কাম ক্রোধ লােভ মােহ মদ মাৎসর্য; বাংলা অভিধানে এই ষড়রিপুকে দুষ্টপ্রবৃত্তি বলে মনে করা হয়েছে। অন্য পঞ্চরিপু বিষয়ে আমার বিবেচনা অভিধানসম্মত, কিন্তু কামকে আমি দুষ্টপ্রবৃত্তি বলে ভাবতে পারি না। বাংলাভাষার বহু শ্রুতিমধুর শব্দের উৎস হচ্ছে কাম। যেমন কামেশ্বর বা কামেশ্বরী, যেখানে কামের সঙ্গে আমাদের ঈশ্বর-ঈশ্বরীরাও যুক্ত হয়েছেন। আমরা পেয়েছি কামদেব, মদনশরবিদ্ধ রতিদেবী, বাৎস্যায়ন বিরচিত কামশাস্ত্র, কামের চৌষট্টিকলা ও রমণের ষােড়শ-শয়নভেদ বা রতিবন্ধজ্ঞান। প্রাণের উৎস যেখানে কাম, সেখানে আমি কীভাবে তাকে দুষ্টপ্রবৃত্তি বলি? আমার আনন্দযৌবনলগ্ন শুরুর মুহূর্ত থেকে এই প্রশ্ন আমাকে আন্দোলিত করেছে; আমার প্রাণ, আমার ধ্যান ধাবিত হয়েছে তার পানে। আমি কামের আনন্দ উপলব্ধি করেছি, মনে হয়েছে, হয়তাে এই কথাটা সানন্দে জানান দেবার জন্যই আমি কবি। অন্যথায় রবিকরােজ্জ্বল বাংলা-কবিতায়। আমার মৌলিকত্ব আর কোথায়? আমি আমার কবিতায় মানবজাতির চালিকাশক্তিকে ষড়রিপুর নিন্দাতালিকা থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছি; কামের শিল্পভাষ্য রচনা করে মানবপ্রকৃতির এই ঐশ্বর্যকে করতে চেয়েছি মহিমান্বিত। বাংলা কবিতার প্রাজ্ঞ পাঠকরাই বলবেন, এই কবিতাগুলাের প্রয়ােজন ছিল কি না! প্রার্থনা করি কামকাননের পুষ্পগন্ধ ও মধুমদে মধুময় হােক মানব-মানবীর জীবন।
নির্মলেন্দু গুণ এর কামকানন এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 128 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Kamkanon by Nirmolendu Goonis now available in boiferry for only 128 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.