এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ নয়। কারণ দর্শন এত বিচিত্র বিষয় সম্পর্কে আলােচনা করে যা আসল কথার বাঁধনে বেঁধে প্রাথমিক পাঠকদের কাছে উপস্থিত করা অসম্ভব। দীর্ঘদিনের দর্শন পরিক্রমার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় জীবনের বহুমুখী সমস্যা দর্শনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সমুদয় সমস্যাকে একসঙ্গে আনতে হলে বহুদিনের পঠন-পাঠনের প্রয়ােজন, আর ব্যাপারটি সময়সাপেক্ষ ও বহু শ্রমসাধ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে এইটুকু বলা চলে যে, জগৎ ও জীবন সম্পর্কীয় যে কোনাে প্রশ্ন দর্শনে উপস্থিত হতে পারে, হয়ে থাকে ও ভবিষ্যতেও হতে থাকবে। অর্থাৎ জীবন ও জগতের মৌলিক সমস্যা দর্শনে আলােচিত হয়ে থাকে। তবে এই আলােচনার ধারা হবে যুক্তিনির্ভর। সাহিত্য সরস শব্দের মাধ্যমে, ধর্ম বিশ্বাস ও কর্মের মাধ্যমে এবং দর্শন যুক্তির মাধ্যমে জীবজগতের সমস্যাবলি আলােচনা করে থাকে। এখানে লক্ষ করার বিষয় হলাে আলােচ্য বিষয় নয়, বরং আলােচনার পদ্ধতিই দর্শনে বড় কথা। দর্শনের আলােচ্য বিষয় হিসেবে যে কোনাে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়ে থাকে কিন্তু তা দর্শন পদবাচ্য হতে হলে | যৌক্তিক হওয়া চাই। যুক্তির শক্তি ও গ্রহণযােগ্যতা অনুসারেই দর্শনের মানের উৎকর্ষতা নির্ভর করে। কাজেই বলা যায় যে, আলােচ্য বিষয়ে নয়, যুক্তির সৌকর্য ও গ্রহণযােগ্যতাই দর্শনের বড় কথা।