বইটির সঙ্গে বিভিন্ন ছবি যুক্ত করে জ্যোতি বিকাশ বড়ুয়া তাঁর ভ্রমণ-অভিজ্ঞতার বিষয়টি আরো চমৎকারভাবে নিয়ে এসেছে ভ্রমণপ্রিয় পাঠকদের সামনে।
সূচিপত্র
যাত্রার প্রস্তুতি ও সূচনা
কুলু ও মানালির পথে
পৃথিবীর উচ্চতম গিরিপথে রোমাঞ্চর অভিযাত্রা
চাঁদের দেশে
সোমোরিরি লেকের তীরে তাঁবুর হোটেল
পৃথিবীর সর্বোচ্চ মোটরপথে
অপরূপ প্যাংগং সরোবরে
হেমিস গুম্ফার হেমিস উৎসবে
শ্রীনগর ও কারগিলের পথে
ভূস্বর্গ দর্শন
স্বর্গ থেকে বিদায় -জাম্মুর পথে
ভূমিকা
ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে নুতন করে সৃষ্টি করে। ভ্রমণকালে নতুনের সাথে পরিচিত হয়ে হৃদয়-মন আনন্দে আপ্লুত হয়। একজন সত্যিকারের পর্যটক শুধু ভ্রমণের উদ্দেশ্যই ভ্রমণ করেন। পেশা অন্য হলেও আমার নেশা পর্যটন। তাই বহুকাল থেকে চাকরি জীবনের ফাঁকে ফাঁকে এবং চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর স্বদেশের আনাচে-কানাচে ও দেশের বাইরে বহু দেশ ঘুরে বেড়েয়েছি। তবু মনে হয়, এখনো আরো কত বাকি রয়ে গেছে। কম বয়সে সময়ের অভাব আর বৃদ্ধ বয়সে শরীরের অক্ষমতা ভ্রমণে বড় বাধা। তাছাড়া ভ্রমণেচ্ছু মধ্যবিত্তের আর্থিক অক্ষমতাও ভ্রমণকে সীমিত করে।
দীর্ঘদিন ধরে ভারতের হিমাচলের কুলু-মানালি এবং কাশ্মীর তথা লাদাখ ভ্রমণের ইচ্ছে পোষণ করে আসছিলাম। কিন্তু নানা কারণে হয়ে ওঠেনি। অবশেষে জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে ৬৫ বছর বয়সে সাহস করে লাদাখ ভ্রমণের দুরূহ যাত্রায় বের হয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার এই বয়সে ঝঁকি নিয়ে এভাবে একা বেরিয়ে পড়া, পরিবারের কারো তেমন মনঃপূত হয় নি। কিন্তু ভ্রমণের ব্যাপারে আমি কারো কোনো কথা শুনি না বলে, কেউ প্রাকাশ্যে কোনো উচ্চবাচ্য করে নি।
এর আগে আরো বহুবার ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছি। বৈচিত্র্যময় বিশাল দেশ ভারত। এর এক একটি রাজ্য বা অঞ্চলের অধিবাসীদের ভাষা, পোশাক-আশাক, খাদ্যভ্যাস, আচার-আচরণ, কৃষ্টি-কালচার সম্পূর্ণ আলাদা। ভৌগলিক অবন্থান ভেদে বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক রূপও বিচিত্র। কোথাও রয়েছে নদী-নালা বেষ্টিত বৃষ্টিবহুল বিশাল সমভূমিতে বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র বা ঘন চিরিহরিৎ বৃক্ষের অরণ্যানী, কোথাও বা চরম ভাবাপন্ন বৃষ্টিহীন রুক্ষ মরুভূমি, কোথাও সাগর বন্দিত গিরি-মেখরলার সীমাহীন সমুদ্রতট, কোথাও শুভ্র তুষারচ্ছাদিত সুউচ্চ পর্বতমালা, কোথাও নানা বন্যপ্রাণী সমৃদ্ধ পাহাড়-পর্বতের ঢালে অন্তহীন সবুজ অরণ্য, আবার কোথাও বৃক্ষলতাহীন রুক্ষ ধূসর পাহাড়-পর্বত।
নয়নাভিরাম নৈসর্গিক শোভা এবং বিচিত্র বনজ ও পশুজ সম্পদে ভরা হিমালয়ের কোলে হিমাচল প্রদেশ। ইরাবতী, বিপাশা, চন্দ্রভাগা ও শতদ্রুর উদ্দাম নৃত্যে বয়ে যাওয়, বসন্ত ও গ্রীষ্মে হাজারো ফুল-ফলের সৌরভে অমোদিত কুলু, চাম্বা, কাংড়া ও লাহুল-স্পিতি উপত্যকার পাগলপারা সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন দেশ-দেশান্তরের পর্যটক।
ভারতের ভূস্বর্গ কাশ্মীর অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি-পর্যটকদের আনন্দ নিকেতন। কিন্তু পাকিস্তানী হানাদার ও সন্ত্রাসীদের কারণে কাশ্মীরের শ্রীনগরে এলাকায় প্রায় সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে। সেজন্য ইচ্ছে করলেই যে কোনো সময়ে কাশ্মীর তথা শ্রীনগর ও তার আশেপাশের এলাকায় ভ্রমণে যাওয় নিরাপদ নয়।
ভারতের জন্ম-কাশ্মীর রাজ্য অলিখিতভাবে তিন ভাগে বিভক্ত; এক, হিন্দু অধ্যুষিত জম্ম, দুই. মুসলমান অধ্যুষিত কাশ্মীর উপত্যকা এবং তিন. বৌদ্ধ অধ্যুষিত বিশাল লাদাখভূমি। ভারতের শেষ ভূখন্ড লাদাখ। এ যেন ভারত নয়, হিমালয় নয়, হিমালয় পারে লাদাখ। ভারত এখানে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত প্রসারিত।
লাদাখকে বলা হয় লিটল টিবেট বা ছোট তিব্বত। লাদাখে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। লাদাখের আকাশ ঘন-নীল, সে আকাশে মেঘ নেই বৃষ্টি নেই। বৃক্ষহীন রঙিন পাহাড়গুলো নীল আকাশকে চুম্বন করছে। দুপুরের উজ্জ্বল রোদে লাদাখকে মনে হয় ’চাঁদের দেশ’। তাই লাদাখের অপর নাম ‘মুনল্যান্ড’।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নন্দনকানন হিমাচলের কুলু-মানালি ও লাহুল-স্পিতি, ভারতের ভূস্বর্গ কাশ্মীরের শ্রীনগর উপত্যকা এবং অপরূপ বৈচিত্র ও রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা লাদাখভুমি ভ্রমণের দীর্ঘদিনের লালায়িত স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে জুন-জুলাইতে বাস্তবায়িত হলো। সেই দুঃসাহসিক ভ্রমণের দুর্লভ অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের জন্য তুলে ধরলাম।
জ্যোতি বিকাশ বড়ুয়া
জ্যোতি বিকাশ বড়ুয়া এর মুনল্যান্ড : হিমাচল প্রদেশ ও লাদাখসহ জম্মু-কাশ্মীর ভ্রমণ এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 102.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Moonland Himacol Prodesh O Ladakhsoh Jammu Kasmir Vromon by Joti Bikash Boruais now available in boiferry for only 102.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.