এথেন্সের সম্মানিত ভদ্রমহােদয়গণ! আমি মােটেই বুঝে উঠতে পারছি না যে, আমার বিরুদ্ধে অভিযােগকারীরা কিভাবে আপনাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হলাে! শুধু তাই নয়-এমনকি আমি নিজেও তাদের এই চাতুর্যপূর্ণ ও কটকৌশলে ভরা আবেদন সৃষ্টিকারী বক্তব্য শুনে চমকৃত হয়েছি এবং আমি এতটুকুই বিস্মৃত হয়েছি যে, মনে হচ্ছে তাদের এই মিথ্যে ভাষণই ঠিক ও যথার্থ। তবুও আমি তাদের কোনাে একটি কথাকেও সত্য বলে মনে করি নি। তবে তাদের এই মিথ্যে ভাষণের একটি বিষয় আমাকে সবচেয়ে বিস্মিত করেছে। যে, তারা আমার বাগ্মিতা সম্বন্ধে প্রথমেই আপনাদের বিশেষভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, আপনারা যেন কোনােভাবেই আমার বক্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রতারিত না হােন। | সম্মানিত ভদ্রমহােদয়গণ! যেহেতু তারা এ বিষয়ে সতর্ক এবং অবশ্যই তারা ভালাে করেই জানে যে, তারা এই বিচারালয়ে মিথ্যে অভিযােগ উপস্থাপন করছে, তাই তারা ভয়ে শঙ্কিত যে, আমি কথা বললেই তাদের অভিযােগ যে মিথ্যে প্রমাণিত হয়ে যাবে এবং তারা মিথ্যেবাদী হিসেবে প্রমাণিত হবে আর এজন্যই আগেই তারা আমার সম্বন্ধে সতর্ক থাকতে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আমার বক্তব্য উপস্থাপন করলেই আপনারা অবশ্য বুঝতে পারবেন যে, আমি একজন দক্ষ বাগ্মী নই এবং আমার উপস্থাপনায়ও কোনাে বাগবৈদগ্ধতা নেই। সুতরাং আমার বক্তব্য যদি সত্যভাষণ না হয়, সেক্ষেত্রেও আমার সম্পর্কে তাদের এই সতর্কবাণী তাদের নিজেদের জন্যই লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তবে আমার বাগ্মিতা যদি সত্যভাষণের ঔজ্জ্বল্যে ভাস্বর হয়, তাহলে আমি মনে করি যে, আমি অবশ্যই একজন দক্ষ বাগ্মী এবং যদিও এ বিষয়ে তাদের সাথে আমার বিস্তর বিভেদ রয়েছে। | আমি আগেই আপনাদের সমীপে আমার বক্তব্যের উপস্থাপনায় বলেছি যে, আমার বিরুদ্ধে অভিযােগকারীরা অভিযােগে কোনাে সত্য কথাই উপস্থাপন করে নি। কিন্তু সম্মানিত ভদ্রমহােদয়গণ, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, আমার কাছ থেকে আপনারা যে বক্তব্য শুনবেন অর্থাৎ আমি যে বক্তব্য উপস্থাপন করবাে, তা সম্পূর্ণভাবে সত্য বলেই জানবেন এবং আমি এও বলে রাখি যে, আমার ভাষণে অভিযােগ আনয়নকারীদের ভাষণের ন্যায় অলঙ্কার ও বাগাড়ম্বরপূর্ণ শব্দ সম্ভারের বিন্যাস থাকবে না। আমি আজ সবিনয়ে আরাে বলছি যে, আমি যে সত্যকে বিশ্বাস ও লালন করি এবং আমি যে সত্যকে মনে-প্রাণে ধারণ করে আছি, উক্তির মাধ্যমে কেবল তাই আপনাদের সামনে তুলে ধরবাে। কারণ ‘সত্যকে আমি বিশ্বাস করি এবং সত্যের পথ অনুসরণ করেই আমি চলেছি।