কবি আলমগীর খােরশেদ রচিত গাঁও গেরামের কাব্য, তার সপ্তম কাব্যগ্রন্থ। তার লেখা পূর্ববর্তী ছয়টি কাব্যগ্রন্থও পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে। আলােচ্য কাব্যগ্রন্থটির শিরােনাম থেকেই বােঝা যাচ্ছে, কাব্যটি বাংলাদেশের গ্রামকেন্দ্রিক জীবনচিত্র ও চরিত্র সহজ সারল্য ও আন্তরিকতায় মন্ডিত। গ্রামের জীবন ও প্রকৃতির এ চিত্র ও চরিত্র ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, কিশােরগঞ্জ অঞ্চলের আঞ্চলিক কথ্য বাংলা রীতিতে। এতে ছায়াময়, মায়াময়, গ্রামের জল মাটির সোঁদা গন্ধ, উদার আকাশ ও অনাবিল বাতাসের স্পর্শ পাওয়া যাচ্ছে। এখানেই তাঁর গ্রামবাংলার জীবন ও চিত্র প্রকাশের সার্থকতা। আধুনিক বাংলা কবিতার দূরান্বিত চিত্রকল্প, দূরহ কবিভাষা, সাধারণ পাঠকদের সর্বাংশে আকৃষ্ট করতে পারেনা বলে যে ঋণাত্মক সমালােচনা রয়েছে, কবি আলমগীর খােরশেদের গাঁও গেরামের কাব্য, তা থেকে মুক্ত এবং এজন্যে তা গাঁও গেরামের স্বল্প শিক্ষিত পাঠকদেরকেও নন্দিত করতে সক্ষম হবে বলে মনে করি। কবি আলমগীর খােরশেদের রয়েছে প্রবল দেশাত্ববােধ, বাঙালি। জাতীয়তাবাদী চেতনায় তিনি নিষ্টার, আবার গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষদের প্রতি রয়েছে তার সুগভীর ভালােবাসা। সে চেতনা ও ভালােবাসা তার এ কাব্যে প্রকাশিত হয়েছে। গাঁও গেরামের কাব্য শীর্ষক কাব্যগ্রন্থটি নিজগুণেই পাঠক নন্দিত হবে, এ প্রত্যয় আমি দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করছি। কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে ভূমিকা'র কোনাে প্রয়ােজন নেই। কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে তার স্পষ্ট পরিচয়। তবু কবি আলমগীর খােরশেদ আমাকে একটি ভূমিকা লিখে দেওয়ার জন্য অনুরােধ নয়, আবদার করেছেন। ওঁর সাথে আমার যে সম্পর্ক, তার জন্যই তার এ আগ্রহ। আমি এ কাব্যগ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করছি।