Loading...

মেমসাহেব (হার্ডকভার)

স্টক:

২৭৫.০০ ২১১.৭৫

"মেমসাহেব"বইটির প্রথমের কিছু কথা: অতি শৈশবে মাকে হারিয়েছি। তারপর অকল্পনীয় দুঃখ-কষ্টে দিন কাটিয়েছি। সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের আর পাঁচজন ছেলেমেয়ের মত স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু সে স্বপ্ন কোনদিনই বাস্তব হয়নি। এরই মধ্যে কলেজে পড়তে পড়তেই হঠাৎ দুর্ঘটনাক্রমে খবরের কাগজের রিপাের্টার হলাম। দুপুর-বিকেল থেকে মাঝরাত্তির পর্যন্ত কাজ করেও প্রথম বছর কানাকড়ি জুটল না। পরের বছর থেকে মাসিক মাইনে’ হল দশ টাকা এবং তাও জুটত আট আনা-এক টাকার কিস্তিতে। একশ' পঁচিশ টাকা মাইনের রিপাের্টারের চাকরির আশায় গণ্যমান্য-বরেণ্য সাংবাদিকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জুটেছে শুধু মিথ্যা আশ্বাস আর অপমান। একজন অতি প্রভাবশালী চীফ রিপাের্টার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবার সময় বলে দিলেন, বামন হয়ে চাঁদে হাত দেবার চেষ্টা করছ কেন? | জীবনে এই দুঃখ-দারিদ্র্য অপমান-তিরস্কারের মরুপ্রান্তরে বিচরণ করতে করতেই হঠাৎ একদিন শ্যামলিমার দেখা পেলাম। আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখে জীবনযুদ্ধে মেতে উঠলাম। তারপর কত কী ঘটে গেল! যা হবার নয়, যা অসম্ভব অকল্পনীয় ছিল, তাই সত্য হল। মাত্র তিনটি পয়সার অভাবে ট্রামের সেকেন্ড ক্লাসে চড়তে পারিনি কতদিন কিন্তু সেই আমিই ঘুরে বেড়ালাম দেশ-দেশান্তরে, এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশ। তারপর হঠাৎ একদিন অতীত দিনের দুঃখ-কষ্ট ত্যাগ-তিতিক্ষা অপমান-তিরস্কার আর প্রেম-প্রীতি স্নেহ-ভালবাসার রসদ সম্বল করেই কলম ধরি। মেম সাহেব’ এই পর্যায়েরই একটি উপন্যাস।
ধরন হার্ডকভার | ১৪৪ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2019-08-01
প্রকাশনী পাঠ্য পুস্তক
ISBN: 9789849432969
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

4
1 reviews

1-2 থেকে 2 পর্যালোচনা

  • পর্যালোচনা লিখেছেন 'fatemaismail keya'
    "অদৃষ্ট যে মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, কি আশ্চর্যভাবে দুটি অপরিচিত মানুষকে নিবিড় করে একসূত্রে বেঁধে দেয়, তা ভাবলে চমকে উঠি।" শুরুর কথাঃ একজন ভালো পাঠকের একটি বৈশিষ্ট্য হল সে নিজে যেমন পড়বে তেমনি অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করবে। শুধু নিজে জানলে হবে না, অন্যকেও জানার সুযোগ করে দিতে হবে। তবেই না লেখকের লিখা স্বার্থক হবে। যদি নিজেকে সাধারন একজন পাঠক হিসেবেও দাবি করতে চাই, তবে আমাদেরও উচিত প্রতিটা বই পড়ে সবাইকে তার সম্পর্কে জানানো। কিন্তু আমি কিংবা আমরা কদাচিৎ তা করে থাকি। অন্যায়, ঘোরতর অন্যায়। আলস্য দোষের আকর। আমরা আলস্য দোষে দুষ্ট। যাহোক, মূল কথায় আসা যাক। উপন্যাস বললেই আমাদের মনে কেমন একটা রোমান্টিক ভাব চলে আসে। সকলেই চায় রোমান্সে ভরপুর উপন্যাস পড়তে কিংবা লিখতে। কিন্তু সব লিখা বা সব চাওয়া হরহামেশাই পূরণ হয় না। কিছু কিছু লিখা হয়ে থাকে জীবন্ত। পাঠকের মনে চিরকালীন দাগ কেটে যায়, ছাপ ফেলে যায়। তেমনি এক উপন্যাস এই মেমসাহেব। কাহিনী সংক্ষেপঃ স্বপ্নাহীন এক তরুণ যার জীবনে কোন উদ্দেশ্য নেই। কোন গন্তব্য নেই। যেন মাঝ নদীতে পাক খেতে থাকা এক মাঝিহীন নৌকা। স্রোত তাকে যেদিক নিয়ে যাবে, সেও ঐ দিকেই যাবে। এমনি এক স্নেহহীন, যত্নহীন রিপোর্টারের জীবন থমকে দাড়ায় কালো, হয়তো কুৎসিত এক রোগাদর্শন নারীর সামনে। যার সম্পদ বলতে আছে গাড় কালো টানা টানা দুটি চোঁখ। সেই চোঁখেতেই মজে যান রিপোর্টার। তার চৈত্রের খরায় ফেঁটে চৌচির হৃদয়ে আকস্মিক বানের জল আসে। তিনি ভেসে যান। পাল তোলে তার নৌকা। ছুটে চলে দুর্বার। স্বপ্নহীন টগবগে যুবককে পথ বাতলে দেয় সেই কালো মেয়ে। তার মেমসাহেব। সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে উপরে উঠতে থাকে রিপোর্টার। আলোকবর্তিকা নিয়ে পথ দেখান মেমসাহেব। সমানতালে চলতে থাকে তাদের প্রণয় উপাখ্যানও। সমাজকে লুকিয়ে, পরিবারকে ভুলিয়ে হঠাৎ করেই হারিয়ে যায় তারা। ব্যাস্ত জীবনে যতটুকু সময় পায় তার সদ্ব্যবহার করতে পিছপা হয়না কেউই। সময় বয়ে যায়। দুর্দান্ত প্রণয় এগিয়ে চলে পরিনতির দিকে। কিন্তু শেষটা? শেষটা কি হবে "মধুরেণ সমাপয়েৎ"? নাকি চিরকালীন দুখী রিপোর্টারের জীবনে আবার ঝড় আসবে? কাল বৈশাখী ঝড়!! উড়িয়ে নিয়ে যাবে তার সুখের স্বপ্ন, ভাসিয়ে দিবে সাজানো সংসার! জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা এই সাহিত্যকে। প্রিয় লাইনঃ "নিদ আয়ে,তো খোয়াব আয়ে খোয়াব আয়ে,তো তুম আয়ে পার তুমহারি ইয়াদ মে ন নিদ আয়ে,ন খোয়ান আয়ে!" (ঘুম এলেই স্বপ্ন আসে, স্বপ্ন এলেই তুমি আসো। কিন্তু যেই তুমি আসো তখন না আসে ঘুম, না আসে স্বপ্ন)। এই লাইনগুলো খুব মনে ধরেছে। ঠিক করেছি কখনো সুযোগ পেলে কলকাতার ওলিতে-গলিতে, পার্কস্ট্রিটে, লিন্ডসে মোড়ে, ময়দানে, দিল্লির গ্রিন রোডে নিশ্চয়ই যাবো।কে জানে! হয়তো মেমসাহেব রা আজও বেঁচে আছেন তাদের শহরে। নামকরণে স্বার্থকতাঃ এই বইটির সম্পূর্ণ প্রেক্ষাপটই ছিলো এক মহিলাকে ঘিরে। তাই এর নাম 'মেমসাহেব' হওয়া স্বার্থক। ব্যক্তিগত মতামতঃ মেমসাহেব একটি ভালোবাসার নাম, ভালোবাসার উপন্যাসের নাম! যারা চিঠি পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য উপন্যাসটি একদমে পড়ে ফেলার মত, আর যাদের কখনো চিঠি লেখা বা পড়ার সৌভাগ্য হয় নি তাদের সুন্দর চিঠি কেমন হতে পারে তা সম্পূর্ণ বই জুড়ে খুঁজে পাবেন। চিঠির আদলে লেখা বইটি যদিও প্রেম পত্র নয়, দোলাবৌদিকে লিখে জানানো ভালোবাসার কথামালা। জীবনে যখন দিন হিসেবে বেঁচে থাকা মুখ্য ভাগ্যক্রমে মেমসাহেবের সাথে দেখা, জীবন বদলে যাওয়ার অনুভূতি আর ভালোবাসার দৃঢ়তা আর সুখের মাঝে চাপা কষ্ট, অসম্ভব ভালো লেগেছে। অনেককাল আগের পড়া ছিল আজ আবার পড়লাম! পুরো বইটি ভালোলাগবে। বইটি পড়া শেষে একধরনের আক্ষেপ থেকে যাবে। আর সেই আক্ষেপ নিয়েই বিড়বিড় করে যাচ্ছি, "জীবনে যে ভালোবাসা পায়, সে আর কিছু পায় না;যে জীবনে আর সব কিছু পায়, সে ভালোবাসা পায় না।" রেটিংঃ ৯/১০
    June 29, 2022
  • পর্যালোচনা লিখেছেন 'Mijun Uddin Masud'
    মেম সাহেব নিমাই ভট্টাচার্যের লেখা একটি প্রেম উপন্যাস।উপন্যাসটি সম্পূর্ণ কিছু চিঠির সমাহার। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছে 'বাচ্চু'। তার জীবনের একাল সেকাল, কিভাবে তার জীবনে মেমসাহেবের আগমন ঘটলো, মেমসাহেব আসার আগে তার জীবন কেমন ছিল,মেমসাহেবের আগমনের পরবর্তী সময়ে তার জীবনে কি অভাবনীয় পরিবর্তন সাধিত হয় সেটাই বাচ্চু জানায় তার দোলাবৌদিকে চিঠিতে লেখার মাধ্যমেই পুরো উপন্যাসটিতে। স্কুল জীবনে বাচ্চুর ভালো লেগেছিল নন্দিনীকে। কলেজ জীবনে ভালো লেগেছিল নীলিমাকে কিন্তু এটা ক্ষণিকের জন্য ছিল। তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন মূহুর্তে এসেছিল মেমসাহেব, ক্ষণিকের ভালোলাগার অতিথি হিসেবে নয় তার জীবনের আমূল পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে।অধ্যাপিকা মেমসাহেবের অনুপ্রেরণা, সাহসের জোরে বাচ্চু সামান্য রিপোর্টার থেকে হয়ে গেলো দেশের অন্যতম জার্নালিস্ট। দুজনের গভীর প্রেমে নতুন স্বপ্নে মত্ত হয়ে অসংখ্য স্বাপ্নিক জিনিস করতে থাকলো, অনেকদিন অনেক বছরের দেখা স্বপ্ন , সাধের সাজানো সংসারের স্বপ্ন পূরণের দিন যখন ঘনিয়ে আসলো তখন হঠাৎ ঘটে গেলো আকস্মিক ঘটনা। মেমসাহেব আর কখনো ফিরলো না বাচ্চুর গ্রিন রোডের পাতানো সংসারের ফ্লাটে, আর কখনো সিঁদুর পরানো হলো না মেমসাহেবের সিঁথিতে। যে মেমসাহেব বাচ্চুকে অন্ধের মত বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করতো, ভালোবাসতো পাগলের মতো সেই মেমসাহেব আর বাচ্চুর কাছে ফিরলো না! দেখতে চাইলো না তার রিপোর্টার কেমন আছে! কী এমন হয়েছিল মেমসাহেবের?সে অনেক বড় ঘটনা,সেটা জানতে উপন্যাসটি পড়তে পারেন। নিজের ভালোবাসা হারানোর কষ্ট, ভালোবাসার মানুষকে হারানোর কষ্ট নিয়ে লেখকের এই সহজ সরল স্বীকারোক্তি, সত্যিই মনকে ছুঁয়ে যায়। অবাক হই ভেবে, এতটা নিঃস্বার্থ হয় ভালোবাসা।ভালোবাসার মানুষটাকে জীবনযুদ্ধে জয়ী করার জন্য এমন সংগ্রাম কোন "মেমসাহেব" ই করতে পারে।আর ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর পরও যে, তাকে কতটা ভালোবাসা যায়, এই বইটি না পড়লে, হয়তো তা অজানা থেকে যেতো । বইটি পড়ে শুধুই চোখের পানি ফেলেছি । যেন ভালোবাসাটা আমারই হারিয়েছে।
    June 29, 2022
নিমাই ভট্টাচার্য
লেখকের জীবনী
নিমাই ভট্টাচার্য (Nimai Bhattacharya)

নিমাই ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এই খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক নিমাই ভট্টাচার্য ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি নিবাস তৎকালীন যশোর জেলার মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শালিখা থানার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। নিমাই ভট্টাচার্য বাংলাদেশের বগুড়া জেলার কালীতলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর কন্যা দীপ্তি ভট্টাচার্যকে বিবাহ করেন। কলকাতার টালিগঞ্জের শাশমল রোডের বাসায় বসবাস করতেন তিনি। শিক্ষাজীবন: নির্মম অদৃষ্ট সাড়ে তিন বছর বয়সে তিনি মাতৃহীন হন। পিতার সীমিত আয়ে অকল্পনীয় দুঃখ কষ্ট অভাব অভিযোগের মধ্যে ভর্তি হলেন কলকাতা কর্পোরেশন ফ্রি স্কুলে। কলকাতা রিপন স্কুলে কিছুদিন তিনি পড়াশুনা করার পর যশোরে ফিরে আসেন। ১৯৪১ সালে যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনে চতুর্থ শেণীতে ভর্তি হন এবং নবম শ্রেণী পর্যন্ত সেখানে পড়াশুনা করেন। তাঁর পিতা সুরেন্দ্রনাথ বাবুও এক সময় সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনের ছাত্র ও পরবর্তীতে শিক্ষক ছিলেন। দেশ বিভাগের পর নিমাই ভট্টাচার্য পিতার সঙ্গে কলকাতায় চলে যান এবং পুনরায় কলকাতায় রিপন স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতা রিপন কলেজে ভর্তি হন এবং রিপন কলেজ থেকে আই. এ পাশ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫২ সালে তিনি বি. এ পাশ করেন। সাংবাদিকতার মাধ্যমেই তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। কিন্তু প্রথম অবস্থায় সেখানেও তিনি ভাগ্যের বিড়ম্বনার স্বীকার হন। নিমাই ভট্টাচার্যের সাহিত্য চিন্তা তাঁর জীবনচর্চার একান্ত অনুগামী হয়ে দেখা দিয়েছে। ১৯৬৩ সালে তাঁর লেখা একটি উপন্যাস কলকাতার সাপ্তাহিক ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং সাহিত্যামোদীদের নিকট ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। পরবর্তীকালে ‘রাজধানী নৈপথ্য’ রিপোর্টার. ভি. আই. পি এবং পার্লামেন্ট স্টীট নামক চারখানি উপন্যাস ঐ একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিমাই ভট্টাচার্য পূর্ণোদ্যমে আরো আরো উপন্যাস লেখা শুরু করেন। ‘মেমসাহেব’, ‘ডিপেস্নাম্যাট’, ‘মিনিবাস’, ‘মাতাল’, ‘ইনকিলাব’, ‘ব্যাচেলার’, ‘ইমনক্যলাণ’, ‘ডিফেন্স’, ‘কলোনী’, ‘প্রবেশ নিষেধ’, ‘কেরানী’, ‘ভায়া ডালহৌসী’, ‘হকার্স কর্নার’, ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘নাচনী’, ‘অ্যাংলো ইন্ডিয়ান’, ‘ডার্লিং’, ‘ম্যাডাম’, ‘ওয়ান আপ-টু-ডাউন’, ‘গোধুলিয়া’, ‘প্রিয়বরেষু’, ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’, ‘মোগল সরাই জংশন’, ‘ইওর অনার’, ‘ককটেল’, ‘অনুরোধের আসর’, ‘যৌবন নিকুঞ্জে’, ‘শেষ পরানির কড়ি’, ‘হরেকৃষ্ণ জুয়েলার্স’, ‘পথের শেষে’ প্রভৃতি প্রকাশিত উপন্যাসগুলি উল্লেখযোগ্য। নিমাই ভট্টাচার্যের লেখা উপন্যাসগুলোতে বিষয়গত বৈচিত্র্যতার ছাপ প্রস্ফূটিত হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট বই