পাঠক শহুরে একঘেয়ে জীবনকে একপাশে সরিয়ে চলুন ঘুরে আসি ভারতের স্বাপদসংকুল কিছু অরন্যে ,এখনো প্রকৃতির আইনই যেখানে শেষ কথা । ভয় নেই,এই যাত্রার আপনাদের পথ প্রদর্শক শিকারি কেনেথ এন্ডারসন।
১৯১০ সালে ভারতের হায়দারবাদের এক স্কটিশ পরিবারে কেনেথ এন্ডারসনের জন্ম।পড়ালেখা করেন সেখানকার বিশপ কটন’স বয়েজ স্কুল ও সেন্ট জোসেফ’স কলেজে । পড়ালেখার দিনগুলোতে মাঝে মাঝেই নানান জাতের সাপ নিয়ে ক্লাস রুমে হাজির হয়ে সবাইকে চমকে দেওয়ার একটা বদভ্যাস ছিল এন্ডারসনের । কিছুদিন ভারতের সেনাবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন্ । পরে যোগ দেন ডাক বিভাগে । এখানে দীর্ঘ সময় চাকরি করে এন্ডারসন । দ্বিতীয় যুদ্ধ চলাকালীন ব্রিটিশ এয়ারক্রাফট ফ্যাক্টরির নকশা ও পরিকল্পনা বিভাগের তত্তত্বাবধায়েকর দায়িত্ব পালন করেন।
এন্ডারসনের বন্দুক চালনায় হাতে খড়ি বাবা ডগলাস এন্ডারসনের কাছে, মাত্র সাত বৎসর বয়সে। ভদ্রলোক খুব একটা অরণ্যপ্রেমিক না হলেও হাঁস,তিতিরসহ ছোট জাতের বন্যপ্রাণী শিকার করে আনন্দ পেতেন। তবে ভারতের জঙ্গল আর এর প্রাণীদের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে এন্ডারসনকে শিখিয়েছেন সে বাইরা। ভারতের পূজারি গোত্রের এই মানুষটি এন্ডারসন প্রথম আবিষ্কার করেন সালেম জেলা চেনার নদীর তীরে একটা গর্তে। ওখানেই বাস করত বাইরা। ভারতের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবার সময় এন্ডারসনের আরেক বিশ্বস্ত সঙ্গী বুড়ো শিকারি রাঙ্গা। অনেক অভিযানেই সে এন্ডারসনের সঙ্গী হয়েছে। নির্ভয়ে পাশে থেকেছে ভয়ঙ্কর মানুষখেকো শিকারের সময়ও্।
মানুষখেকো বাঘ,চিতা আর পাগলা হাতি মিবারি হিসেবে সেসময় গোটা দক্ষিণ ভারতে এক নামে পরিচিত ছিলেন এন্ডারসন। যখনই কোথাও মানুষখেকোর আক্রমনের খবর পেয়েছেন,ছুটে গেছেন। আর এন্ডারসনকে পেয়ে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচত মানুষখেকোর আক্রমনে ভীত, অসহায় মানুষগুলো। বাঘ,চিতাবাঘের চলাফেরা আর আচার আচরণ ছিল তাঁর নখদর্পনে। আর এই অসামান্য জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে প্রায় গোটা চল্লিশেক মানুষখেকো বাঘ আর চিতা মারেন তিনি। শুধূ তাই না দক্ষিন ভারতের বনে বিচরণ করা অন্য সব প্রাণী আর গাছ গাছড়া সম্পর্কেও চমৎকার জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন এন্ডারসন।জঙ্গলের বিভিন্ন গাছ গাছড়ার রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা সম্পর্কেও ছিল তার দারুন জানশোনা। আর এ সব কারণে দক্ষিণ ভারতের অরন্য এলাকার লোকদের কাছে এন্ডারসন হয়ে উঠেছিরেন এক জীবন্ত কিংবদন্তী।
জীবনের শেষ দিকে এসে শিকার একেবারেই ছেড়ে দেন এন্ডারসন, হয়ে যান বন্যপ্রানী সংরক্ষক। তখন বন্ধুক ফেলে ক্যামেরা হাতে বনে-বাদারে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। দক্ষিণ ভারতের বন্য প্রানী রক্ষা আন্দোলনের সূচনাকারীদের একজন কেনেথ এন্ডারসন। ভারতের আরেক নামি শিকারী জিম করবেটের মতো কলম হাতেও এন্ডারসন ছিলেন সাবলীল। জঙ্গল সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান আর নিজের জীবনের রোমাঞ্চকর অবিজ্ঞতা, সব মিলিয়ে চৌকুশ এক বইয়ের মধ্যে দ্য কল অভ ম্যান ইটার ,দিস ইজ দ্য জঙ্গল ,দ্য ব্ল্যাক প্যান্থার অব শিবানী উল্লেখযোগ্য।
এন্ডারসনকে এক শিকার অভিযানে ভন্ড এক সাধু মারা যাওয়ার আগে অভিশাপ দিয়েছিল এন্ডারসন মারা যাবেন কোনো মানুষখেকোর হাতে। এন্ডার সনের মতো জাত শিকারির জন্য এ ধরনের মৃত্যুই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু বহু মানুষখেকোকে পরাজিত করা তুখোড় শিকারির শরীরে বাসা বাধে দুরারোগ্য ক্যান্সার । আর এতেই জীবন প্রদীপ নিভে তাঁর । ১৯৭৪ সালে,৬৪ বছর বয়সে মারা যান দুর্ধর্ষ এই শিকারী।
সূচি
*বনের ডাক
*আম্বালমেরুর অশুভ আত্না
*চিতার প্রতিহিংসা
*ক্ষেপা বাহিনী
কেনেথ এন্ডারসন এর বনের ডাক এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 124.50 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Boner Dak by nullis now available in boiferry for only 124.50 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.