনাজপুর, মালদা, নদীয়া এবং যশোর জেলাকেও ভাগ করা হয়েছিল। যশোরের বনগাঁ থানা পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভূক্ত হয়। পুরো ব্যাপারটির মধ্যে বেশ কিছু গোঁজামিল ছিল। বস্তুত এই স্বাধীনতা পূর্ববঙ্গের জন্য একটি বড় রকমের ধোঁকা ছিল। যদিও পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা নিজেরাই ভোট দিয়ে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল। অল্পদিনের মধ্যেই পূবর্ বাংলার মুসলিম জনগণ উপলব্ধি করেছিল যে তারা আরেকটি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছিল।