❝মাথা থেকে গলগলিয়ে রক্ত পড়ে যাচ্ছে অভয়ার, চুলের জন্য দেখা যাচ্ছে না উৎসস্থল, তবে মেরুন রং এর শাড়ির আঁচল খানা চেপে ধরায় সেটা চুপসে উঠেছে। শাড়ির আঁচল খানা এখন কালো হয়ে গেলো। কোন প্রতিমার সদ্য চক্ষুদান হলো এমন অবিশ্বাস্য আর স্থির দৃষ্টিতে কোর্ট রুমে ঝুলে থাকা কিছু মাকরসার ঝালে আটকে পড়া ছোট টিকটিকিটার আপ্রাণ বের হয়ে আসার চেষ্টা করা সে দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে রইলো। যেন নিজের সাথে মেলানোর চেষ্টা করছে।
টিকটিকি বের হয়ে এলো, আটকে রইলো লেজ খানা, কিছুক্ষন পর সে লেজ খানা নিজেই কেটে বের হয়ে এলো। অভয়াকে এখন অদ্ভুত রকমের শান্ত দেখাচ্ছে৷ শক্তিশালি সুনামী এসে যেমন করে যত দূর চোখ যায় ততদূরে পানির সমুদ্র বানিয়ে সব জমি অদৃশ্য করে দিন দুয়েকের জন্য স্থির হয়ে থাকে। ঠিক তেমন লাগছে।
নিষ্প্রাণ কোন আজ্ঞাবহ দাসের মতো তার হাত টা যেন চলছে। সে হাতের কোন নিজস্বতা নেই৷ ডির্ভোস পেপারে সাইন করে ফেলল অভয়া।
ছয় মাস আগে যখন ওরা ডির্ভোস ফাইল করেছিলো, তখন অভয়া ছিলো শখের বসে গড়া কোন অর্পূব পুতুলের গড়ন। তার চেহেরায় ছিলো হেরে যাওয়া সৈনিকের তীব্র দহন, কন্ঠে ছিলো মুক্তির আহবান, চোখে ছিলো শেকল ভাঙার আকুতি। সে বার ওর স্বামী জয়ন্তুর কান্না দেখে বড্ড অবাক হয়েছিল বিচারক । তাকিয়ে ছিলো কোর্টে থাকা প্রতিটা মানুষ। তার পায়ে পরে মেয়েকে ভিক্ষা চাওয়া দৃশ্যটা তাকেও নাড়া দিয়েছিলো। সবার মতো তার মনের জানলায় একটা প্রশ্ন এসে নাড়া দিয়ে যাচ্ছিলো।
-কেমন মেয়ে? কেন ডির্ভোস চায়?
অভয়া ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলো। ও শুধু বলতে পেরেছিলো,
- সব ওর অভিনয়। ও পারলে আমাকে আর আমার মেয়েকে এখন মেরে ফেলবে৷ ও স্বাভাবিক নয়, তাও ছয় টা বছর মিথ্যার সাথে,মিথ্যা অনুভূতি আর বিশ্বাস কে অন্ধের মতো ধারণ করেছিলাম। বৃথা চেষ্টা করেছিলাম তাকে স্বামী বানাতে, পিতা বানাতে, সন্তান বানাতে কারো। ও স্বাভাবিক নয়।
সে বশ না মানা সাপের মতো, সুযোগ পেলেই আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরে নিশ্বাস ও গিলে খাবে।
আজ অভয়ার কানের ঠিক পাশ ঘেঁষে চিকন সুরে বইতে থাকা এই লাল স্রোত জানিয়ে দিচ্ছে, কি অসুখ নিয়ে সে ঘর বেঁধেছিলো। ❞
গল্পটা এক সাধারণ মধ্যবিত্ত এক ডির্ভোসী মায়ের গল্প, যেখানে ওকে মেয়ের জন্য মা ছেড়ে আবার মেয়ে হয়ে উঠতে হয়েছে। ভীড় বাস ঠেলে চাকরির খোঁজে বের হতে হয়, পদে পদে থাকা বিপদ আর হায়নার দলে নিজেকে বাচিঁয়ে অভয়া আবার ভালোবাসতে চায় অফিসের বস নীহার কে৷ যে নীহার অভয়ার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব খুজে পায়। যে ক্ষমতাধারী শিল্পপতি নীহারকে একেবারে সাধারণ ভাবে খুঁজে নেয় অভয়া।যার জীবন ও আছে ব্যার্থতায় আর রহস্যে ঘেরা,যা একে একে অভয়ার কাছে ধরা দেয়।
এক ক্ষমতাধারী মাফিয়ার ছেলে কৌশিক, অভয়ার কারণে কলেজ জীবনে যাকে গণ পিটুনি খেতে হয়েছিল। নীহার কে খুন করতে এসে সে অনেক বছর পর আবার অভয়াকে খুঁজে পায়। প্রতিশোধের আগুন চাপা পড়ে অভয়াকে ভালোবাসার ইচ্ছের কাছে৷
কৌশিক কে ছাড়া কিছু বুঝে না অভয়ার স্কুল জীবনের বেস্ট ফ্রেন্ড রাবেয়া।
রাবেয়া কে নিয়ে অনেক দূরে হারাতে চায় রহস্যময়ী চরিত্রের কৌশিকের বুদ্ধিমান বন্ধু বিত্ত।
অভয়ার উপর বদ নজর পড়েছে নীহারের ভাই নরেশের ও। এইদিকে প্রাক্তন স্বামী জয়ন্তুর জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে উঠে অভয়া। যে আবার অভয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় সে নরক পুরী তে।
শেষ অবধি কে পেলো অভয়াকে?
সেটা জানার জন্য পড়তে হবে অভয়াচারিনী প্রথম পার্ট।
কি হবে এত গুলো ট্রাইগেল প্রেমের?
কীভাবে অভয়া থেকে অভয়াচারিনী হয়ে উঠবে সবাইকে হারিয়ে অভয়া জানতে পারবেন, অভয়াচারিনীর দ্বিতীয় পার্ট। যেটাও দ্রুত আসবে আপনাদের ভালোবাসা পেলে।
দোলনা বড়ুয়া তৃষা এর অভয়াচারিনী এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 1225.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। avoyacharini by Dolna Barua Trishais now available in boiferry for only 1225.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.