ক্রেতার পর্যালোচনা

1-2 থেকে 2 পর্যালোচনা

• পর্যালোচনা লিখেছেন 'Shahidul Islam'

  আমাদের ক্ষুধা লাগলে আমরা খাই, ক্ষুধা নিবারণ করি। মানব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম একটা হলো ক্ষুধা লাগা এবং নিবারণ করা, খাবার খাওয়া। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই ক্ষুধা শব্দটির বিস্তৃতি কিংবা ব্যাপ্তি ঠিক কতটুকু? ক্ষুধা কি শুধুই খাবার খাওয়া কিংবা পেট ভরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? নাকি এর আরও কোন প্রকার, প্রকৃতি কিংবা ধরন আছে? আসুন উত্তরগুলো একটু খোঁজার চেষ্টা করি। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ 'মিম্বার' ২০২০ সালে 'যুবসমাজের সমস্যা ও সমাধান' শিরোনামে একটি অনলাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে ১২৩৫ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা ৩০ জনকে বিজয়ী নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ী ৩০ জনের লেখাগুলো নিয়ে পরবর্তীতে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয় 'প্রজন্ম ক্ষুধা' নামক একটি বই। প্রিয় পাঠক, উপরে উল্লিখিত ও আলোচিত প্রশ্নগুলোর উত্তর মিলবে 'প্রজন্ম ক্ষুধা' বইটিতে। আসলে ক্ষুধা এমন একটি বিষয়, যেটা সময়মতো পূরণ না হলে যে কারো ক্ষেত্রেই হিতে বিপরীত হতে পারে। সে মানুষ হোক কিংবা পশুপাখি। আমাদের আলোচ্য বইটিতে ঠিক তেমনই কিছু 'ক্ষুধা'র কথা উঠে এসেছে। আর এই ক্ষুধাগুলো প্রধানত আমাদের বর্তমান যুবসমাজ এবং কিশোর-তরুণদের মাঝে বিদ্যমান। তাই বইটির আলোচ্য বিষয়ও তারাই। বইটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, যুবসমাজের এই ক্ষুধা তথা সমস্যাগুলো তাদের মাধ্যমেই জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে এবং তারা এর সমাধানও বাতলে দিয়েছে। ◾বর্তমান যুবসমাজের প্রধান একটি সমস্যা হলো দ্বীন বিমুখ হয়ে যাওয়া‌। আর এর উপকরণ হিসেবে সবচেয়ে বেশী কাজ করে তাদের তথাকথিত 'হালাল রিলেশনশিপ'। এরপরে আছে ভিডিও গেমস, সিনেমা, সিরিয়াল, মিউজিক, এ্যানিমেশন ইত্যাদি। এসব সমস্যা ও এগুলোর সমাধান নিয়ে বইয়ের প্রথমেই চোখে পড়বে 'মগজধোলাই' নামক বেশ বড় একটি লেখা। লেখক প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ক্ষেত্রে রেফারেন্স/ টীকা সংযুক্ত করেছেন। প্রবন্ধটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার এবং উম্মাহর জন্য অনেক প্রয়োজনীয়ও বটে। ◾দ্বীনি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের সমাজে কিছু মানুষ এমনিই 'আড়চোখে' দেখে থাকে। এটা তাদের 'স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য'ই (!) বলতে হবে। সমাজের এমনসব মানুষের হাজারো চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে কীভাবে কয়েকজন যুবক শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা রেখে একটি প্রতিষ্ঠানকে সফলতার চুড়ান্তে উপনীত করেন, সেই গল্প জানা যাবে 'তাজকিয়া একাডেমি' থেকে। গল্পটি দ্বীনি ভাই-বোনদের জন্য বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক হবে। ◾ভিডিও গেমস; বর্তমান কিশোর-তরুণ-যুবাদের কাছে এক স্বপ্নের জগত। যেখানে প্রবেশ করলে তাদের দুনিয়ার আর কোন খোঁজ খবর থাকে না। 'অস্বীকৃত এক মহামারি' নামক প্রবন্ধটিতে ভিডিও গেমসের পরিচয়, ইতিহাস, ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক, সময়, স্বাস্থ্য ও অর্থের অপচয় সহ ভিডিও গেমসের আদ্যপান্ত তুলে ধরা হয়েছে। লেখাটি থেকে যুবসমাজকে আল্লাহ তাআলা উপকৃত হওয়ার তাওফীক দিন। ◾'যুবসমাজ ও সিনেমা' প্রবন্ধটিতে বর্তমান যুবসমাজে সিনেমা মহামারীর আদ্যপান্ত বর্ণিত হয়েছে। যুবসমাজে সিনেমার কুপ্রভাব, ভ্রূণ হত্যা বৃদ্ধি পাওয়া, ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি, পর্ণ আসক্তি, ঈমান বিধ্বংসী সিনেমার গান, পরকীয়া, লিভ টুগেদার ইত্যাদি নৈতিকতা বিবর্জিত বিষয়গুলো প্রবন্ধটি থেকে জানা যাবে। সেই সাথে এর থেকে উত্তরণের উপায়গুলোও গুরুত্ব সহকারে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক, বইটিতে এমন আরও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বেশ কিছু বিষয় সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন–ডিপ্রেশন ও মুক্তির উপায়, শ্রুতি যন্ত্রণা ও গান-বাজনা, অবৈধ প্রেম আসক্তি ও পরিত্রাণের উপায়, যুবসমাজ : হতাশা ও করণীয়, নেশার নীল ছোবল এবং ইসলামের দিশা, চোখের রোগ ও ব্যবস্থাপনাপত্র, সংস্কৃতির ভুল বার্তা, ট্রেন্ডের পালে যুবসমাজ, অনলাইন আসক্তি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এককথায় বইটিতে বর্তমান যুবসমাজের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর শরয়ী ও বাস্তবভিত্তিক সমাধান সহজ ও বোধগম্য ভাবে সংকলিত হয়েছে। বইয়ে আপত্তিজনক কিংবা দৃষ্টিকটু তেমন কিছু চোখে পড়েনি। বইয়ের বাঁধাইটা সবচেয়ে বেশী আকর্ষণীয় লেগেছে। এছাড়া ভাষা বিন্যাস, প্রচ্ছদ, অলংকরণও সুন্দর হয়েছে। বইটির মাধ্যমে উম্মাহর এই যুবসমাজ-যুবপ্রজন্ম তাদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠুক। তাদের মধ্য থেকে আবার জন্ম হোক মুসলিম উম্মাহর আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, খালিদ। প্রজন্মের ক্ষুধাগুলো নৈতিকতা বিবর্জিত, দ্বীন বিমুখ না হয়ে নৈতিকতাপূর্ণ ও দ্বীনমুখি হোক। তাই প্রিয় যুবক, তোমার ক্ষুধাগুলো দ্বারা শয়তানকে খুশি না করে বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সা:) খুশি করো, তাহলেই ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তি অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

  July 25, 2022

• পর্যালোচনা লিখেছেন 'Shahidul Islam'

  আমাদের ক্ষুধা লাগলে আমরা খাই, ক্ষুধা নিবারণ করি। মানব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম একটা হলো ক্ষুধা লাগা এবং নিবারণ করা, খাবার খাওয়া। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই ক্ষুধা শব্দটির বিস্তৃতি কিংবা ব্যাপ্তি ঠিক কতটুকু? ক্ষুধা কি শুধুই খাবার খাওয়া কিংবা পেট ভরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? নাকি এর আরও কোন প্রকার, প্রকৃতি কিংবা ধরন আছে? আসুন উত্তরগুলো একটু খোঁজার চেষ্টা করি। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ 'মিম্বার' ২০২০ সালে 'যুবসমাজের সমস্যা ও সমাধান' শিরোনামে একটি অনলাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে ১২৩৫ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা ৩০ জনকে বিজয়ী নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ী ৩০ জনের লেখাগুলো নিয়ে পরবর্তীতে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয় 'প্রজন্ম ক্ষুধা' নামক একটি বই। প্রিয় পাঠক, উপরে উল্লিখিত ও আলোচিত প্রশ্নগুলোর উত্তর মিলবে 'প্রজন্ম ক্ষুধা' বইটিতে। আসলে ক্ষুধা এমন একটি বিষয়, যেটা সময়মতো পূরণ না হলে যে কারো ক্ষেত্রেই হিতে বিপরীত হতে পারে। সে মানুষ হোক কিংবা পশুপাখি। আমাদের আলোচ্য বইটিতে ঠিক তেমনই কিছু 'ক্ষুধা'র কথা উঠে এসেছে। আর এই ক্ষুধাগুলো প্রধানত আমাদের বর্তমান যুবসমাজ এবং কিশোর-তরুণদের মাঝে বিদ্যমান। তাই বইটির আলোচ্য বিষয়ও তারাই। বইটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, যুবসমাজের এই ক্ষুধা তথা সমস্যাগুলো তাদের মাধ্যমেই জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে এবং তারা এর সমাধানও বাতলে দিয়েছে। বর্তমান যুবসমাজের প্রধান একটি সমস্যা হলো দ্বীন বিমুখ হয়ে যাওয়া‌। আর এর উপকরণ হিসেবে সবচেয়ে বেশী কাজ করে তাদের তথাকথিত 'হালাল রিলেশনশিপ'। এরপরে আছে ভিডিও গেমস, সিনেমা, সিরিয়াল, মিউজিক, এ্যানিমেশন ইত্যাদি। এসব সমস্যা ও এগুলোর সমাধান নিয়ে বইয়ের প্রথমেই চোখে পড়বে 'মগজধোলাই' নামক বেশ বড় একটি লেখা। লেখক প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ক্ষেত্রে রেফারেন্স/ টীকা সংযুক্ত করেছেন। প্রবন্ধটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার এবং উম্মাহর জন্য অনেক প্রয়োজনীয়ও বটে। দ্বীনি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের সমাজে কিছু মানুষ এমনিই 'আড়চোখে' দেখে থাকে। এটা তাদের 'স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য'ই (!) বলতে হবে। সমাজের এমনসব মানুষের হাজারো চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে কীভাবে কয়েকজন যুবক শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা রেখে একটি প্রতিষ্ঠানকে সফলতার চুড়ান্তে উপনীত করেন, সেই গল্প জানা যাবে 'তাজকিয়া একাডেমি' থেকে। গল্পটি দ্বীনি ভাই-বোনদের জন্য বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক হবে। ভিডিও গেমস; বর্তমান কিশোর-তরুণ-যুবাদের কাছে এক স্বপ্নের জগত। যেখানে প্রবেশ করলে তাদের দুনিয়ার আর কোন খোঁজ খবর থাকে না। 'অস্বীকৃত এক মহামারি' নামক প্রবন্ধটিতে ভিডিও গেমসের পরিচয়, ইতিহাস, ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক, সময়, স্বাস্থ্য ও অর্থের অপচয় সহ ভিডিও গেমসের আদ্যপান্ত তুলে ধরা হয়েছে। লেখাটি থেকে যুবসমাজকে আল্লাহ তাআলা উপকৃত হওয়ার তাওফীক দিন। 'যুবসমাজ ও সিনেমা' প্রবন্ধটিতে বর্তমান যুবসমাজে সিনেমা মহামারীর আদ্যপান্ত বর্ণিত হয়েছে। যুবসমাজে সিনেমার কুপ্রভাব, ভ্রূণ হত্যা বৃদ্ধি পাওয়া, ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি, পর্ণ আসক্তি, ঈমান বিধ্বংসী সিনেমার গান, পরকীয়া, লিভ টুগেদার ইত্যাদি নৈতিকতা বিবর্জিত বিষয়গুলো প্রবন্ধটি থেকে জানা যাবে। সেই সাথে এর থেকে উত্তরণের উপায়গুলোও গুরুত্ব সহকারে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক, বইটিতে এমন আরও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বেশ কিছু বিষয় সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন–ডিপ্রেশন ও মুক্তির উপায়, শ্রুতি যন্ত্রণা ও গান-বাজনা, অবৈধ প্রেম আসক্তি ও পরিত্রাণের উপায়, যুবসমাজ : হতাশা ও করণীয়, নেশার নীল ছোবল এবং ইসলামের দিশা, চোখের রোগ ও ব্যবস্থাপনাপত্র, সংস্কৃতির ভুল বার্তা, ট্রেন্ডের পালে যুবসমাজ, অনলাইন আসক্তি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এককথায় বইটিতে বর্তমান যুবসমাজের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর শরয়ী ও বাস্তবভিত্তিক সমাধান সহজ ও বোধগম্য ভাবে সংকলিত হয়েছে। বইয়ে আপত্তিজনক কিংবা দৃষ্টিকটু তেমন কিছু চোখে পড়েনি। বইয়ের বাঁধাইটা সবচেয়ে বেশী আকর্ষণীয় লেগেছে। এছাড়া ভাষা বিন্যাস, প্রচ্ছদ, অলংকরণও সুন্দর হয়েছে। বইটির মাধ্যমে উম্মাহর এই যুবসমাজ-যুবপ্রজন্ম তাদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠুক। তাদের মধ্য থেকে আবার জন্ম হোক মুসলিম উম্মাহর আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, খালিদ। প্রজন্মের ক্ষুধাগুলো নৈতিকতা বিবর্জিত, দ্বীন বিমুখ না হয়ে নৈতিকতাপূর্ণ ও দ্বীনমুখি হোক। তাই প্রিয় যুবক, তোমার ক্ষুধাগুলো দ্বারা শয়তানকে খুশি না করে বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সা:) খুশি করো, তাহলেই ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তি অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

  July 25, 2022