আহমদ ছফা এর গাভী বিত্তান্ত এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 200.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Gavi brittanto by Ahmed Sofais now available in boiferry for only 200.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
একসাথে কেনেন
আহমদ ছফা এর গাভী বিত্তান্ত এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 200.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Gavi brittanto by Ahmed Sofais now available in boiferry for only 200.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন | হার্ডকভার | ১৩৬ পাতা |
---|---|
প্রথম প্রকাশ | 2016-02-04 |
প্রকাশনী | হাওলাদার প্রকাশনী |
ISBN: | 9789848965948 |
ভাষা | বাংলা |
ক্রেতার পর্যালোচনা
1-1 থেকে 1 পর্যালোচনা
-
পর্যালোচনা লিখেছেন 'Md. Maksudul Hasan Asif'
প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের OXFORD বলা হয়। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? উত্তর: ব্রিটিশরা যখন এদেশ ছেড়ে চলে যায় তখন তারা "FORD" টুকু নিয়ে যায়। রেখে যায় শুধু "OX"। প্রশ্নটি করা হয়েছিল লেখক হুমায়ুন আজাদকে। আজকে আমি হুমায়ুন আজাদের কোনো বই এর রিভিউ দিচ্ছি না। রিভিউ দিচ্ছি আহমদ ছফা (১৯৪৩ - ২০০১) এর "গাভী বিত্তান্ত" বইটির। (যদিও হুমায়ুন আজাদ ও আহমদ ছফার দৃষ্টিভঙ্গি এক প্রকার বিপরীত ই ছিল বলা যায়।এখানে এই একটা ভাবের মিল লক্ষ্য করলাম) কিছু কিছু জিনিস/কাজ সময়ের ঊর্ধ্বে হয়ে থাকে।এমন জিনিস/কাজগুলো পৃথিবীতে কম আছে বললেও বেশি বলা হয়ে যায়। আহমদ ছফার "গাভী বিত্তান্ত" উপন্যাসটি আমার কাছে এমনই লেগেছে।এটা তার সময়কে ছাড়িয়ে এখনো সমান রঙিন এখনো সে বর্তমানকেই প্রতিনিধিত্ব করে। উপন্যাসটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে নিয়ে কিন্তু এটি দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেই প্রাসঙ্গিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষক সম্পর্ক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সম্পর্ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কালো রাজনীতি, জ্ঞানচর্চার খোলসের আড়ালে এর ভেতরকার পেটচর্চা, ল্যাং মারা চর্চার রুপ হাস্যরসাত্মক আবহে লেখক অত্যন্ত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। একটা নব্য দেশের জন্মদাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণকীর্তন আহমদ ছফা ১৯৯৫ সালেই এভাবে তার উপন্যাসে তুলে ধরেছেন। “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টির ছিলো গৌরবময় অতীত। অনেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গোটা দেশের আত্মার সঙ্গে তুলনা করে গর্ববোধ করতেন। … অতীতের গরিমার ভার বইবার ক্ষমতা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। সাম্প্রতিককালে নানা রোগব্যাধি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কাবু করে ফেলেছে। মাছের পচন যেমন মস্তক থেকে শুরু হয়, তেমনি যাবতীয় অসুখের জীবাণু শিক্ষকদের চিন্তা-চেতনায় সুন্দরভাবে স্থান করে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বরজারি, ধনুষ্টংকার নানা রকমের হিষ্টিরিয়া ইত্যাকার নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাধিগুলো শিক্ষকদের ঘায়েল করেছে সব চাইতে বেশি। এখন শিক্ষক সমাজ বলতে কিছু নেই, আছে হলুদ, ডোরাকাটা, বেগুনি এসব দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা দখলের জন্য দলগুলো সম্ভব হলে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতো। মাঠ এবং রাস্তা ছাত্ররা দখল করে রেখেছে বলে শিক্ষকদের লড়াইটা স্নায়ুতে আশ্রয় করে নিয়েছে…” এমনকি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার কদর্য রুপ বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক বলেন “কোমলমতি বালকের যেভাবে চীনা কুড়াল নিয়ে অবলীলায় তাদের বন্ধুদের শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে, সেই দক্ষতা ঠাঁটারি বাজারের পেশাদার কশাইদেরো আয়ত্ত করতে অনেক সময় লাগবে…” ঘটনার বিশ্লেষণ ও হাস্যরসাত্মক উপস্থাপনা পাঠকের মনকে আঘাত করবে, হাসতে বাধ্য করবে, আবার মনকে বিষন্ন করে তুলবে। পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগবে, যেখানে চলবে জ্ঞানের চর্চা, যেখান থেকে আসবে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব আর সেই প্রতিষ্ঠানের নোংরা পরিচালনা, জগন্য দলাদলি থেকে কি বের হচ্ছে প্রকৃত বিবেকবান, ন্যায়বান মানুষ, নাকি মনুষ্যত্বহীন বিবেকবর্জিত মানুষ?? উপন্যাসের চরিত্রগুলোর সাথে আপনি এমন ভাবে রিলেট করতে পারবেন যেনো মনে হবে মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ, নুরুন্নাহার বানু, তবারক আলী, দিলরোবা খানম, আবেদ হোসেন, জনার্দন চক্রবর্তী, মাওলানা আবু তাহের, ড.সাইফুল আলম আপনার খুব চেনা। আপনি আরো রিলেট করতে পারবেন সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, বিপুল পরিমাণ টাকা চাঁদাবাজির সাথে। আহমদ ছফা আজ থেকে ২৫/২৬ বছর আগেই এসব চরিত্রের সাথে পরিচয় করিয়েছেন তার এই উপন্যাসে। আপনার হাসির খোরাক, চিন্তার খোরাক জোগাবে এই বইটি। আপনাকে হাসাতে হাসাতে ভাবনায় ফেলবে, এই ইট পাথরে গড়া এতো সুন্দর অবয়ব,ছাত্র-শিক্ষকে মুখরিত প্রতিষ্ঠান থেকে কি মনুষ্যত্ব হারিয়ে যাচ্ছে?? কাহিনী সংক্ষেপ:রসায়নের অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ অলৌকিক ভাবে দেশের সেরা ও প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচিত হয়েছেন। রসায়ন বিভাগের সুন্দরী শিক্ষিকা দিলরুবা খানমের আকর্ষণে জুনায়েদ ডোরাকাটা দলের শিক্ষক রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। পূর্ববর্তী উপাচার্যের উপর ক্ষোভবশত দিলরুবা খানম তাঁর নারীপ্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জুনায়েদকে উপাচার্য প্যানেলে ঢুকিয়ে দেন। স্বৈরাচারী সরকারের অবাধ্য হবে না বলে রাষ্ট্রপতি জুনায়েদকেই উপাচার্য নিয়োগ দেন। এই উপাচার্যের পদে আসীন হওয়ার পর জুনায়েদের চরিত্রের বিবর্তনকে ঘিরে আবর্তিত হয় উপন্যাসের কাহিনী। ঠিকাদার শেখ তবারক আলী উপাচার্যকে হাতে রাখতে জুনায়েদের মনোবাসনা পূর্ণ করতে একটি দুর্লভজাতের গাভী কিনে দেন এবং ভিসির বাংলোতে শেখ তবারক আলী নিজ জামাতা বুয়েটপাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আবেদ হোসেনকে দিয়ে গোয়ালঘর বানিয়ে দেন। পরবর্তীতে উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সবটাই হয়ে পড়ে গোয়ালঘরকেন্দ্রিক। এই গোয়ালঘরকে রঙ্গমঞ্চ বানিয়ে আহমদ ছফা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দৈন্যদশা এবং শিক্ষক রাজনীতির নোংরা বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন।
June 29, 2022
আহমদ ছফা (Ahmed Sofa)
বাঙালি মুসলিম লেখকদের মধ্যে অন্যতম কীর্তিমান কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফা একাধারে ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, গণবুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ। বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান আহমদ ছফা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামে। নিজ এলাকায় তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়, এবং ১৯৫৭ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হন এবং মাস্টারদা সূর্যসেনের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হলেও সেখানে পড়ালেখা শেষ করেননি, এবং জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের অধীনে পিএইচডি শুরু করলেও তা আর শেষ করা হয়ে ওঠেনি। আহমদ ছফা এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাঠকদের মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বই হিসেবে প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’। আহমদ ছফা এর বই সমূহের মাঝে 'ওঙ্কার', 'অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী', 'বাঙালি মুসলমানের মন', যদ্যপি আমার গুরু', 'গাভী বিত্তান্ত' প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি হলো জার্মান সাহিত্যিক গ্যাটের অমর সাহিত্যকর্ম 'ফাউস্ট' বাংলায় অনুবাদ করা। আহমদ ছফা এর বই সমগ্র একত্রিত করে রচনাবলি আকারে ৯টি খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানবিরোধী এই সাহিত্যিক 'লেখক শিবির পুরস্কার' ও বাংলা একাডেমির ‘সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার’ পেলেও সেগুলো গ্রহণ করেননি। এই পাঠকনন্দিত সাহিত্যিক ২০০১ সালের ২৮ জুলাই ৫৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মরণোত্তর 'একুশে পদকে' ভূষিত হন।