অনেক অনেক দিন আগের কথা। শ্রাবণ মাস। খুব বৃষ্টি। সে বৃষ্টি আর থামে না। এক দুই তিন করে অনেক দিন হয়ে গেল, তবুও বৃষ্টির আর থামার নাম নেই। দিনের পর দিন যায়, রাতের পর রাত আসে । পুকুর বিল নদী ডুবে যায় । রাস্তাঘাটে মানুষ বের হতে পারে না, খেতে-খামারে যেতে পারে না। কালাে মেঘে আকাশ থৈ থৈ করে। দিনদুপুরকে মনে হয় ভর সন্ধে; ডুবে গেল ধান, ডুবে গেল পাট। কদমফুল ফুটতে না ফুটতে বৃষ্টির ঝাপটায় একেবারে কাহিল। পদ্ম ও শাপলা একবার মুখ তােলে তাে বৃষ্টির জল বেড়ে আবার ডুবে যায়। | ঈগল, চিল, কাক, চড়ই, শালিক, পায়রা, চাতক বা ভরত সবাই একেবারে চুপ। সবাই কোনােমতে চোখ বুজে আছে, শীতে ঠক ঠক কাপছে। যে ফিঙে এত চঞ্চল সেও চুপচাপ। দোয়েল তার লেজ নাচানাে ভুলে গেছে। সেজে-গুজে থাকা বাবুই পাখিরা তাদের অমন সুন্দর ঘরের ভেতর থেকেও ভিজে চুপসে গেছে। যে বুনােহাঁস পানিতে থাকে সেও গাছের শাখায় দোয়েলের পাশে বসে পিটপিট করে তাকাচ্ছে। তারে পাশে একটা দাঁড়কাক এসে বসেছে। তারও জান নিয়ে টানাটানি । কাক আর সহ্য করতে না পেরে বুনােহাঁসকে বলল, এই যে হাঁস মশায়, তুমি পানিতে নেমে যাহােক দু'একটা মাছ ধরে এনে আমাদের বাঁচাও।