অবনি নবীন লেখক। বয়স এবং লেখা একই রকম কাঁচা সবুজ। দু'-একটা গল্পের | বই বেরিয়েছে। কাব্যের দুর্দিন, তাই ওগুলাের প্রকাশ ঐ ডায়েরির পাতা আর মাঝে মধ্যে দু'-একটা পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদককে বিশেষ অনুরােধে। তার প্রকাশিত গল্পগুলাে নিয়ে যতটানা তর্ক হয়েছে তার্কিক মহলে, তার চাইতে বেশি হয়েছে বিতর্ক। ছােট ছােট সভ্যদের মাটির আসনে গােল টেবিলে। গল্পগুলাের মধ্য দিয়ে তিনি ব্যক্ত করেছেন সেইসব কথা যেগুলাে মনের মধ্যে ফুটন্ত গরম পানির মতাে টগবগ করে। কিন্তু ঠোটের কোণ দিয়ে কোনভাবেই মুক্ত হতে পারে না। একা একাই বকে চলে। ওকে তিনি বলে ফেললাম। পাঠক ক্ষমা করবেন। অতাে উচ্চ সর্বনামে ওকে ভূষিত করে আমি বিতার্কিকদের করাতের নিচে পড়তে চাইনা। আমি নিরীহ মানুষ, কথার আঘাত থেকে পাশকাটিয়ে বাঁচার সাধ অনেকদিন। সভ্যদের আলাপে হাজার গুণীজনদের গুণগান শেষে যখন আলসেমি চলে আসে তখন ওকে দু'-চারটে বকা দিয়ে আসরটাকে চাঙ্গা করে তােলা। চায়ের বিকল্প আরকি! ওর কথা নিয়ে বিতর্ক এই কারণে যে সে রাজনীতিবিদদের তুলসীপাতার মতাে হেঁচে রস বের করে দিয়েছে। যারা রাজনীতির নীতিটাকে লালফিতায় বন্দী করে আপন স্বাৰ্থনীতি নিয়ে মহাব্যস্ত। যারা বিকেলে সেমিনারে নারীস্বাধীনতা, নারীঅধিকার, ধর্ষণ আর নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে, তারাই সন্ধ্যায় শিল্পীর মােড়কে বিদেশী নর্তকীর নৃত্য দেখে নয়ন জুড়ায়। আর ঘরে সুন্দরী স্ত্রী রেখে রাতে গিয়ে কাটায় আবাসিক হােটেলে নতুন কিছুর স্বাদ নিতে। ক্ষমতা নিয়ে একে অপরের সাথে লিপ্ত রেশারেশিতে আর তার মাঝে পড়ে নিরীহ মানুষরা হও নিস্পেষিত । হায় হায় করে এপাড় আর ওপাড় ক্রন্দন করে দৌড়ানাে ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। যারা শান্তির বাণী শােনায় ধর্মযাজকের মতাে সন্ত্রাসী আগ্রাসনে তারাই পালন করে অগ্রণী | ভূমিকা। অতিবিজ্ঞ ভাবের অধিকারী পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদকদের পিঠে মেরেছে চিকন সন্ধিবেত । যারা কিনা খ্যাতির মুকুট পরা গুণীজন, ক্ষমতাবান আর বিশেষ সম্পর্ক ব্যতিরেকে লেখা প্রকাশ করেন না।