"পারাপার"বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
ঢাকা শহরে ঘুঘুর ডাক শােনার কথা না। '
কেউ কোনদিন শুনেছে বলেও শুনিনি। ঘুঘু শহর পছন্দ করে না, লােকজন পছন্দ করে না। তাদের পছন্দ গ্রামের শাস্তি দুপুর। তারপরেও কি যে হয়েছে - আমি ঘুঘুর ডাক শুনছি।
বাংলাবাজার যাচ্ছিলাম, গুলিস্তানে ট্রাফিক জ্যামে পড়লাম। রিকশা, টেম্পাে, বাস, ঠেলাগাড়ি সব কিছু মিলিয়ে দেখতে দেখতে জট পাকিয়ে গেলাে। একেবারে কঠিন গিটু। হতাশ হয়ে রিকশায় বসে আছি আর ভাবছি - আধুনিক মানুষের এক জোড়া পাখা থাকলে ভাল হত। জটিল ট্রাফিক জ্যামের সময় তারা উড়ে যেতে পারত। ঠিক এই রকম হতাশা-জর্জরিত সময়ে ঘুঘু পাখির ডাক শুলাম। সেই অতি পরিচিত শান্ত বিলম্বিত টানা-টানা সুর, যা শুনলে মুহূর্তের মধ্যে বুকের মধ্যে মােচড় দিয়ে উঠে। মানুষের শরীরের ভেতরে যে আরেকটি শরীর আছে তার মধ্যে কাঁপন ধরে। | আমি হতচকিত ভঙ্গিতে এদিক-ওদিক তাকালাম। এমন কি হতে পারে যে কেউ খাচায় করে পাখি নিয়ে যাচ্ছে, সেই পাখি ডেকে উঠল? ইদানীং ঢাশর। লােকদের পাখি পােষা অভ্যাসে ধরেছে। নীলক্ষেতে বিরাট পাখির বাজার।
ট্রাফিক জট কমছে না। জট কমানাের চেষ্টাও কেউ করছে না। রােগা ধরনের এক ট্রাফিক পুলিশ দূরে দাড়িয়ে বাদামওয়ালার সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। এখানে যে কনি অবস্থা তা সে জানে বলেও মনে হচ্ছে না। এইতাে দেখি সে বাদাম কিনছে। এক ঠোঙা বাদাম, একটু ঝাল লবণ।
যতই সময় যাচ্ছে অবস্থা জটিল হয়ে আসছে। সবাই কিন্তু নির্বিকার – “যা হবার হােক’ এমন এক ভঙ্গি। কারাে মধ্যেই কোন অস্থিরতা নেই। আমার রিকশা ঘেঁসে একটা মাইক্রোবাস দাড়িয়ে। মাইক্রোবাসের পর্দা টেনে দেয়া। ভেতরের যাত্রীদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। মাইক্রোবাসের ড্রাইভারকে শুধু দেখছি। মনে হল সে খুব মজা পাচ্ছে। একবার সে উঁচু গলায় বলল, “লাগছে গিটু।”
চড় চড় করে রােদ বাড়ছে। আশ্বিন মাসে খুব ঝাঝালাে রােদ ওঠে। বাতাস থাকে মধুর। আজ বাতাস নেই, শুধুই রােদ। রােদের সঙ্গে ঘামের গন্ধ, ঘামের গন্ধের সঙ্গে পেট্রোলের গন্ধ, পেট্রোলের গন্ধের সঙ্গে ঘুঘুর ডাক ঘুঘুঘু। মিলছে না
Parapar,Parapar in boiferry,Parapar buy online,Parapar by Humayun Ahmed,পারাপার,পারাপার বইফেরীতে,পারাপার অনলাইনে কিনুন,হুমায়ূন আহমেদ এর পারাপার,Parapar Ebook,Parapar Ebook in BD,Parapar Ebook in Dhaka,Parapar Ebook in Bangladesh,Parapar Ebook in boiferry,পারাপার ইবুক,পারাপার ইবুক বিডি,পারাপার ইবুক ঢাকায়,পারাপার ইবুক বাংলাদেশে
হুমায়ূন আহমেদ এর পারাপার এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 66.60 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Parapar by Humayun Ahmedis now available in boiferry for only 66.60 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন |
পেপারব্যাক | ৯৩ পাতা |
প্রথম প্রকাশ |
1997-02-01 |
প্রকাশনী |
হাতেখড়ি |
ISBN: |
|
ভাষা |
বাংলা |
লেখকের জীবনী
হুমায়ূন আহমেদ (Humayun Ahmed)
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে। এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে। অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো। এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি। রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস। শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা। হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।