ইউটোপিয়া একটি সমাজ সমস্যামূলক উপন্যাস। উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে জারিফ আহমেদ। তিনি জুম টেক্সটাইলের জিএম পদে চাকরি করেন। অন্যায়,অত্যাচার,অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার জারিফ শ্রমিকদের শোষণ বঞ্চনা সহ্য করতে পারে না। বছরের পর বছর শ্রমিক তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। এমডির এমন নিষ্ঠুর আচরণ অমানবিকতা জারিফ আহমেদকে ভাবিয়ে তোলে।শ্রমিক আন্দোলন প্রবল হয়ে উঠলে এমডি শ্রমিক নেতাকে খুন করে।বাকি শ্রমিকদেরও ছাঁটাই করে।তাদের জীবনের ডিটেইলস জারিফের মর্মমূলে আঘাত করে। এমডি থেমে নেই।এজিএম তুর্কিকে রেপ করে। দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে জারিফ। চাকরির উপর নির্ভরতা পরিহার করে মেয়েটিকে বাঁচানো জরুরি মনে করে সে। সে তাকে বাঁচায়। কিন্তু তুর্কি তাকে কেন বিশ্বাস করবে? তার সাথে যায় না সে। অবশেষে জারিফ তাকে বিয়ে করে। আকাশের তারার মতো সমাজের আছে শত শত চোখ যা তাকে বিদ্রুপ করবে। তাই তাকে রক্ষা করে। মাতৃহীন একজন শ্রমজীবী শিশু কস্তুর প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে উঠা অন্যদিকে সন্তানহারা মায়ের নীরব ক্রুন্দন আর অচলাবস্থায় বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয়গ্রহণ উপন্যাসকে গতিদান করেছে। সমাজের পতিত,নিস্ব,অসহায় পথশিশু,বেদেবেদেনী,ডিভোর্সী,হিজড়া ও পঙ্গুর জীবনের অন্তর্দহনক্রিয়া এমনকি চারটি ফার্স্টক্লাস পাওয়া ছেলে চাকরি না পেয়ে রেললাইনে আত্মহত্যা করতে যায়। সমাজের সকল সুবিধাবঞ্চিত অথচ অস্তিত্বসন্ধানী এসব মানুষের আর্তচিৎকার বিশেষ পারঙ্গমতায় উপন্যাসে স্থান পেয়েছে শুধু কঠিন বাস্তবতাই নয়,উপন্যাসে রস সঞ্চার করেছে জারিফ তুর্কির দাম্পত্যজীবনের বিশুদ্ধ ভালোবাসার আশঙ্কা থেকে আস্থা ফিরে পাওয়া। ডিভোর্সী রোজার উর্ধ্বমুখী সবুজ পাহাড়ের মতো নিঃসঙ্গতাকে রাকিন গভীর ভালোবাসা দিয়ে দূর করে।শিক্ষকের মেয়ে ক্যাট ভালোবাসে বস্তির ছেলে কস্তুকে।কস্তু সে ভালোবাসায় ধরা দিতে পারে না।