পাক-কোরআন আল্লাহ তা'লার পত্র। এ পত্র বিশ্বের সকল মুসলমানের পড়া ও মর্মোদ্ধার করা অতি প্রয়োজন। মুসলমানকে অতি মনােযোগ সহকারে তা পাঠ করতে হয়। এ পাঠ কেবল শব্দের বাহ্যিক উচ্চারণের মাধ্যমেই নয়—এ পাঠের প্রতিটি অক্ষরের অভ্যন্তরীণ অর্থের পূর্ণ উপলব্ধির মাধ্যম। এ পাঠ মানব জীবনে অপরিসীম প্রভাব আনয়ন করে, মানবকে পশু প্রকৃতি থেকে মুক্তিদান করে, মনুষ্যত্বের চরম উৎকর্ষতা লাভে সাহায্য করে, আর অসীমের সন্ধানে কর্ম তৎপর করে তুলে, মানুষের নিকট দূর সম্পর্ক ঘুচে যায় ও বিশ্ব প্রেমে মানবাত্মা উদ্বুদ্ধ হয়, নয়নে অশ্রু ঝরে। যথাযােগ্য মর্যাদার সাথে এ কাজ করতে হয়। কি করে এর পূর্ণ। মার্যাদা আদায় করা যায়, সে উপায় নির্ধারিত রয়েছে রাসূলের (সাঃ) সুন্নাহয়, যা মুসলিম জাহানে ধর্মীয় বুনিয়াদের দ্বিতীয় উৎস-মুসলমানের এক অতি মূল্যবান সম্পদ। প্রকৃত তত্ত্বান্বেষী কোরআন থেকে সুন্নাহর গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। আল্লাহ বলেন—“আতিয়ুল্লাহ ওয়া আতিয়ুর রাসূল।” “আল্লাহকে মান এবং আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-কে মান। কোরআনের এ বাণীর মধ্যে রাসূলের (সাঃ) সুন্নাহর চরম আজ্ঞাবহতার ইঙ্গিত বিশেষভাবে প্রকটিত হয়েছে। অদৃশ্য শক্তির কার্যাবলি মানব মনে যতটুকু প্রভাব বিস্তার করে; দৃশ্য শক্তির কার্যাবলি গণমনে তার চেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এ সত্য পূর্ণরূপে পরিস্ফুট করে তােলার জন্য কোরআন মুসলমানকে রাসুলের (সাঃ) কার্যাবলির উপর পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শনের আদেশ দিয়েছে। রাসূলের (সাঃ) জীবনের কথা ও কার্যাবলির বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমেই আল্লাহকে মানার আদেশ পূর্ণরূপে পালিত হয়ে থাকে। কোরআন পাকের মর্যাদা ও রাসূলের (সাঃ) পবিত্র সুন্নাহর মর্যাদায় ব্যবহারিক দিক দিয়ে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে প্রথমটি আল্লাহর রবুবিয়াতের' তাছিরে তৈরি এবং দ্বিতীয়টি রাসূলের (সাঃ) ‘ওদিয়াতের' যােগ সাধনে ভরপুর।