মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের শিকড়। প্রায় নয়মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পিশাচ পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে দেশটাকে মুক্ত করে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে প্রতিষ্ঠিত করে। আর এ পর্যায়ে পৌছতে সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রায় ২৪টি বছর। এ সগ্রামের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বহু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে; কবি সাহিত্যিকেরা বহু কবিতা, গল্প ও উপন্যাস এবং অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বই রচনা করেছেন; বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র' রচিত হয়েছে। কিন্তু কোনোটিতেই পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চিত্র পাওয়া যায় না। একটি উপন্যাস বা গল্পে তা সম্ভবও নয়। পুরো মুক্তিযুদ্ধকে একটি উপন্যাসে আনতে গেলে তা মহা-উপন্যাস হয়ে যাবে। তবে আমার মতে তা-ই করা উচিত। কিন্তু রচনা করবে কে? আমি ইতোপূর্বে দুটি উপন্যাস ও বেশ কিছু গল্প রচনা করেছি। তবে সেগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের খণ্ডিত চিত্রই দেখানোর প্রয়াস চালানো হয়েছে। ২০০৪ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ-এর জোছনা ও জননীর গল্প বইটি পড়ে এ উপন্যাসটি লিখতে মনের ভেতর থেকে তাগিদ অনুভব করি। এ উপন্যাসের অধিকাংশ ঘটনা ও যুদ্ধ সত্য, তবে বর্ণনা কাল্পনিক। বইটি প্রকাশের জন্য পাণ্ডুলিপি দুই বছর এক প্রকাশকের কাছে ছিল। ২০০৫ সালে পাণ্ডুলিপিটি বাংলা একাডেমীতে প্রেরণ করা হলে জানানো হয় যে, কারো স্মৃতিকথা বাংলা একাডেমী প্রকাশ করে না। ২০০৬ সালে সাপ্তাহিক একাত্তর-এর ঈদ সংখ্যার জন্য উপন্যাস আহ্বান করা হলে তা প্রেরণ করি। উপন্যাসটি পেয়েই একাত্তর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জনাব মারুফ রায়হান মোবাইলে আমার সাথে কথা বলেন এবং নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখেন। পরবর্তীতে এটি পরিবর্তিত নামেই সংক্ষিপ্ত আকারে একাত্তর-এ প্রকাশিত হয়। একাত্তর-এ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে বইটি প্রকাশের আগ্রহ প্রকাশ করে।