শান্তনু জিজ্ঞেস করল- তুই রবিনহুড, প্রিন্স অব থিভস্' সিনেমাটা দেখেছিস? অয়ন একটু হেসে নিল। তারপর মাথা নাড়ল না, দেখিনি। কিন্তু ওই বইটা আমার পড়া। একটু ভুরু কুঁচকে গেল শান্তনুর- তুই ওভাবে হাসলি কেন, বল তাে! কখন হাসলাম। অয়ন অবাক হওয়ার চেষ্টা করল। দ্যাখ অয়ন। শান্তনুর চেহারা রাগ-রাগ। তুই যদি ভাবিস আমি কিছু বুঝি না, তা হলে কিন্তু ভুল করবি। আমি কিন্তু সব বুঝি। | বুঝিস যখন, তখন আর আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেন? শােন, রবিনহুডের কথা এমনিতেই সবাই জানে। ওর জন্য সিনেমা দেখতে হয় না। তা হলে সিনেমা বানায় কেন? | অয়ন ওই প্রশ্নের কোনাে উত্তর দিতে পারল না। সে আমতা আমতা করে বলল- বানায়। ..... যারা। দেখেনি, যাদের দেখার ইচ্ছা, তারা দেখবে। যেমন তাের ইচ্ছা হয়েছে, তুই দেখেছিস। ... তবে এখন গল্পটা শােনানাের চেষ্টা করিস না। গল্পটা আমি খুব ভালােভাবে জানি। বুঝতে পারছি। সিনেমাটা আমি তাের আগে দেখে ফেলেছি বলে তাের ঈর্ষা হচ্ছে। অয়ন একবার তাকাল শান্তনুর দিকে। মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল- তুই যদি ভাবিস ঈর্ষা, তা হলে ঈর্ষাই।। শান্তনু আর অয়ন দু'জনের স্কুলই এখন বন্ধ। সামার ভেকেশন। পরীক্ষাও হয়ে গেছে। স্কুল নেই, এদিকে বাসায়ও ওদের কিছু করার নেই। শান্তনুদের বাড়িটা বিশাল। পুরনাে আমলের। তিনতলায় একটা অনেক বড় ঘর শান্তনুর। এ-ঘরে ওরা গল্প করে, ভিডিও গেম খেলে, কম্পিউটারে ছবি আঁকার চেষ্টা করে। তবে রোজ রােজ এসব ভালাে লাগে না। রােজ ভালাে লাগে গল্প করতে। ওদের আরেক বন্ধ আছে। বন্ধ অবশ্য অনেক আছে। কিন্তু সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় না। ওদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হচ্ছে রাহুল। ওরা তিনজন একসঙ্গে থাকে। এই দেখে ছােট কাকু ওদের নাম দিয়েছে— 'থ্রি মাস্কেটিয়ার্স।' এই নিয়ে ওদের মৃদু আপত্তি- শশানাে ছােট কাকু, ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স' কিন্তু চারজনের কাহিনী। আমরা জানি। ছােট কাকু একথা শুনে একটুও ঘাবড়ায় না, বলে- ঠিক আছে, ঠিক আছে। দরকার হলে তােমরা আমাকে তােদের দলে নিয়ে নিবি।