ইয়ুভাল নোয়াহ হারারি একজন ইসরায়েলি ইতিহাসবেত্তা, অধ্যাপক এবং লেখক। ১৯৭৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম হাইফা জেলার কিরইয়াত আতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি ধর্মনিরপেক্ষ ইহুদি পরিবারে বেড়ে ওঠেন। হারারি ১৯৯৮ সালে জেরুজালেম হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মধ্যযুগীয় এবং সামরিক ইতিহাস বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য ২০০২ সালে অধ্যাপক স্টিভেন জে. গানের অধীনে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমবায়ী, জেসাস কলেজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে, ২০০৫ সালে ইয়াদ হানাদিভ ফেলোশিপে ইতিহাস নিয়ে পোস্টডক সম্পন্ন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপনা করছেন। ইতিহাস তার অন্যতম প্রিয় বিষয়। তাই পড়াশোনা থেকে লেখালেখির ওপরও ইতিহাসের প্রভাব বিদ্যমান। ২০১৪ সালে প্রকাশিত, বেস্টসেলার খ্যাত ‘স্যাপিয়েন্সঃ এ ব্রিফ হিস্টোরি অব হিউম্যানকাইন্ড’ হারারির একটি কালজয়ী রচনা। এখানে তিনি মানব ইতিহাসের সূচনা থেকে আজকের বিশ্বে পদার্পণের ইতিহাস, অর্থাৎ মানবজাতির বিবর্তন তুলে ধরেছেন জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে। গ্রন্থটি শুধু তথ্য-উপাত্তে ঠাসা নয়, এর তত্ত্বগুলো পাঠককে ভাবনার খোরাক দেবে। এই বইটি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে প্রায় ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়। এছাড়া, ইউভ্যাল নোয়াহ হারারি এর বই সমূহ হলো, হোমো ডিউস: এ ব্রিফ হিস্টোরি অব টুমরো, টুয়েন্টি ওয়ান লেসনস ফর দ্য টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি, দ্য আল্টিমেট এক্সপেরিয়েন্স: ব্যাটেলফিল্ড রিভালেশন্স এন্ড দ্য মেকিং অব মডার্ন ওয়ার কালচার, স্পেশাল ওপারেশনস ইন দ্য এজ অব শিভারি, রেনেসাঁ মিলিটারি মেমোয়ার্স: ওয়ার, হিস্ট্রি অ্যান্ড আইডেন্টিটি ইত্যাদি। তার বিখ্যাত বইগুলো বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ইউভ্যাল নোয়াহ হারারির বাংলা অনুবাদ বইগুলো বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। বই ছাড়াও তার কিছু গবেষণাপত্র, জার্নালসহ নানা আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। ইউভ্যালি নোয়া হারারি তার রচনার সৃজনশীলতা এবং মৌলিকত্ব-এর জন্য ২০০৯ এবং ২০১১ সালে দুবার ‘পোলোন্সকি পুরস্কার’ লাভ করেছেন। সামরিক ইতিহাসের ওপর অসাধারণ আর্টিকেল উপস্থানের জন্য ২০১১ সালে সোসাইটি ফর মিলিটারি হিস্টোরির পক্ষ থেকে অর্জন করেছেন ‘মনকাডো পুরস্কার’। ২০১২ সালে তিনি ‘তরুণ ইসরায়েলি একাডেমি অব সায়েন্স’ নির্বাচিত হন। বেস্টসেলার লেখক হারারি জেরুজালেমের কাছে মেসিলাট জিয়ন, কৃষিভিত্তিক কমিউনিটি মোশাভ অঞ্চলে বসবাস করছেন।