ভূমিকা
ড. আবদুল লতিফ মাসুম এর ‘জিয়াউর রহমান : আচ্ছাদিত ইতিহাস’ বইটির পান্ডুলিপি পড়েছি। ভালো লেগেছে।একজন জাতীয় নেতার জীবন এবং কর্ম
কান্ডের আলোচনা-পর্যালোচনা সমৃদ্ধ ছোট্ট এই বইটি। জিয়ার শাসনকাল সম্পর্কে লেখকের আরো কয়েকটি লেখা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সব লেখাতেই লেখকের পরিচয় মিলেছে একজন বস্তুনিষ্ঠ গবেষকের, একজন উষ্ণহৃদয় তথ্য সংগ্রাহক ও বিশ্লেষকের। এ ছোট বইটিকেও তিনি জিয়ার ক্ষমতারোহন, জীবনী, তাঁর নির্মম হত্যাকান্ডের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন। এ ধরনের বই এ সমাজের তরুণ-তরুণীদের সামনে জিয়াকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
জিয়া তো শুধুমাত্র একটা নাম নয়। জিয়া এ জাতির ইতিহাসের উজ্জ্বল এক অধ্যায়। একটা প্রতিষ্ঠান । একটা বিশ্বাস। এক ধরনের জীবন্ত প্রত্যয়। দেশপ্রেমের একটা উজ্জ্বল অনুভূতির নাম জিয়া। দৃঢ় সংকল্পের অভিব্যক্তি নাম। জাতীয় চেতনা এবং জাতীয় ঐক্যের নাম জিয়া। জাতীয় প্রবৃদ্ধির অন্য নাম জিয়া। তাঁকে ভুলবে কার সাধ্য? আধুনিক বাংলাদেশের যে দিকে তাকানো যায়, চোখে পড়বে জিয়ার প্রতিকৃতি। প্রায় সব খানেই।
বাংলার মাটি বড়ো উর্বর। এ মাটিতে যেমন ফলে সোনালী ফসল, অনায়াসে, তেমনি এ মাটি লাভ করেছে বহু জ্ঞানী-গুণীদের স্পর্শ। বহু কৃতি সন্তানের জননী বাংলাদেশ। জিয়াউর রহমান এ মাটির শ্রেষ্ঠতম সন্তানদের একজন। এমন ব্যক্তির সম্পর্কে ড. মাসুমের আগ্রহ খুবই স্বাভাবিক। এ প্রচেষ্টার জন্যে তিনি ধন্যবাদের পাত্র। উনিশ শ, একাত্তরের মার্চের শেষ দিকে দৃষ্টি দিন। জনতার সংগ্রামী চেতনা এবং গণদাবির অপ্রতিরোধ্য গতির সামনে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতার চার দেয়ালে বন্দী, ২৫শে মার্চের কালরা্ত্রিতে যখন সমগ্র জাতি সম্বিতহীন, দিক নির্দেশনাহীন, শোক বিহবল, কি করা প্রয়োজন সে সংকটময় মুহূর্তে, এ সম্পর্কে যখন কোন দিক নির্দেশনা নেই, জিয়ার নেতৃত্বের পরশমনির স্পর্শেই তখন ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহ লাভ করেছিল গতি। জাতি পেয়েছিল নতুন উপলব্ধি। নতুন চেতনা। ‘আমি জিয় বলছি’-এ বাণী লক্ষ বুকে জাগিয়ে ছিল নতুন আশা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সকলকে করেছিল উদ্দীপ্ত। চারদিকের জমাটবাঁধা অন্ধকারের মধ্যে তাই হয়েছিল নতুন আশার দীপশিখা। ঐ মুহূর্তে জাতি এর চেয়ে বেশি কিছু চায়নি। আশাও করেনি।
শুধু তাই নয়, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি। স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে যে বন্ধুর পথ তা-ও তিনি দেখালেন। মুক্তিপাগল জনগণতে সঙ্ঘবদ্ধ করে অগ্রসর হলেন। ২৫শে মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত কালে অন্যকোন কন্ঠস্বর জাতি শোনেনি। পায়নি অন্য কোন দিক থেকে কোন কর্তৃত্বব্যঞ্জক ঘোষণা বা নির্দেশ। জেড ফোর্সের সংগঠক ও নির্দেশক হিসেবে পরবর্তী পর্যায়েও তাঁর ভূমিকা এ জাতি মনে রেখেছে কৃতজ্ঞতার সাথে। তিনি ৭ নভেম্বরের সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় শামিল হলেন ১৯৭৫ সালে। ক্ষমতাসীন হয়ে বাংলাদেশ রাজনীতির গতিপ্রকৃতির আমূল পরিবর্তন আনলেন। রাজনীতি যে জনকল্যাণকর এক কর্ম-উদ্যোগ এবং সুপরিকল্পিতভাবে যে এ কর্মকান্ডের যথার্থ প্রয়োগ প্রয়োজন, তা-ও এ জাতি জানার সুয়োগ লাভ করে। এ জাতির অধাত্মসত্তা মিশে রয়েছে জিয়ার আদর্শের সাথে, অত্যন্ত অন্তরঙ্গভাবে। এমনি এক মহান ব্যক্তিত্বের সাথে ড. মাসুম পরিচিতি করতে চান সাধারণ পাঠককে, ছোট্ট এ বইটির মাধ্যমে। তাঁর প্রচেষ্টা সফল হোক এই আমার কামনা।
প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ
প্রাক্তন ভাইজ চেয়ানম্যান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সূচিপত্র
১. নভেম্বর ‘৭৫-এর আচ্ছাদিত ইতিহাস
২. সিপাহী বিপ্লব : পুরোনো তত্ত্ব ও নতুন তথ্য
৩. শাসনকাল : বেসামরিকীকরণ প্রক্রিয়া
৪. ব্যক্তিজীবন : কিছু অজানা কথা
৫. জিয়া হত্যাকান্ড : একটি গভীরতর অনুসন্ধান
৬. জিয়াউর রহমান : নেতৃত্ব কর্মকৌশল ও জাতীয় স্বার্থ
পরিশিষ্ট
ক. জিয়াউর রহমান-সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য
খ. প্রথম বেতার ভাষণ
গ. সিপাহী বিপ্লবের ১২ দফা দাবি
ঘ. ১৯ দফা কর্মসূচি
ড. আবদুল লতিফ মাসুম এর জিয়াউর রহমান, আচ্ছাদিত ইতিহাস এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 48.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Ziaur Rahman Achadito Itihas by Dr. Abdul Latif Masumis now available in boiferry for only 48.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.