রাষ্ট্র স্বাধীন ও সার্বভৌম হলেও রাষ্ট্রবাসী যদি বিদ্যার বিত্তে ঋদ্ধ না হয়, সৌন্দর্যপিপাসু না হয়, সুরুচির ও সৌন্দর্যের নতুন চিন্তা-চেতনা নিয়ে সচেতন আত্ম অনুশীলনে আগ্রহী না হয়, তাহলে সে-জাতির রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয় রােধ করা সম্ভব হয় না। সংস্কৃতি সুষ্ঠু ও নির্ভেজাল হলে রাজনীতি ও দুর্নীতি, অসততা, অমানবিক বা দানবিক নিষ্ঠুরতা ও বঞ্চনামুক্ত থাকবে, রাজনীতি কার্যত সেবা ও কল্যাণমূলক হলেই সাধারণ জনগণ উপকৃত হয়। জনজীবনের সর্বস্তরে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষই রাজনীতিকের জীবনে কর্মোকর্য সাধনের সােপান। শিক্ষা-সংস্কৃতিরাজনীতি আর জনজীবন জীবিকা কার্যত অঙ্গাঙ্গী সম্পর্কের ও সম্বন্ধের, সংস্কৃতির উৎস ও ভিত্তি হবে মানবতাঞ্জাত সুরুচি, সৌন্দর্যবুদ্ধি ও সৌজন্য বােধ। রাজনীতি হবে গণসেবামুখী ও মানবকল্যাপ্রসূ। কিন্তু এমনটা এদেশে কবে হবে এই জিজ্ঞাসা সন্‌জীদা খাতুনের। যুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চেতনার টানাপােড়েন, শঙ্কা ও সম্ভাবনা নিয়ে কিছু নিবন্ধের সমষ্টি এই বই। তধ্যে জাতীয় সঙ্গীতের শুরু এবং সুর নিয়ে চিত্তাকর্ষক নিবন্ধটিও অন্তর্ভুক্ত। ভিতরের শ সম্পর্কে সচেতন হয়ে নিরন্তর সংগ্রামে ব্রতী হবার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি সেই কবে কিন্তু এর আবেদন যেন বর্তমান বাস্তবতায় এখনও অটুট এবং প্রাসঙ্গিক। আসংগঠনের সাধনাই আমাদের সংগ্রামের একমাত্র পথ। যারা শিক্ষা-সংস্কৃতির লােক, তাদের গঠনমূলক সাধনার প্রয়ােজনটাই বেশি। ঋদেশ সমাজ সংস্কৃতি বিষয়ক নানামুখী নিবন্ধে সন্‌জীদা খাতুন এসব বলেছেন।