ইংরেজি সায়েন্স' শব্দটি এসেছে লাতিন ‘সিয়েনতিয়া' (Scientia) শব্দ থেকে। সিয়েনতিয়া শব্দের অর্থ হলাে জ্ঞান। তবে ইংরেজিতে সায়েন্স বলতে সব রকম জ্ঞানকেই যে বােঝায় তা নয়। শব্দটা সাধারণত কিছুটা সীমাবদ্ধ অর্থেই প্রয়ােগ করা হয়। ইংরেজি সায়েন্স শব্দটার বাংলা হিসেবে আমরা গ্রহণ করেছি “বিজ্ঞান' শব্দটি। সংস্কৃত ভাষায় বিজ্ঞান বলতে বােঝায় 'জ্ঞান' বা বিদ্যা'। শব্দটি ব্যবহার করা হতাে অনেক ব্যাপক অর্থে। | বিজ্ঞান বলতে এক সময় পারমার্থিক জ্ঞানকেও বােঝান হতাে, কেবল পার্থিব বা বস্তু জগতের সুসংবদ্ধ জ্ঞানকে নয়। বিজ্ঞান সম্বন্ধে আমাদের সবার মনেই কিছু না কিছু একটা ধারণা আছে। কিন্তু বিজ্ঞানের একটা সংজ্ঞা দিতে হলে অসুবিধায় পড়তে হয়। সমস্যা দেখা দেয় ঠিক কি ধরনের জ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। যেসব বিষয়কে আমরা সাধারণত বিজ্ঞান হিসেবে গণ্য করি, তাদের একটি বৈশিষ্ট্য হলাে, এরা সকলেই নির্ভর করে একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। যার গােড়ার কথা হলাে কোনাে কিছু থেকেই কোনাে কিছুর উদ্ভব হয়ে থাকে'। সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে (১৬৫০) বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ব্রিটিশ দার্শনিক হবস বলেছেন, বিজ্ঞান আসলে হলাে ফলাফলের জ্ঞান । একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনার ওপর নির্ভর করে। আমরা তাই একটি ঘটনাকে নিয়ন্ত্রিত করে আরেকটি ঘটনাকে নিয়ন্ত্রত করতে পারি। বিজ্ঞানের গােড়ার কথা হলাে কার্য-কারণ সম্বন্ধের জ্ঞান। বিজ্ঞানের লক্ষ্য হলাে কোনাে ঘটনা কেন ও কিভাবে ঘটে, তা জানা। হস-এর দেয়া বিজ্ঞানের সংজ্ঞা এখনও বহুলভাবে প্রচলিত। বিজ্ঞান বলতে বােঝায় কার্য কারণ সূত্রে গ্রথিত জ্ঞান। কার্য-কারণ সূত্রকে অস্বীকার করে বস্তুজগতের বিবিধ বিবরণ | রচনা করা যায়, কিন্তু বিজ্ঞান হয় না।