ভাষার উৎপত্তির কথা বলতে গিয়ে একটা গল্প মনে পড়ল। তখন সমস্ত প্রাণী গড়া হয়ে গিয়েছে। বিধাতাপুরুষ অনেকদিন পরিশ্রম করে এতো প্রাণী সৃষ্টি করার পর স্বভাবতই একটু ক্লান্ত। তিনি বিশ্রাম করার জন্যে নিজেরই সৃষ্ট * একটি চমৎকার বাগানে প্রবেশ করেছেন, এমন সময় দেখেন দূরে তার নিজেরই গড়া প্রাণীরা সবাই এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেখে কৌতুহল হল; বল্লেন, তােমরা দাড়িয়ে কেন, কি চাও। এ কেউ উত্তর দিতে পারে না, কারণ তাদের দেহই গড়া হয়েছে মুখে ভাষা তাে দেওয়া হয়নি। মূক প্রাণীগুলি এ ওর মুখের দিকে তাকায়, কেউ কিছুই বলতে পারে বাঘ, সিংহ, হাতি, ঘােড়া, পাখি, মাছ, প্রজাপতি, মানুষ—সবাই আছে সেই দলে। কিন্তু বিধাতাপুৰুষ লক্ষ্য করলেন বাঘ আছে বাঘের মনে, সিংহ আছে নিজের মত; হাতি, ঘােড়া, গরু, ছাগল সবাই আলাদা আলাদা—কেবল মানুষ আছে একসঙ্গে দল বেঁধে, নারী, পুরুষ, শিশু সবাই মিলে। বিধাতাপুরুষ দিব্যদৃষ্টিতে বুঝলেন বাঘ, সিংহ, শেয়াল, কুকুর, বিড়াল-মাংসভােজী প্রাণী হলেও, দল বেঁধে থাকতে পারবে না, তেমনি পারবে না হাতি, ঘােড়া, ছাগল, খরগােস একসঙ্গে থাকতে; যদিও এরা তৃণভােজী। এদের দল বা পাল হবে কিন্তু সমাজ কোনওদিন হবে না। কিন্তু অনেক মানুষ, অনেক মানুষী, অনেক শিশু একসঙ্গে আছে, একসঙ্গে থাকছে এবং সবাই সবাইকে মেনে চলছে।