ভূমিকা ঃ জীবন ধারণের সব রকম উপকরণের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও মানুষ নিজেকে রিক্ত বলে ভাবতে পারে; জীবনে সুখ শান্তি থাকা সত্ত্বেও সে নিজেকে চরম অসুখী বলে ভাবতে পারে। মানুষ অহেতুক চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক বােধ করতে পারে, অসংলগ্ন চিন্তা ভাবনা করতে পারে, অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণ করতে পারে ও অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করতে পারে। এধরনের অসংলগ্ন ও অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণ সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত অদ্ভুত ও রহস্যজনক বলে মনে হয়। ফলে সাধারণ মানুষ এধরনের অস্বভাবিতা সম্পর্কে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ধারণা পােষণ করে। কারণ এধরনের অস্বভাবিতা এতই অদ্ভুত যে এগুলােকে সাধারণ জনগণ প্রাকৃতিক ঘটনা রূপে গ্রহণ করতে পারে না। ফলে তারা এগুলােকে কোন অতিপ্রাকৃত (supernatural) শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ঘটনা বলে মনে করে। ঈশ্বরের অভিশাপের জন্য, কৃত পাপকর্মের জন্য, শয়তান বা দুষ্টাত্মার দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার জন্য বা অস্বভাবী যৌনকর্মের জন্য মানুষের মধ্যে অস্বভাবী আচরণের সৃষ্টি হয় বলে সাধারণ মানুষ মনে করে। কিন্তু মনােবিজ্ঞানীরা এধরনের ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাস করেন না। তারা অস্বভাবী আচরণকে প্রাকৃতিক ঘটনা রূপে মনে করেন এবং প্রাকৃতিক কারণেই এধরনের অস্বভাবী আচরণের সৃষ্টি হয় বলে তারা মনে করেন। মনােবিজ্ঞানের যে শাখা অস্বভাবী আচরণের প্রাকৃতিক কার্যকারণ সম্পর্ক উদঘাটনের চেষ্টা করে ও অস্বভাবী আচরণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে, সেই শাখাকেই অস্বভাবী মনােবিজ্ঞান বলা হয়।