চিঠিগুলাে লিখেছিলাম আমার মেয়ে ইন্দিরাকে, ১৯২৮ সালের গ্রীষ্মকালে । ইন্দিরা তখন হিমালয়ের কোলে মুসৌরী শহরে, আর আমি রয়েছি সমতলভূমিতে। একটি দশ বছরের ছােট্ট মেয়েকে লেখা নিছক ব্যক্তিগত চিঠি এগুলাে। কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধব চিঠিগুলাে পড়ে, তার মধ্যে কিছু উৎকর্ষতার পরিচয় পেয়েছে। ওরা আমাকে এগুলাে বই আকারে প্রকাশ করার কথা বললাে, যাতে এর পাঠকবর্গের সংখ্যা বিস্তৃতি লাভ করে। ওদের পরামর্শের আমি যথেষ্ট মূল্য দিই, কিন্তু জানি না, অন্যান্য ছেলেমেয়েদের এগুলাে কেমন লাগবে। তবু আমি মনে করি, তারা যখন চিঠিগুলাে পড়বে তখন হয়তাে এই পৃথিবীকে তাদের মনে হবে, নানান জাতি দিয়ে গড়া একটি বিশাল পরিবার তাদের নিজেদেরই। যদিও সংশয় আছে পুরােদস্তুর, তবু আশা করবাে, পড়বার সময় সেই সামান্য আনন্দটুকু তারা পাবে- যে আনন্দটুকু লিখতে গিয়ে আমি পেয়েছি। চিঠিগুলাে আচমকাই শেষ করতে হয়েছে। দীর্ঘ গ্রীষ্মের একদিন শেষ হলাে। ইন্দিরাকেও নেমে আসতে হলাে হিমালয়ের কোল থেকে সমতলে। পরের বছর ইন্দিরার না মুসৌরী না আর কোনাে পাহাড়ী জায়গা কোথাও যাওয়া হলাে না। শেষ তিনটি চিঠিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। অন্যান্য চিঠিগুলাের সঙ্গে এই তিনটিকে হয়তাে কিঞ্চিৎ বেমানান বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তবুও এগুলােকে আমি দিয়ে দিলাম, কারণ- এ সম্বন্ধে নতুন করে আরাে কিছু লেখার সুযােগ পাবার সম্ভাবনা আমার খুবই কম। আমি বুঝতে পারছি চিঠিগুলাে ইংরেজীতে হওয়ায় এর আবেদনের ব্যপ্তি সীমিত হয়ে রইলাে। সে ক্রটি সম্পূর্ণ আমার। আমার সে ক্রটি স্থলনের একটি মাত্র উপায়ই আছে, তাহলাে- এগুলাে অনুবাদ করা।