Loading...

মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ (হার্ডকভার)

স্টক:

২৫০.০০ ২১২.৫০

একসাথে কেনেন

সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আমাদের রাষ্ট্রের নতুন কোনও সমস্যা না। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের আগমন, বাংলায় মুসলমানদের বসবাস, ক্ষমতা নিয়ে বিরোধ থেকেই হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ও বিরোধ সৃষ্টি হয়, তবে তা ছিল উপর মহলে। পাঠান, মুঘল, নবাব আমলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয় নাই। ব্রিটিশ রাজত্বকালে খুবই পরিকল্পিতভাবে ভারতের হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় সংঘর্ষ সৃষ্টি করে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ভারতকে শাসন করতে চেয়েছিল। আর এই কারণে হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে লিপ্ত থাকার জন্য প্রথমদিকে হিন্দুদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, আবার হিন্দুদের মধ্যে যখন জাতীয়তাবাদের বিকাশ লাভ করছে তখন তাদের দমন করার জন্য দিয়েছে মুসলমানদের। ব্রিটিশদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় সৃষ্টি হয়েছিল ভারতীয় রাজনৈতিক দল ‘কংগ্রেস’, আর মুসলমান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ‘মুসলিম লীগ’। প্রথমদিকে কংগ্রেসে মুসলমান সদস্যরা থাকলেও একপর্যায়ে কংগ্রেস হয়ে উঠে হিন্দুদের রাজনৈতিক দল, আর মুসলিম লীগ হয়ে উঠে মুসলমানদের প্রধান রাজনৈতিক দল। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের উপর যখন উভয় রাজনৈতিক দল আঘাত হেনেছে, ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্ন উত্থাপন করেছে তখন ব্রিটিশরা পরিকল্পিতভাবে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা সংঘটিত করেছে। আর এই দাঙ্গার উর্বর জায়গা ছিল বাংলাতে, কারণ বাংলা থেকেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম খুবই জোরালোভাবে শুরু হয়েছিল। বাংলায় সংখ্যার অনুপাতে হিন্দু-মুসলমান প্রায় সমান সমান। বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ব্রিটিশরা ১৯০৫ সালে একবার বাংলাকে ভাগ করল, তারপর ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা লাভের সন্ধিক্ষণে আরেকবার। ১৯৪৬ সালে পরিকল্পিতভাবেই ব্যাপক হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ সৃষ্টি করে বিষয়টি স্পর্শকাতর করে তোলে যে, বাংলায় হিন্দু-মুসলমান একত্রিত হয়ে বসবাস করা সম্ভব নয়। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের বসবাসের ভিত্তিতে বাংলাকে ভাগ করতে হবে, যদিও বাংলার সমস্ত জায়গাতেই হিন্দু-মুসলমান বসবাসের আনুপাতিক হার খুব একটা ব্যবধান ছিল না। বাংলা ভাগ হয়ে ‘পূর্ববঙ্গ’ ও ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নাম ধারণ করল। ‘পূর্ববঙ্গ’ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলো যা আজকের বাংলাদেশ। পাকিস্তান রাষ্ট্রের পুরো কর্তৃত্ব করতে লাগল পশ্চিম পাকিস্তানিরা, আর তাদের সঙ্গে পূর্ববঙ্গে বসবাসকারী কিছু উর্দু ভাষাভাষীরা। পশ্চিম পাকিস্তানিরা ব্রিটিশ পলিসি প্রয়োগ করতে লাগল। যখন পূর্ববঙ্গের মানুষেরা পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠলেন তখন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ লাগিয়ে হিন্দুদের পূর্ববঙ্গ ত্যাগ করতে বাধ্য করেন তারা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স¦প্ন নিয়ে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম করে বাঙালিরা। সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। যার মূল লক্ষ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বসবাস করবে। রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ, অবসান ঘটবে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের। কিন্তু সেই আশা অচিরেই নষ্ট হয়, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বরং বাড়তেই থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ। তা ছাড়া দীর্ঘ পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ থেকে প্রত্যেক স্বার্থগোষ্ঠী তাদের নিজের গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ জিইয়ে রেখেছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই সমস্যা থেকে উত্তরণের যে পথ ছিল তাতে একতাবদ্ধ বাঙালি জাতি তার ধর্ম পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারত। কিন্তু সেই সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে। বরং এখন স্বাধীন দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ আরও বেশি। এর কারণ কী? কারা এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে, কীভাবে একটি সাম্প্রদায়িকমুক্ত ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র গঠন করা যায়? সংস্কৃতি যাদের হাত ধরে উৎকর্ষ লাভ করে কিংবা সংস্কৃতির শাখা-প্রশাখা যাদের দ্বারা সমৃদ্ধ হয় সেই দিকগুলো বর্তমান সময়ে কিছুটা বন্ধ্যাত্ব ধারণ করছে। বাঙালির প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যেখানে সমস্ত বাঙালিকে সংস্কৃতির পতাকা তলে নিয়ে এসে নতুন দেশ গঠনের কাজে প্রেরণা দিবে তখনও চেপে ধরল ব্রিটিশ উপনিবেশিক ও পাকিস্তানি শাসকের আদলেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও সংঘর্ষ যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপাতত এর থেকে বেরিয়ে আসার পথ রুদ্ধ, এই জাতি আগামীতে তাকিয়ে থাকবে কীভাবে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল চিন্তার বাস্তবায়ন ঘটাবে। ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কারণ, বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ক্রমবিকাশ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি রাষ্ট্র কর্তৃক লালনপালন করা এবং এর বিনাশও রয়েছে রাষ্ট্রের হাতে, কীভাবে বাঙালিরা মূল সংস্কৃতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পরিবর্তে সৈ¦রাচার সরকার হতে সংবিধানে কীভাবে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ করে সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেওয়া হয়েছে, বর্তমান প্রজন্ম উদার অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা থেকে দূরে সরে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠছে কী কারণে? বইটিতে মোট পাঁচটি প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং সেসব প্রবন্ধগুলোতে এসব বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh in boiferry,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh buy online,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh by Masud Rana,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ বইফেরীতে,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ অনলাইনে কিনুন,মাসুদ রানা এর মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ,9789848967492,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh Ebook,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh Ebook in BD,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh Ebook in Dhaka,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh Ebook in Bangladesh,Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh Ebook in boiferry,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ ইবুক,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ ইবুক বিডি,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ ইবুক ঢাকায়,মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ ইবুক বাংলাদেশে
মাসুদ রানা এর মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 212.50 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Muktijuddho Samprodayik Rajniti O Bartaman Bangladesh by Masud Ranais now available in boiferry for only 212.50 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন হার্ডকভার | ৯৬ পাতা
প্রথম প্রকাশ 2021-02-01
প্রকাশনী শিকদার ব্রাদার্স
ISBN: 9789848967492
ভাষা বাংলা

ক্রেতার পর্যালোচনা

মাসুদ রানা
লেখকের জীবনী
মাসুদ রানা (Masud Rana)

মাসুদ রানা

সংশ্লিষ্ট বই