মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহহাব ছিলেন হিজরি ১২ শতক ও ১৮ খ্রিষ্টাব্দের একজন সংস্কারক। মুসলিম উম্মাহ যখন শিরক ও বিদআতের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিল প্রকটভাবে, তিনি তখন আলো হাতে দাঁড়িয়েছিলেন সেই অন্ধকার দূর করার নিমিত্তে। সৌদি আরবের বর্তমান রাজধানী রিয়াদ থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট শহর উওয়াইনাহতে তামিমি গোত্রের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ পরিবারে সম্মানিত পিতার তত্ত্বাবধানেই শুরু হয় তার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন। বয়স দশ বছর হবার আগেই মুখস্থ করে নেন কুরআন মাজিদ। পরবর্তী সময়ে অধিকতর ও উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য তিনি মাক্কা, মাদিনা ও বসরার ধর্মীয় জ্ঞানের কেন্দ্রগুলোতে গমন করেন। ১১৫২ হিজরির দিকে তিনি আবার ফিরে আসেন নিজ শহরে। অবশ্য ইতোমধ্যেই তিনি মানুষকে কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা ও সুন্নাহর শুদ্ধ চর্চার আলোকে নির্মিত বিশুদ্ধ ইসলামের দিকে আহ্বানের সংস্কারমূলক কাজ শুরু করে দেন। তিনি কোনো শাসন কর্তৃত্ব লাভের চেষ্টা করতেন না। তার আন্দোলন ছিল কেবলই ধর্মীয় সংস্কার। ১১৫৭ হিজরি সনের দিকে তিনি সংস্কার আন্দোলনে সহযোগিতার জন্য মুহাম্মাদ ইবনু সউদের সঙ্গে একটি মৈত্রিচুক্তি করেন। আর এই ইবনু সউদের বংশধরদের মাধ্যমেই শাইখের মৃত্যুর প্রায় একশ বছর পর সৌদি আরব নামের এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১২০৬ হিজরি সনে এই মহান সংস্কারক মৃত্যুবরণ করেন। তার সন্তান, বংশধর ও ছাত্রদের মধ্য থেকে অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ পরবর্তী সময়ে এই সংস্কার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান। কিতাবুত তাওহীদ তার রচনাসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ও এক অসাধারণ কৃতি। পৃথিবীর অনেক ভাষায় এই বই অনুবাদ হয়েছে।