একালে পুরাণকে নতুন করে ব্যবহার করা হচ্ছে। সভ্যতার একটা সান্ধ্য সময়ে পুরাণ সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান কালে আধুনিকতার উজ্জ্বল আলােকপাতে জীবন ও প্রকৃতির সর্বাংশ উঠছে ঝলমল করে। দৃষ্টির সামনে থেকে রহস্যের সকল কুয়াশাময় পর্দা যাচ্ছে সরে। একালে আমরা যুক্তির তাপে উষ্ণ, বিজ্ঞানসন্ধানী, বিবর্তন রীতিদর্শী। | প্রতীক একালে মিহি সূতাের কাপড়ের মতাে, সকল স্থূলতা বর্জিত, বরং প্রত্যক্ষের পথই আমাদের জন্যে প্রশস্ততর। পুরাণ রচনা আর সম্ভব নয়, সম্ভব পুরাণের নব ব্যবহার। এই নব ব্যবহারকে সম্ভব করে তােলা হচ্ছে বিশ্বময়, পুরাণকে আধুনিক জীবনের পটভূমিতে স্থাপন করে, তাকে একালের মানুষের অনুভব, যন্ত্রণা ও সংক্ষোভের প্রসঙ্গ বা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে। যার ফলে পুরাণ উত্তীর্ণ হচ্ছে নতুন। ইঙ্গিতে বা পৌরাণিক সাহচর্যে বর্তমানকে চেনা যাচ্ছে নতুন আলােকে বা পুরাণ বিশ্লেষিত হচ্ছে আবহমান জীবনধারায়। হােমারের নায়কের ক্লান্তিহীন যাত্রাকে মনে হয় আমাদের অবিশ্রাম জীবন সংগ্রামের প্রতিরূপ, নির্জীব অর্জুনের ধিক্কারে মানবিক শক্তির সহজাত সীমাবদ্ধতার কথা স্মরণীয় হয়। বাংলা সাহিত্যে পুরাণের এই নব ব্যবহারের | দিগন্ত উন্মােচিত করেছিলেন মধুসূদন। তিনিই প্রথম অত্যন্ত স্পষ্ট করে এর তাৎপর্যও ব্যাখ্যা করেছিলেন রাজ নারায়ণ বসুকে লেখা পত্রে। রাজ নারায়ণ বিজয় সিংহের সিংহলবিজয় নিয়ে মধুসূদনকে মহাকাব্য লেখার অনুরােধ করলে তিনি জানিয়েছিলেন :