হরেক প্রজাতির বুনােফুল; লতাগুলােরও অভাব নেই। স্বর্ণলতার ছড়াছড়ি। জঙ্গলের মূল আকর্ষণই হচ্ছে সােনালি রঙের এ চিকন লতা। দেখতে ভীষণ লাগে; স্বর্ণলতা নয় যেন স্বর্ণলতা! খর্বাকৃতির ঝােপগুলাে ঢেকে দিয়েছে স্বর্ণলতায় । দূর থেকে মনে হয় সােনামােড়ানাে বৃক্ষরাজি। কদাকার বৃক্ষেরও রূপ পাল্টে যায় স্বর্ণলতার ছোঁয়ায়! সেকি রূপ, বাবা! চোখ ফেরানাে দায় স্বর্ণের ওপর নজর পড়লেই । তথাপিও লতাটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় না মানুষ । আগ্রাসী লতা । যে কোন গাছপালাকে বছর দু-একের মধ্যেই মেরে ফেলতে সক্ষম স্বর্ণলতা। প্রথমত, গাছের পুষ্টি চুষে নেয়। দ্বিতীয়ত, লতার ঘনত্বে গাছপালার সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়, ফলে ধীরে ধীরে প্রাণ হারায়। অর্থাৎ পরজীবী উদ্ভিদ এরা । কোন ধরনের পাতা নেই, তাই দেহকাণ্ড-মূল। বৃক্ষরাজির রসচোষে পুষ্টি জোগায় । কিছু পরজীবী মানুষের মতাে আর কি! যার আপাদমস্তক চিকচিক করে স্বর্ণের মতােই। একেবারে দুধেধােয়া তুলসী, গায়ে দাগ নেই, সুগন্ধ বেরােয় ভুরভুর করে। সুযােগ পেলেই পরের ঘাড়ে চেপে লঙ্কা খায় । রসচোষে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে এক সময় এটুলির মতাে টুপ করে নিচে পড়ে। এরাই স্বর্ণলতার জ্ঞাতিভাই!