বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম। আর বাংলাদেশের মঙ্গোলীয় রক্তধারার ১৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরই বসবাস এই পার্বত্য চট্টগ্রামে। মারমা জনগোষ্ঠী তাদের অন্যতম। মারমারা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। এদের অধিকাংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় এবং বাকিরা রাঙামটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাস করে। পার্বত্যবাসী মারমা এবং বাংলাদেশের কক্সবাজার, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার সমতলে বসবাসকারী রাখাইনদের মাঝে মৌলিক কোনো তফাত নেই; ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, পোশাক-পরিচ্ছদ, পালা-পার্বণ-উৎসব, গৃহ-কাঠামো, খাদ্যগ্রহণ ও বিবাহপদ্ধতি এক ও অভিন্ন। এমনকি এই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেক কাল থেকে আন্তঃবিবাহ [endogamous] চলমান।
মারমা ও রাখাইনরা যুদ্ধে বিধ্বস্ত বর্মা থেকে বাংলাদেশে আগত অভিবাসী। মারমা ও রাখাইনদের সভ্যতার ইতিহাস প্রাচীন। ‘মারমা’ কিংবা ‘ম্রাইমা’ নামের একটি জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব প্রাচীনকালেও ছিল; এর প্রমাণ মেলে বিভিন্ন তথ্য-সূত্রে।
এই দুই জনগোষ্ঠীই এক সময় বাঙালিদের কাছে ‘মগ’ নামে অভিহিত হলেও এরা এই শব্দকে গালি হিসেবে গণ্য করে এবং নিজেদের ‘মগ’পরিচয় দিতে খুবই ঘৃণা ও অপছন্দ করে।
এই দুই জনগোষ্ঠীরই আদি আবাসভূমি হিসেবে রাখাইনরা মনে করে তাদের আগমন ঘটেছে স্বাধীন রাখাইন-প্রে বা আরাকান থেকে, যা এখন মিয়ানমারের অন্তর্গত রাখাইন স্টেট। অপরদিকে মারমারা মনে করে তারা বর্মা থেকে আগত বর্মী রাজের উত্তরাধিকার। কিন্তু একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশেষ একটি রাজপরিবারের উত্তরসূরি কীভাবে হয় তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও মতভেদ পরিলক্ষিত।
মারমারা অন্যান্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মতোই পাহাড়ের ঢালে মাচা পেতে ঘর বাঁধে। এবং সম্পূর্ণ আদিম ও প্রাচীন জুম পদ্ধতির চাষাবাদের ওপর তাদের উৎপাদন নির্ভরশীল। মূলত ধান, রবিশস্য, শাকসবজি, অর্থকরী ফসল তুলা ও বর্তমানে নানা ফল-ফলাদি তারা তাদের জুমে উৎপন্ন করে।
রাখাইনদের মতো মারমাদের ভাষাও ভোট-ব্রহ্ম, যা বর্মী ভাষা রূপে পরিগণিত। প্রাচীন এই ভাষা খুবই সমৃদ্ধ। বর্তমানে এরা বৌদ্ধমন্দির কেন্দ্রিক পাঠশালায় শিশুদের বর্মী বর্ণমালায় এই ভাষার পাঠদান করে আসছে।
মারমাদের বিয়ে অত্যন্ত বর্ণাঢ্য ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় পূর্ণ। সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্তিতে মারমা ও রাখাইন সমাজে পুত্র ও পুত্রী সমান অংশীদারিত্ব হয়। মারমারা ধর্মে বৌদ্ধ হলেও তারা বৌদ্ধধর্মীয় শাস্ত্রীয় নিয়মাচার অনেকাংশেই মানে না। তাদের মাঝে অনগ্রসর সমাজের নানা লৌকিকতা বিরাজমান। মারমারা উৎসব প্রিয় জাতি। বারো মাসে তেরো পার্বণ তাদের লেগেই থাকে।
সম্পাদিত এই গ্রন্থে মারমা জাতিসত্তার নানা প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। আশা করা যায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহসহ বাঙালি পাঠকদের কাছে এই গ্রন্থ ভালো লাগবে।
Marma jatishatta,Marma jatishatta in boiferry,Marma jatishatta buy online,Marma jatishatta by Dr. Mustafa Majid,মারমা জাতিসত্তা,মারমা জাতিসত্তা বইফেরীতে,মারমা জাতিসত্তা অনলাইনে কিনুন,ড. মুস্তাফা মজিদ এর মারমা জাতিসত্তা,9789840431229,Marma jatishatta Ebook,Marma jatishatta Ebook in BD,Marma jatishatta Ebook in Dhaka,Marma jatishatta Ebook in Bangladesh,Marma jatishatta Ebook in boiferry,মারমা জাতিসত্তা ইবুক,মারমা জাতিসত্তা ইবুক বিডি,মারমা জাতিসত্তা ইবুক ঢাকায়,মারমা জাতিসত্তা ইবুক বাংলাদেশে
ড. মুস্তাফা মজিদ এর মারমা জাতিসত্তা এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 553 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Marma jatishatta by Dr. Mustafa Majidis now available in boiferry for only 553 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.
ধরন |
হার্ডকভার | ২১৬ পাতা |
প্রথম প্রকাশ |
2023-04-01 |
প্রকাশনী |
আগামী প্রকাশনী |
ISBN: |
9789840431229 |
ভাষা |
বাংলা |
লেখকের জীবনী
ড. মুস্তাফা মজিদ (Dr. Mustafa Majid)
কবি ও গবেষক মুস্তাফা মজিদ এর রয়েছে ১০টি কাব্যগ্রন্থ। যথাক্রমে- ‘মেঘবতী সুবর্ণভূমি, “তােকে নিয়ে প্রেম প্রেম খেলা, কুসুমিত পঞ্চদশী’, ‘পুষ্পপত্রে নীলকণ্ঠ’, ‘জনযুদ্ধের কনভয়, ‘সাকিন সুবিদখালী’, ‘স্বাতীর কাছে চিঠি’, Diary of a Nepalese Guerrillas সম্পাদিত কবিতাসমগ্র ঃ মাও সেতুঙ এবং নিবেদিত কবিতা সংকলন ‘প্রাণিত রবীন্দ্রনাথ’ । এই কবি কবিতা লেখার পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসরত। মঙ্গোলীয় ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠীর মানুষদের নিয়ে গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে লােক প্রশাসন ও আমলাতন্ত্র নিয়েও গবেষণা করে আসছেন। বাংলাদেশের রাখাইন জাতিসত্তার আর্থ-সামাজিক ও প্রশাসনিক সমীক্ষা নিয়ে অভিসন্দর্ভ রচনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। যা বাংলাদেশের রাখাইন’ শিরােনামে বাংলা ভাষায় বাংলা। একাডেমী এবং The Rakhaines শিরােনামে ইংরেজি ভাষায়। ঢাকার মাওলা ব্রাদার্স থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । ড. মুস্তাফা মজিদের এ পর্যন্ত রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থ সংখ্যা। ৪০ উর্ধ্ব। তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থের মধ্যে ত্রিপুরা জাতি। পরিচয়’, ‘পটুয়াখালীর রাখাইন উপজাতি', আদিবাসী রাখাইন’, ‘মারমা জাতিসত্তা' বাংলাদেশে মঙ্গোলীয়। আদিবাসী’, ‘গারাে জাতিসত্তহজং জাতিসত্তা’, আদিবাসী সংস্কৃতি (১ম ও ২য় খণ্ড), রূপান্তরের দেশকাল’, ‘সমকালের আত্মকথন’, ‘লােক প্রশাসনের তাত্ত্বিক প্রসঙ্গ’, ‘বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র', 'রাজনীতিতে সামরিক আমলাতন্ত্র’, ‘নেতৃত্বের স্বরূপ’, বাংলাদেশে বঙ্কিমচন্দ্র’, ‘মুক্ত ও মুগ্ধদৃষ্টির রবীন্দ্র বিতর্ক’ । আর ছােটদের জন্য রচিত ও সম্পাদিত গল্প গ্রন্থ। ‘দীপুর স্বপ্নের অরণি’, ‘জীবন থেকে’ ও ‘ছােটদের ৭টি মঞ্চ নাটক’ এবং জীবনী গ্রন্থ ‘রূপকথার নায়ক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন’ ও ‘বঙ্গবীর ওসমানী। মার্কসীয় মুক্ত চিন্তার যৌক্তিক দৃষ্টবাদে অবিচল মুস্তাফা মজিদ কৈশােরে উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে। অংশগ্রহণসহ কৈশাের থেকেই নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনে। জড়িত । বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ছায়ানট, ঢাকা থিয়েটার ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। এছাড়াও তিনি সত্তর ও আশির দশকে শিশু-কিশাের। সংগঠন গড়া ও নাট্য আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন । পেশায় প্রথমে সাংবাদিকতা এবং পরে ১৯৮৪ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত আছেন। বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক ড. মুস্তাফা মজিদ ১৯৫৫ সালের ১৪ই এপ্রিল পটুয়াখালী জেলার সুবিদখালীতে জন্মগ্রহণ করেন । ভ্রমণ করেছেন ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেন, জার্মানী, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড।