মধ্যরাতে ভীষণ অস্বস্তি নিয়ে ঘুম ভাঙে দিশার। তীব্র একটি দুর্গন্ধ ঢুকে পড়েছে ঘরে। বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে তাদের বাড়িটির এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। ঢাকা শহরের সমস্ত বর্জ্য সরাসরি এসে পড়ে এই নদীতে। বুড়িগঙ্গাকে সরকারিভাবে পরিত্যক্ত নদী হিসেবে ঘােষণার দশ বছরের মাথায় পরিকল্পনাবিদেরা এটিকে পয়ােনিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার করার প্রস্তাব করেন। সেইমতাে কাজ। বুড়িগঙ্গার এ-পাড়ে দরিদ্র পরিবারের জন্য তৈরি করা সরকারি বাসস্থানে দিশাদের বাড়ি। সীমিত নাগরিক সুবিধা নিয়ে জীবন ধারণ করছে এখানকার প্রতিটি পরিবার। সমস্ত অসুবিধা মেনে নিতে পারলেও বুড়িগঙ্গার এ দুর্গন্ধ দিশা কোনােমতেই মেনে নিতে পারে না। তখন সে তার নােটপ্যাড নিয়ে হােমওয়ার্কে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। একসময়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে অনেক দেরি করে ওঠে। এতে কোনাে অসুবিধা হয় না। স্কুলের কোনাে নির্দিষ্ট সময় নেই। ভার্চুয়াল স্কুলে যখন তখন এক্সেস নিয়ে পাঠ নেওয়া সম্ভব। দরিদ্রদের জন্য ভার্চুয়াল স্কুলই একমাত্র শিক্ষার মাধ্যম। ফলাফল ভালাে করতে পারলে ভােকেসনাল ট্রেনিংয়ের সুযােগ পাবে সে। তখনই রাজধানীর | সাইবারনেটিক্স কারখানায় তার চাকরি হবে। অনেক পরিশ্রম করে দু'একটা পদোন্নতি পেলে নতুন একটি বাড়িতে তারা উঠতে পারবে। কমিউনিটি টয়লেটের বদলে জুটবে নিজেদের টয়লেট। অনেকগুলাে যদির উপর দাঁড়িয়ে দিশার স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ।